রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

লস অ্যাঞ্জেলসে ২০২৬ বিশ্বকাপের লোগো উন্মোচন

ক্রীড়া ডেস্ক
  ১৯ মে ২০২৩, ০০:০০
লস অ্যাঞ্জেলসের সোফি স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের লোগো -ওয়েবসাইট

এক বিশ্বকাপ শেষ না হতেই আরেক বিশ্বকাপের আনুষ্ঠানিকতার সূচনা হয়ে গেল। ২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপের আসর যৌথভাবে আয়োজন করছে উত্তর আমেরিকার তিন দেশ- কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকো। গ্রেটেস্ট শো অন আর্থের সে আসরের লোগো উন্মোচন করেছে ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। ফুটবল বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো তিনটি দেশ একসঙ্গে আয়োজক হিসেবে নির্বাচিত হয়। এবার ফুটবল এবং বৈচিত্র্যের উদযাপনে ২০২৬ বিশ্বকাপের অফিশিয়াল লোগো উন্মোচন করেছে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা।

বুধবার লস অ্যাঞ্জেলসে এক জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে লোগো উন্মোচন করেন ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো এবং ব্রাজিলিয়ান ফুটবল কিংবদন্তি 'এল ফেনোমেনন' রোনাল্ডো নাজারিও।

২০২৬ বিশ্বকাপ থেকে বদলে যাচ্ছে ফুটবল বিশ্বকাপের চেহারা। কাতারেই শেষবারের মতো বসেছিল ৩২ দলের আসর। যাতে বিশ্বকাপে খেলা হতো ৬৪ ম্যাচ। 'কানাডা-যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো বিশ্বকাপ, ২০২৬' থেকে আসর হবে ৪৮ দেশ নিয়ে। অর্থাৎ দেশের সংখ্যা বাড়ছে ১৬টি। ফলে বাড়বে ম্যাচ সংখ্যাও। যে কারণে শেষ চারটি বিশ্বকাপের তুলনায় ২০২৬ আসরে ভেনু্যর সংখ্যাও বাড়াতে হয়েছে ফিফাকে। খেলা হবে ১৬টি ভেনু্যতে।

আয়োজনে কানাডা ও মেক্সিকো থাকলেও মূল আয়োজক হিসেবে থাকছে যুক্তরাষ্ট্র। আয়োজক যুক্তরাষ্ট্রের ১১টি ভেনু্যতে হবে বিশ্বকাপের খেলা। দুই সহআয়োজক মেক্সিকোর তিনটি, আর কানাডার দুই স্টেডিয়ামে চলবে বিশ্বকাপের লড়াই।

লোগো উন্মোচন অনুষ্ঠানে ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো বলেন, 'এটি এমন একটি মুহূর্ত যখন তিনটি দেশ এবং একটি সমগ্র মহাদেশ সম্মিলিতভাবে বলে যে, আমরা বিশ্বকে স্বাগত জানাতে এবং সর্বকালের সর্ববৃহৎ ও সবচেয়ে বেশি দল নিয়ে ফিফা ওয়ার্ল্ডকাপ উপহার দিতে চলেছি।'

ফিফা সভাপতি আরও বলেন, 'এই টুর্নামেন্ট আয়োজক দেশ এবং অংশগ্রহণকারীদের ইতিহাসের পাতায় নাম লেখানোর সুযোগ করে দিচ্ছে।'

২০২৬ বিশ্বকাপের লোগো নির্বাচনে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টিকে। পৃথিবীর ক্রমবর্ধবান ভোগবাদিতার বিপরীতে 'মিনিমালিস্ট' ধারণার প্রচারে খুবই সাদামাটা লোগো বেছে নিয়েছে ফিফা। যা খুব একটা পছন্দ হয়নি ফুটবলপ্রেমীদের। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাই এরই মধ্যে সমালোচনা শুরু হয়েছে লোগোটি নিয়ে। বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে বিরক্তিকর লোগো হিসেবে আখ্যা দিয়েছে তারা।

ট্রফিটির নিচে ২০২৬ বিশ্বকাপের বোল্ড ছাপ দেওয়া হয়েছে। এবারই প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের লোগোতে সোনালি ট্রফি ব্যবহার করা হয়েছে। যদিও অন্য আসরগুলোতে মূল ছবির পরিবর্তে অঙ্কিত কোনো ছবি ব্যবহার করা হতো। লোগোটিকে লাল, সাদা এবং নীল ঢালের বিপরীতে বিশেষভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপে মোট ১০৪টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। আর ৪৮ দলের বর্ধিত কলেবর হলেও ৪ দলের গ্রম্নপ নিয়েই মাঠে গড়াবে যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডায় অনুষ্ঠেয় ফুটবল বিশ্বকাপ। ১২টি গ্রম্নপে ৪৮টি দলকে ভাগ করা হবে। প্রতিটি গ্রম্নপে ৪টি করে দল থাকবে। আর প্রথমবারের মতো থাকবে রাউন্ড অব থার্টি-টু।

প্রতিটি গ্রম্নপের শীর্ষ দুই দল শেষ ৩২-এ জায়গা করে নেবে। এর সঙ্গে প্রতিটি গ্রম্নপে তৃতীয় দলগুলোর মধ্যে ৮টি দল রাউন্ড অব থার্টি-টুতে জায়গা পাবে। এরপর ৩২ দল নিয়ে হবে নক-আউট পর্ব, এরপর যথাক্রমে শেষ ষোলো, কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল ও ফাইনাল হবে।

এর আগে আয়োজক এ তিন দেশের ১৬টি শহরকে ভেনু্য হিসেবে নিশ্চিত করেছিল ফিফা। যেখানে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পায় যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির ১১টি মেট্রো অঞ্চলকে ২০২৬ বিশ্বকাপের ভেনু্য হিসেবে বেছে নেয় ফিফা।

এ ১১টি অঞ্চল হচ্ছে : আটলান্টা, বোস্টন, ডালাস, হিউস্টন, কানসাস সিটি, লস অ্যাঞ্জেলস, মিয়ামি, নিউইয়র্ক-নিউজার্সি, ফিলাডেলফিয়া, সান ফ্রান্সিসকো বে এরিয়া ও সিয়াটল।

বাকি ৫ শহরের মধ্যে তিনটি মেক্সিকোর ও দু'টি হচ্ছে কানাডার। মেক্সিকোর গুয়াদালাহারা, রাজধানী মেক্সিকো সিটি ও মন্টেরিকে বেছে নেওয়া হয়। আর কানাডা থেকে আয়োজক শহর হিসেবে নির্বাচিত হয় টরেন্টো ও ভ্যানকুভার।

আয়োজক তিন দেশের মধ্যে মেক্সিকো সবচেয়ে সফল ফুটবল বিশ্বকাপে। এ ছাড়াও প্রথম দেশ হিসেবে সর্বোচ্চ তিনবার বিশ্বকাপের স্বাগতিক হতে যাচ্ছে লাতিন আমেরিকার দেশটি। এর আগে, ১৯৭০ ও ১৯৮৬ সালে বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল মেক্সিকো।

এ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র এর আগে ১৯৯৪ সালে স্বাগতিক হিসেবে বিশ্বকাপ আয়োজন করেছে। কাতার বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো বিশ্বমঞ্চে জায়গা করে নেওয়া কানাডার জন্য ২০২৬ সালে স্বাগতিক হওয়া হবে নতুন অভিজ্ঞতা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে