সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস

ইতিহাসের মহানায়ককে স্মরণ

যাযাদি রিপোর্ট
  ১১ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

নানা আয়োজনে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করেছে জাতি। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার তার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনও শ্রদ্ধা জানিয়েছে।

ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে রক্ষিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সংগঠনের নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

দিবসটি উপলক্ষে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে আনন্দঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। সর্বস্তরের মানুষ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মী-সমর্থকসহ সর্বস্তরের হাজার-হাজার মানুষ বঙ্গবন্ধু ভবনে ভিড় করেছেন জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে।

এদিন সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা মিছিল নিয়ে ৩২ নম্বর সড়কের পূর্ব ও পশ্চিম পাশের মোড়ে জমায়েত হতে থাকেন।

সকাল সাড়ে ৮টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথমে সরকারপ্রধান হিসেবে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। এসময় তিনি সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন ও মোনাজাতে অংশ নেন।

পরে তিনি আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে আওয়ামী লীগের পক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, মোশাররফ হোসেন, ডক্টর আব্দুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, কামরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আব্দুর রহমান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডক্টর হাছান মাহমুদ, মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আফজাল হোসেন, মির্জা আজম ও শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, প্রচার সম্পাদক ডক্টর আবদুস সোবহান গোলাপ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু ভবন ত্যাগ করার পর ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণসহ দলের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী, সমর্থক এবং সর্বস্তরের মানুষ সারিবদ্ধভাবে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ নিবেদন করেন।

এছাড়াও আওয়ামী যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, বাংলাদেশ কৃষক লীগ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগের নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন।

আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন ছাড়াও বঙ্গবন্ধু পরিষদ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, মুক্তিযোদ্ধা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, বাংলাদেশ তাঁতী লীগ, শেখ রাসেল শিশু সংঘ, আওয়ামী সাংস্কৃতিক ফোরাম, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন শ্রমিক কর্মচারী লীগ, মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদ, আওয়ামী শিল্পী গোষ্ঠী, বাংলাদেশ আওয়ামী যুব আইনজীবী পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠন বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানায়।

প্রসঙ্গত, মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের ২৫ দিন পরে বিশ্ব জনমতের চাপে ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয় পাকিস্তান সরকার।

এরপর তিনি বিমানে করে লন্ডন যান। সেখান থেকে ৯ জানুয়ারি রাত আটটায় ব্রিটিশ রাজকীয় বিমানে লন্ডনে থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা দেন। দিলিস্নতে ১০ জানুয়ারি সকালে যাত্রাবিরতি দিয়ে এক জনসভায় ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ও ভারতীয় জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। তারপর দিলিস্ন থেকে ঢাকায় আকাশে প্রবেশ করে বঙ্গবন্ধুর বহনকারী বিমান। শেষ হয় বাঙালির উৎকণ্ঠার। বাংলাদেশে ফিরে আসেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি।

সহিংসতার জবাব দিতে প্রস্তুত আওয়ামী লীগ

এদিকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে আজকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ অনেক বেশি ঐক্যবদ্ধ, অনেক বেশি শক্তিশালী। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ষড়যন্ত্র, আন্দোলনের নামে সংহিসতার সমুচিত জবাব ও সাম্প্রদায়িকতার উত্থান রুখে দিতে প্রস্তুত আওয়ামী লীগ।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, '১০ ডিসেম্বর তো গেল, আওয়ামী লীগ কী মোকাবিলা করেনি? আমরা যেকোনো ধরনের ষড়যন্ত্র, যেকোনো ধরনের আন্দোলনের নামে সহিংসতার সমুচিত জবাব দিতে প্রস্তুত।'

ওবায়দুল কাদের বলেন, '১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে আমরা বিজয় অর্জন করি। কিন্তু এই বিজয় পূর্ণতা পায়নি যতক্ষণ না পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি বিজয়ের মহানায়ক শেখ মুজিব মুক্তি পান। তার অনুপস্থিতিতে বিজয় ছিল অসম্পূর্ণ। সেই অসম্পূর্ণ বিজয় পূর্ণতা পেয়েছিল আজকের ১০ জানুয়ারি ১৯৭২ সালে।'

তিনি বলেন, 'আজকের এই দিনের অঙ্গীকার বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন একটি আদর্শ রাষ্ট্র। সেই আদর্শ রাষ্ট্র আমাদের অঙ্গীকার। সেই আদর্শ রাষ্ট্র আমরা প্রতিষ্ঠা করব। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের মহাসড়ক ধরে আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বির্নিমাণ করব। আজকের এই দিনে আমাদের শপথ আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বির্নিমাণে ২০৪১ সালে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ, তথা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার।'

ছাত্রলীগের শ্রদ্ধা

ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের নেতৃত্বে ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন, সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজ মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক সাগর আহমেদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি রাজীবুল ইসলাম বাপ্পী, সাধারণ সম্পাদক সজল কুন্ডুসহ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে