সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহীতে বিএনপির কোন নেতার বিরুদ্ধে কত মামলা

বদরুল হাসান লিটন, রাজশাহী
  ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০

বিএনপির কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত নেতাকর্মীরা এখন মামলা আর সাজার চাপে বিপাকে রয়েছেন। গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের মামলা নিষ্পত্তিতে সাম্প্রতিক সময়ে গতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দ্রম্নত ফেলা হচ্ছে সাক্ষ্য গ্রহণের দিন। ফলে এ নিয়ে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে নেতা-কর্মীদের মাঝে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় মামলা তথ্য ও সংরক্ষণ সেল থেকে গত সোমবার মামলা ও আসামির সংখ্যার তথ্য প্রকাশ করা হয়। তাতে জানানো হয়েছে, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সালের আগস্ট পর্যন্ত গত ১৪ বছরে সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে ১ লাখ ৪১ হাজার ৬৩৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই সব মামলায় আসামির সংখ্যা ৪৯ লাখ ২৬ হাজার ৪৯২।

এর মধ্যে রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে ১১ হাজার ৪৫২টি। এ সব মামলায় আসামি সংখ্যা ৭ লাখ ৬৩ হাজার ৪৩৬। এর মধ্যে রাজশাহী জেলায় মামলা রয়েছে দেড় হাজারের উপরে। যেখানে আসামি রয়েছে ১ লাখের বেশি। নাশকতা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, সরকারি কাজে বাধা ও বিস্ফোরক আইনে অধিকাংশ মামলা দায়ের করা হয়েছে।

তবে সংখ্যা বাড়াতে ২০০৯ সালের আগে ১/১১ সময় ও তার আগের মামলাগুলো যুক্ত করা হয়েছে এই তালিকায় বলে জানা গেছে। বিশেষ করে ১/১১ পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুর্নীতি ও জঙ্গি মদতদানের অভিযোগে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে যেসব মামলা হয়েছে সেগুলোও এই তালিকায় দেওয়া হয়েছে।

রাজশাহীতে সবচেয়ে বেশি মামলা রয়েছে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনুর বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে ৪৬টি। তবে এসব মামলার মধ্যে ২০০৯ সালের আগে ২০০৭ সালের ১/১১ পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও জঙ্গি মদতদানের অভিযোগ দায়ের করা মামলাও রয়েছে। মিজানুর রহমান মিনু রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সাবেক এমপি।

এর পরের অবস্থানে রয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য নাদিম মোস্তফা। তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে ৪৫টি। নাদিম মোস্তফা রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের সাবেক এমপি ও রাজশাহী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি।

এছাড়াও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে ২৮টি। বুলবুল রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি।

অপরদিকে, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসনবিষয়ক সহ-সম্পাদক ও রাজশাহী মহানগরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলনের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে ৩১টি এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও রাজশাহী জেলার আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদের বিরুদ্ধে মামলা ৩৮টি। বিএনপির এই দুই নেতা বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।

এছাড়াও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন শওকতের বিরুদ্ধে ৮টি, রাজশাহী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন তপুর বিরুদ্ধে ৩টি, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও পুঠিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু বকর সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ৬টি, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য দেবাশীস রায় মধুর বিরুদ্ধে রয়েছে ৫টি মামলা।

রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ইশা বলেন, 'আমাদের এমন কোনো নেতা নেই যার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা নেই। দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নতুন-পুরাতন মামলাগুলো আবার সচল করা হচ্ছে। মামলাগুলো দ্রম্নত শেষ করার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। কারণ একটাই আন্দোলন দমন করা। কিন্তু এসব করে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে