বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

'এইচএস কোড' জটিলতায় বন্ধ ভারতীয় চাল আমদানি

যাযাদি ডেস্ক
  ১৯ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০
দোকানে সাজানো চাল

দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে প্রায় ২ বছর পর চাল আমদানি শুরু হলেও হারমোনাইজড সিস্টেম (এইচএস) কোড জটিলতায় তা আবার বন্ধ হয়ে গেছে। এদিকে দেশের বাজারে চালের মূল্য স্বাভাবিক রাখতে এই আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। তবে আমদানিকৃত চালের এইচএস কোড নিয়ে জটিলতার কারণ দেখিয়ে চার দিন ধরে ভারত চাল রপ্তানি বন্ধ রেখেছে। এতে করে দেশে প্রবেশের অপেক্ষায় ভারতের কয়েক হাজার টন চাল আটকা পড়েছে।

ভারতীয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আমদানিকৃত পণ্যের এইচএস কোড ও নাম ঠিক করতে হবে। বর্তমানে চাল আমদানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশে চালের এইচএস কোড রয়েছে নন-বাসমতি হাস্কিং ব্রাউন রাইস। সেটি তারা (বাংলাদেশ) গ্রহণ করছে না। তারা চাইছে শুধু নন-বাসমতি রাইস। এখন মন্ত্রণালয় থেকে চাল আমদানির অনুমতিপত্রে চালের যে এইচএস কোড দেওয়া রয়েছে এর বাইরে ভারতের যাওয়ার ক্ষমতা নেই। এ অজুহাত দেখিয়ে চার দিন ধরে ভারত চাল রপ্তানি বন্ধ রেখেছে।

হিলি স্থলবন্দর সূত্র মতে, দেশীয় কৃষকের উৎপাদিত ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে চাল আমদানিতে ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়। ফলে চাল আমদানিতে পড়তা না থাকায় ২০১৯ সালের ৩০ মে থেকে বন্দর দিয়ে চাল আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। তবে সম্প্রতি চালের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী রুখতে আমদানি শুল্ক দুই দফা কমিয়ে ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনে সরকার। এরপর বন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু হয়।

ভারত থেকে চাল আমদানির অনুমতির পর ৯ জানুয়ারি বন্দর দিয়ে ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু হয়। ওই দিন বন্দর দিয়ে তিনটি ট্রাকে ১১২ টন চাল আমদানি হয়। এর পরের দিন ১০ জানুয়ারি ২০টি ট্রাকে ৮২৮ টন চাল আমদানি করা হয়। একইভাবে ১১ জানুয়ারি আটটি ট্রাকে ৩২৯ টন ও ১২ জানুয়ারি ২৩টি ট্রাকে ৮৮৪ টন চাল আমদানি হয়। কিন্তু এরপর এইচএস কোড নিয়ে জটিলতা দেখিয়ে গত বুধবার থেকে কোনো চাল আমদানি হয়নি। রোববার বিকাল ৩টা পর্যন্তও বন্দর দিয়ে কোনো চাল আমদানি হয়নি।

হিলি স্থলবন্দরের চালের কার্য সম্পাদনকারী আমদানিকারক মনোনীত সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট রাশেদুল ইসলাম বলেন, চাল আমদানির অনুমতি পাওয়ার পর চার দিন বন্দর দিয়ে চাল আমদানি হয়েছে। এর পর থেকে চালের এইচএস কোড নিয়ে জটিলতা দেখিয়ে বন্দর দিয়ে চাল রপ্তানি বন্ধ রেখেছে ভারত। ভারতীয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এখন বলছে, এইচএস কোড ও পণ্যের নাম ঠিক করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে চাল আমদানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশে চালের এইচএস কোড রয়েছে নন-বাসমতি হাস্কিং ব্রাউন রাইস। সেটি তারা গ্রহণ করছে না। তারা চাইছে শুধু নন-বাসমতি রাইস। এখন মন্ত্রণালয় থেকে চাল আমদানির অনুমতিপত্রে চালের যে এইচএস কোড দেওয়া রয়েছে এর বাইরে তো আমাদের যাওয়ার ক্ষমতা নেই। এ অজুহাত দেখিয়ে চার দিন ধরে ভারত চাল রপ্তানি বন্ধ রেখেছে। গতকাল বন্দর দিয়ে কোনো চাল রপ্তানি করেনি। এতে করে আমাদের অনেক আমদানিকারকের কয়েক হাজার টন চাল দেশে প্রবেশের অপেক্ষায় ভারতের অভ্যন্তরে আটকা পড়ে আছে।

হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রম্নপের সভাপতি হারুন উর রশীদ বলেন, সরকারিভাবে চাল আমদানির জন্য যে এইচএস কোড দেওয়া হয়েছে, তাতে চার দিন চাল রপ্তানি করলেও বর্তমানে ভারত বলছে এইচএস কোড ভুল হয়েছে। তারা এখন এলসি সংশোধন করে এইচএস কোড পরিবর্তন করে দিতে বলছে। এখন নতুন করে ব্যাংক থেকে আগের করা এলসিগুলো সংশোধন করে এইচএস কোড পরিবর্তন করে দেওয়া হলে তারপর বন্দর দিয়ে আবারও চাল রপ্তানি শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছেন তারা।

এ বিষয়ে হিলি স্থল শুল্ক স্টেশনের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা রিপন রায় বলেন, চার দিন চাল আমদানি হলেও এর পর থেকে আজ পর্যন্ত বন্দর দিয়ে আর চাল আমদানি হয়নি। আমরা যতটুকু শুনেছি, ভারতে ওদের নাকি কী সমস্যা হয়েছে। এ কারণে তারাই চাল রপ্তানি করছে না। আর যেহেতু বিষয়টি ভারতীয়, তাই আমাদের কিছু করার নেই। কিন্তু আমাদের তরফ থেকে কোনো ধরনের সমস্যা নেই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে