শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

পুলিশের বিপক্ষে সাইফ স্পোর্টিংয়ের বড় জয়

ক্রীড়া প্রতিবেদক
  ০২ মার্চ ২০২১, ০০:০০
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে সোমবার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াবোংলাদেশ পুলিশ ফুটবল ক্লাবের বিপক্ষে গোল করার পর উচ্ছ্বসিত সাইফ স্পোর্টিংয়ের দুই খেলোয়াড় -বাফুফে

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে বড় জয় পেয়ে পয়েন্ট টেবিলে দুই ধাপ এগিয়েছে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব। সোমবার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াতোরা পুলিশ ফুটবল ক্লাবকে হারায় ৪-১ গোলের ব্যবধানে। সাইফের এই জয়ে বড় কৃতিত্ব জন ওকোলির। তিনি জোড়া গোল করেন। এছাড়া ক্যানেথ ইকেচুকুও সাজ্জাদ একটি করে গোল করেন। পুলিশের একমাত্র গোলটি করেন জমির উদ্দিন। ১১ ম্যাচে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে সপ্তথেকে পঞ্চস্থনে উঠে এসেছে সাইফ। সমান ম্যাচে ১২ পয়েন্ট পুলিশের। তারা আছে অষ্টস্থানে।

সোমবার সাইফ-পুলিশের লড়াইটি ছিল বেশ আকর্ষণীয়। শক্তির বিচারে পিছিয়ে থাকলেও সাইফকে বেশ চাপের মুখে রেখেছিল কোচ পাকির আলীর শিষ্যরা। ম্যাচের প্রথমিনিটেই বা প্রান্ত থেকে সাইফের নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড ক্যানেথ ইকেছুকু বল নিয়ে ঢুকে পড়েন। কিন্তু কর্নারের বিনিময়ে যাত্রা বল ক্লিয়ার করতে সমর্থ হন পুলিশের আইভরি কোস্টের ডিফেন্ডার ল্যানসিন তোরে। কর্নার নেন সাইফের উজবেকিস্তানের মিডফিল্ডার সিরজহিদ্দিন রাখমতুলস্নায়েভ। তবে দক্ষতার সঙ্গেই বল গ্রিপে নেন পুলিশের গোলপোস্ট আগলে রাখার দায়িত্বে থাকা মো. নেহাল। ৮ মিনিটে বক্সের বা প্রান্ত থেকে কেনেথের পাসে বল পেয়ে ডান পায়ে শট নেন তারই স্বদেশি (নাইজেরিয়ান) ফরোয়ার্ড জন ওকোলি। কিন্তু গোলের দেখা পাননি। ১৪ মিনিটে বা প্রান্ত থেকে সাইফের স্থানীয় ডিফেন্ডার ইয়াসিন আরাফাতের ফ্রি কিক বক্সে গ্রিপ করেন গোলরক্ষক নেহাল। ২০ মিনিটে নিশ্চিত গোলের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয় ফেডারেশন কাপের রানার্স আপরা। বক্সের বাইরে থেকে দূরপালস্নার এক জোরালো শট করেন কেনেথ। কিন্তু বল বারে লেগে ফেরত আসায় আক্ষেপে পুড়ে সাইফের ফুটবলাররা। পরের মিনিটেই বক্সে ঢুকে প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে ডান পায়ে শট নেন ইকেছুকু। কিন্তু বল ফিস্ট করে গতিপথ বদলে দেন গোলরক্ষক নেহাল। পর পর দু'টি আক্রমণ নস্যাৎ হয় কেনেথের। ৩১ মিনিটে বক্সের ভেতর বল নিয়ে ঢুকে ডান প্রান্ত থেকে শট নেন রহিম। বল ফিস্ট করে ফিরিয়ে দেন নেহাল। ফিরতি বলে বাপাশে দাঁড়িয়ে থাকা ফরোয়ার্ড ফয়সাল আহমেদ ফাহিবা পায়ের দর্শনীয় এক শট নেন। কিন্তু বল অল্পের জন্য জড়ায়নি জালে। সাইফের আক্রমণ সামলে ৩৬ মিনিটে প্রথএকটি জোরালো আক্রমণ করার সুযোগ পায় পুলিশ। ডান প্রান্ত থেকে স্বাধীনের পাসে বল পেয়ে বক্সে ঢুকে ডান পায়ে শট নেন পুলিশের আইভরি কোস্টের ফরোয়ার্ড বালেস্না ফেমোসা। গোলরক্ষক পাপ্পু হোসেন ঝাঁপিয়ে পড়ে বল ফিস্ট করায় নিশ্চিত গোলের সুযোগ হাতছাড়া হয় পুলিশ ফুটবল ক্লাবের। ৩৭ মিনিটে বা প্রান্ত থেকে আখমেদভের কর্নারে পোস্টের বেশ কাছ থেকে শট নেন জমির উদ্দিন। কিন্তু এবারও অল্পের জন্য বল খুঁজে পায়নি জাল। ৪১ মিনিটে সাইফের একটি কর্নার বক্সে হেডে ক্লিয়ার করেন পুলিশ ডিফেন্ডাররা। তবে ৪৪ মিনিটে ম্যাচে লিড নেয় সাইফ স্পোর্টিং। দূর থেকে রহিউদ্দিনের বাড়িয়ে দেওয়া বল নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ডান পায়ে দূরপালস্নার এক দারুণ শট নেন ক্যানেথ। বুলেট গতিতে বল গিয়ে আশ্রয় নেয় পুলিশের জালে (১-০)। প্রথমার্ধের ইনজুরি টাই(ে৪৫+১) মিনিটে বা প্রান্ত থেকে পুলিশের জমিরের শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন সাইফের নাইজেরিয়ান ডিফেন্ডার ইমানুয়েল। তবে এর কিছুক্ষণ পরই (৪৫+২) মিনিটে সতীর্থের পাসে বল পেয়ে বক্সের বা প্রান্তে চলে যান জন ওকোলি। কিন্তু ভুলে তাকে মার্ক করেননি পুলিশের আইভরি কোস্টের মিডফিল্ডার ফ্রেডরিক পোদা। সুযোগটা কাজে লাগাতে ভুল করেননি জন ওকোলি। কোনাকোনি শটে সরাসরি বল পাঠিয়েছেন পুলিশের জালে (২-০)। শুরু থেকে গোল খরায় ভোগা ম্যাচে মাত্র কয়েক মিনিটেই দুই গোল আদায় করে নিয়ে বিশ্রাযোন জুলফিকার মাহমুদ মিন্টুর শিষ্যরা। ৫১ মিনিটে প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে ক্যানেথের বা পায়ে নেয়া শটটি ছিল নিশ্চিত গোল। কিন্তু সেটি ফিস্ট করেন নেহাল। ম্যাচে ৬১ মিনিটে ব্যবধান কিছুটা কমায় পুলিশ ফুটবল ক্লাব। বক্সের বাইরে থেকে আখমেদভের ফ্রি কিক ফিস্ট করেন গোলরক্ষক পাপ্পু। কিন্তু পুরোপুরি ক্লিয়ার করতে পারেননি। বক্সে থাকা তরুণ ফরোয়ার্ড জমির উদ্দিন দর্শনীয় হেডে বল পাঠান জালে (২-১)। ৮৭ মিনিটে প্রায় মাঝ মাঠ থেকে একাই বল নিয়ে পুলিশের বক্সে ঢুকে পড়েন জন ওকোলি। তাকে বাধা দিতে চেষ্টা করেও নাগাল পাননি পুলিশের এক ডিফেন্ডার। বক্সে ঢুকে জোরালো শটে লক্ষ্যভেদ করেন ওকোলি (৩-১)। ইনজুরি টাই(ে৯০+৪) প্রায় ফাঁকা পোস্ট পেয়ে আরও একবার পুলিশের জাল কাপান সাজ্জাদ (৪-১)। আর এই গোলেই জয় নিশ্চিত হয় সাইফের।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে