রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

দোকানে সাজানো রঙিন মাস্ক, ভেতরে অন্যকিছু

গাজীপুরের কালীগঞ্জ
কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি
  ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০

গাজীপুরের কালীগঞ্জে রাস্তার পাশে একটি দোকানে থরে থরে সাজানো ছিল রঙিন মাস্ক। দেখে বোঝার উপায় নেই যে, আড়ালে অন্যকিছু আছে। দোকানটিতে এক ফুটের মতো কাউন্টারের ফাঁকা জায়গা দিয়ে চলতো বেচা-কেনা। এক অভিযানে বেরিয়ে আসে অবৈধ ব্যবসার খবর। এখানে গোপনে বিক্রি হতো যৌন উত্তেজক ওষুধ, মাদক সেবনের সহায়ক জিনিসপত্র ও অস্ত্রসহ নানা অবৈধ পণ্য।

জানা গেছে, রোববার সন্ধ্যায় গাড়িতে করে যাচ্ছিলেন গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আজিজুর রহমান। এ সময় পৌরসভার পুরাতন ব্যাংকের মোড় এলাকায় চোখে পড়ে রহস্যে ঘেরা মাস্কের ওই দোকানটি। ইউএনও ড্রাইভারকে গাড়ি থামাতে বলেন। নেমে এগিয়ে যান দোকানটির দিকে। সঙ্গে সঙ্গে দু'জন আনসার সদস্যও সেখানে যান। দোকানি ইউএনওকে দেখে বাহিরে বেরিয়ে আসেন। ইউএনওর এক প্রশ্নে ওই দোকানি বলেন- মাস্ক ছাড়া অন্য কোনোকিছু তিনি বিক্রি করেন না। তখন দোকানির কথাবার্তায় সন্দেহ হলে এক আনসার সদস্যকে দোকান সার্চ করে দেখতে বলেন ইউএনও। আনসার দোকানে প্রবেশ করতেই ওই দোকানি কৌশলে পালিয়ে যায়। এরপরই খবর দেওয়া হয় থানায়। পরে ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মোহাম্মদ সাব্বির রহমান ও ইন্সপেক্টর (অপারেশন) সঞ্জয় সাহার যৌথ নেতৃত্বে থানা থেকে চলে আসে একে একে কয়েকটি পুলিশ ফোর্স। থানা পুলিশ ওই দোকানে অভিযান চালায়। দোকান থেকে একে একে উদ্ধার করা হয় অবৈধ পণ্য। উদ্ধার কাজ চলে রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত।

মাস্কের দোকান লাগোয়া কালীগঞ্জ রাজা রাজেন্দ্র নারায়ণ (আরআরএন) পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, 'আমার ছেলে তার বন্ধুদের সঙ্গে গিয়ে ২০ টাকা দিয়ে ওই দোকান থেকে 'পুকেমন' নামের এক ধরনের কার্ড কিনে নিয়ে আসে। যা অনেকটা তাসের আদলে তৈরি। আমি আমার ছেলেকে জিজ্ঞেস করি- এটি কি? এবং কি করে? সে আমাকে এটি খেলার নিয়ম শিখিয়ে দেয়। তবে খেলার নিয়মটাও অনেকটা তাস খেলার মতো। ওইদিন থেকে আমি আমার ছেলেকে চোখে চোখে রাখি এবং এর কুফল সম্পর্কে বলি। তখন সে ওই কার্ডগুলো ছিঁড়ে ফেলে এবং আর কোনোদিন কিনবে না বলেও জানায়।' ওই দোকানির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মোহাম্মদ সাব্বির রহমান বলেন, 'মাস্কের দোকানে অভিযান চালিয়ে যেসব জিনিস আমরা জব্দ করেছি, তা কিশোর গ্যাং গড়ে ওঠায় সহায়তা করত। এখানে মাস্কের আড়ালে যৌন উত্তেজক ওষুধ, মাদক সেবনের সহায়ক জিনিসপত্র, অস্ত্রসহ আরও বেশকিছু জিনিস বিক্রি করত।'

ইউএনও মো. আজিজুর রহমান বলেন, আমরা ওই দোকানিকে পুলিশের মাধ্যমে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি। যদি পাওয়া যায় তাহলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জেল-জরিমানা করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে