বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

জলবায়ু সহনীয় ধানের নতুন জাত উদ্ভাবনে প্রকল্প গ্রহণ

ষ ব্যয় হবে প্রায় ৩৭০ কোটি টাকা ষ চলতি বছরের জুলাইয়ে শুরু ষ শেষ হবে ২০২৮ সালের জুনে
যাযাদি ডেস্ক
  ১৭ জুন ২০২৩, ০০:০০
জলবায়ু সহনীয় ধানের নতুন জাত উদ্ভাবনে প্রকল্প গ্রহণ

জলবায়ু সহনীয় ধানের নতুন জাত উদ্ভাবনে প্রায় ৩৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। প্রকল্পের আওতায় ধানের ২০টি নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন বা উন্নয়ন, ৬টি প্রতিকূল পরিবেশ সহনশীল ধানের জাত উদ্ভাবন এবং ৩০০টি জার্মপস্নাজম সংগ্রহ করা হবে। কৃষি মন্ত্রণালয় বলেছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে পরিবর্তিত জলবায়ুর সঙ্গে মিল রেখে স্থানভিত্তিক ধানের জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা সম্ভব হবে। ধানের উৎপাদন আরও বাড়াতে এ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।

কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, পরিবর্তিত আবহাওয়ায় যাতে ধানের বা খাদ্য উৎপাদনে বিঘ্ন না ঘটে সে জন্য কাজ করবে প্রকল্পের গবেষকরা। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পরিবর্তিত জলবায়ুর সঙ্গে মিল রেখে স্থানভিত্তিক ধানের জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং উন্নয়নসহ ব্রি'র মূল গবেষণা কার্যক্রমকে সহায়তা করাই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য।

সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, প্রকল্পটি কৃষি উৎপাদন বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। 'নতুন ৬টি আঞ্চলিক কার্যালয় স্থাপনের মাধ্যমে স্থানভিত্তিক ধানের জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং বিদ্যমান গবেষণাগার উন্নয়ন' প্রকল্পটির উদ্যোক্তা কৃষি মন্ত্রণালয়। ৩৬৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)। সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে চলতি ২০২৩ সালের আগামী জুলাইতে শুরু হওয়া প্রকল্পটি শতভাগ বাস্তবায়িত হবে ২০২৮ সালের ৩০ জুনের মধ্যে। গত ৬ জুন অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়েছে।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা যায়, দেশের ৬৪টি জেলায় প্রকল্পটি

বাস্তবায়নের লক্ষ্য ঠিক করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়। প্রকল্পের আওতায় স্থানভিত্তিক ধানের জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং ব্রি'র গবেষণা কাজ জোরদারের জন্য ৬টি নতুন অস্থায়ী আঞ্চলিক কার্যালয় ও ৬টি স্যাটেলাইট অফিস স্থাপন করা হবে। এর জন্য ১২০ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে। ১৫ হাজার ৩৭৫টি বিভিন্ন প্রায়োগিক পরীক্ষণ প্রদান করা হবে। ক্রসিং সুবিধার নেট হাউস (৬০০ বর্গমিটার) স্থাপন করা হবে। ৬টি গভীর নলকূপ বসানো হবে। গবেষণা মাঠ উন্নয়ন ও গবেষণা মাঠের নিরাপত্তা দেওয়াল নির্মাণ করা হবে। স্যাটেলাইট স্টেশনে এবং গবেষণার জন্য যন্ত্রপাতি, কম্পিউটার, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর ও আসবাবপত্র কেনা হবে। ৫ জনের জন্য স্থানীয় পিএইচডি কৃষি বিষয়ক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

পরিকল্পনা কমিশন আরও জানায়, প্রকল্পটি ২০২২-২৩ অর্থবছরের সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) অননুমোদিত নতুন প্রকল্প হিসেবে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত আছে। প্রকল্পটি সরকারের ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় শস্য উপখাতের অন্যতম কৌশল উৎপাদনশীলতা ও উৎপাদন বৃদ্ধি, উৎপাদন উপকরণের দক্ষ ও সুষম ব্যবহার নিশ্চিতকরণ এবং টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট-২ খাদ্য নিরাপত্তা, উন্নত পুষ্টিমান অর্জন এবং টেকসই কৃষির প্রসারের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে সংগতিপূর্ণ।

পরিকল্পনা কমিশন এ প্রকল্পের অনুমোদন চাইতে গিয়ে প্রকল্প সম্পর্কে একনেক সভায় বলা হয়, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে পরিবর্তিত জলবায়ুর সঙ্গে মিল রেখে স্থানভিত্তিক ধানের জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা সম্ভব হবে, যা কৃষি উৎপাদন বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। এমন অবস্থায় প্রকল্পটি সম্পূর্ণ জিওবি অনুদানে মোট ৩৬৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে জুলাই ২০২৩ থেকে জুন ২০২৮ পর্যন্ত মেয়াদে বাস্তবায়নের নিমিত্ত একনেকের অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করা হলো।

এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ডক্টর শামসুল আলম সংবাদিকদের জানান, প্রকল্পটি নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে সহায়ক হবে। এর ফলে শুধু আবহাওয়াজনিত কারণে নয় জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সমন্বয় করেই দেশে ধান উৎপাদন সম্ভব হবে। এতে কখনই খাদ্য ঘাটতির আশঙ্কা থাকবে না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
X
Nagad

উপরে