যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) শহীদ মসিয়ুর রহমান হলে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। তবে আগুন ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার আগেই ঝুঁকি নিয়ে প্রায় ৪০ মিনিটের চেষ্টায় পানি ও অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করে নিয়ন্ত্রণে আনেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। আগুন লাগার ঘটনায় রুমে থাকা শিক্ষার্থীদের ল্যাপটপ, ফ্যান ও ব্যবহার্য জিনিসপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তবে এ সময় কেউ রুমে না থাকায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। শনিবার আনুমানিক দুপুর ১-১৫ মিনিটে হলের পঞ্চম তলার ৫২৭ নম্বর রুমে আগুনের এ ঘটনা ঘটে।
আগুন নিয়ন্ত্রণের পরপরই ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘঠনাস্থলে এসে উপস্থিত হন। তারা প্রাথমিকভাবে মনে করছেন, শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। তবে এ ঘটনায় হল প্রশাসনকে দায়ী করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
এদিকে, আগুন লাগার ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে হল প্রশাসন। তাদের আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন হলটির প্রভোস্ট ডক্টর আশরাফুজ্জামান জাহিদ।
আগুন লাগার বিষয়ে পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের শিক্ষার্থী নিশান রাব্বি বলেন, 'মসজিদ থেকে দেখি, হলের পঞ্চম তলায় দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। আগুন দেখে দ্রম্নত আমরা সেখানে উপস্থিত হই এবং দেখি ৫২৭ নম্বর রুমের ভেতর আগুন জলছে। রুমে তালা দেওয়া ছিল। তালা ভেঙে পানি ও অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করি। তবে কিছু অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র নষ্ট ছিল, কাজ করছিল না। এরপর কয়েকটি অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র পরিবর্তন করে আমরা আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করি, তবে সহজে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসছিল না। অনেক সময় চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হই।'
এ বিষয়ে ইইই বিভাগের শিক্ষার্থী রাব্বী হোসেন জানান, 'বৈদু্যতিক শর্ট সার্কিটের জন্য হলে আগুন লেগেছে। এই শর্ট সার্কিটের কারণ হলো- হলো প্রশাসনের অবহেলা। বৈদু্যতিক কোনো বিষয়ে অভিযোগ করলে ৩-৪ দিন এমনকি এক সপ্তাহের পর সমাধান করে। বৈদু্যতিক বিষয়ে এমন অবহেলা করা উচিৎ নয়।'
এ বিষয়ে শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের প্রভোস্ট ডক্টর আশরাফুজ্জামান জাহিদ বলেন, 'হলে একাধিক ইলেক্ট্রিশিয়ান ও জনবল সংকটের কারণে বৈদু্যতিক সমস্যা সমাধানে কিছুটা বিলম্ব হয়। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জনবলের স্বল্পতার বিষয়ে চিঠি দিলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।'
তিনি ইঞ্জিনিয়ারিং দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে দ্রম্নত এই সমস্যা সমাধানের আশ্বাস প্রদান করেন।
সার্বিক বিষয়ে হল প্রভোস্ট বলেন, 'বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমিক ভবনে অবস্থানকালে দুপুর ১-২০ এর দিকে হলে আগুন লাগার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখি, শিক্ষার্থীরা অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ও পানি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে ও একপর্যায়ে নিয়ন্ত্রণে আনে।'
মেয়াদোত্তীর্ণ ও অকেজো অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের বিষয়ে তিনি বলেন, 'দীর্ঘদিন ব্যবহার না করার ফলে কিছু যন্ত্র কাজ করেনি। মেয়াদোত্তীর্ণ ও অকেজো অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি।'