রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

অতীতের সাফল্য থেকেই স্বপ্ন দেখছেন তানজিদ তামিম

'আমরা যেটা অর্জন করছি, সেটা তো এখন অতীত। সবার মধ্যে এখন একটাই কথা, একটা স্বপ্ন যে বড়দের হয়ে বিশ্বকাপ জেতা। সবারই যখন দেখা হয়, সামনে যেহেতু বিশ্বকাপ, একটা জিনিসই মাথায় কাজ করে, আমরা এশিয়া কাপ যত টুর্নামেন্টই খেলি না কেন, ব্যাক অব দ্য মাইন্ডে কিন্তু ওয়ার্ল্ড কাপ থেকেই যায়। ইনশাআলস্নাহ চেষ্টা করব এবার। যদি কপালে থাকে, ইনশাআলস্নাহ হয়ে যাবে।' -তানজিদ হাসান তামিমে
ক্রীড়া প্রতিবেদক
  ১৮ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০
তানজিদ হাসান তামিম, জাতীয় দলে প্রথমবার সুযোগ পেয়ে অনুশীলনেও প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের কাছে পেয়েছেন পূর্ণ স্বাধীনতা -সংগৃহীত

সময়টা বেশ ভালোই যাচ্ছে বাংলাদেশের তরুণ ক্রিকেটার তানজিদ হাসান তামিমের। ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজের জাত চিনিয়েছেন তানজিদ হাসান তামিম। কদিন আগেই ইমার্জিং এশিয়া কাপে নজর কেড়েছেন। সেখান থেকে ফিরেই প্রথমবারের মতো ডাক পেয়েছেন জাতীয় দলে। এশিয়া কাপের স্কোয়াডে থাকলেও জুনিয়র তামিমের ধ্যানজ্ঞানজুড়ে আসন্ন ভারত বিশ্বকাপ। যুব বিশ্বকাপের মতো এবার বড়দের বিশ্বকাপও জিততে চান তরুণ এই টাইগার ব্যাটার। জানালেন, কপালে থাকলে বিশ্বকাপ জিতবেন। নিজের অনুভূতির কথাও লুকোলেন না তরুণ এই ক্রিকেটার।

২০২০ সালে বাংলাদেশ জিতেছিল প্রথম বৈশ্বিক শিরোপা অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ। আকবর আলীর নেতৃত্বে তাওহিদ হৃদয়, শামীম পাটোয়ারী, শরিফুল ইসলাম, তানজিদ হাসান তামিমরা দক্ষিণ আফ্রিকায় ভারতকে হারিয়ে জিতেছিল শিরোপা।

সেই দলের অনেকেই এখন জাতীয় দলে জায়গা করে নিয়েছেন। বর্তমান এশিয়া কাপ দলেই রয়েছেন চারজন। তাওহিদ সীমিত পরিসরে এখন নিয়মিত মুখ। শরিফুলের পায়ের নিচের জমিন শক্ত হয়েছে। শামীম খুঁজে পেয়েছেন ঠিকানা। আর একেবারেই নতুন মুখ তামিম। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এই চার যুব বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার থাকবেন ভারতে অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপ দলেও।

দেশকে প্রথম বৈশ্বিক শিরোপা এনে দেওয়া তরুণরা এখন স্বপ্ন দেখছেন বড়দের বিশ্বকাপ জেতারও। নিজেদের অতীতের সাফল?্য থেকেই ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখছে তারা। নিজেদের মধ্যেও চলে আলাপচারিতা। কথায় কথায় উঠে আসে ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়ের কথা। যে স্বপ্ন তারা দেখছেন তা পূরণ করার অদম?্য জেদ কাজ করছে তাদের হৃদয়ে।

গতকাল বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানালেন জাতীয় দলে উঠে আসার পথটা

মোটেও সহজ ছিল না। একই সঙ্গে এই ওপেনারের আশা তার নিজ এলাকা বগুড়া থেকে আরও অনেক ক্রিকেটার উঠে আসবে।

বিশ্বকাপে তামিম সুযোগ পাবেন কিনা তা বোঝা যাবে এশিয়া কাপের পারফরম?্যান্সে। এশিয়া কাপে তাকে নেওয়া হয়েছে তামিম ইকবালের বদলি হিসেবে। সিনিয়র দলের সঙ্গে মানিয়ে নিতে তামিম খুব কম সময় পেয়েছেন।

তামিম বলেন, 'প্রথমত, আলহামদুলিলস্নাহ যে জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছি। তারপরও এশিয়া কাপের মতো একটা মঞ্চে সুযোগ পেয়েছি। সিনিয়রদের সঙ্গে এর আগেও খেলার সুযোগ হয়েছে আমার। বিভিন্ন স্থানীয় টুর্নামেন্টগুলোতে, বিসিবি প্রেসিডেন্ট কাপ, সব জায়গাতেই খেলা হয়েছে। উপভোগ করছি অনেক।'

তামিম বলেন, 'সত্যি অনেক ভালো লাগে। আমাদের উঠে আসা এতটা সহজ ছিল না। কারণ, আমাদের ব্যাকগ্রাউন্ডে বিকেএসপি ছিল না। আমাদের অনেক ডিস্ট্রিক্ট, ডিভিশন তারপর ঢাকা লিগ খেলে এখানে উঠে আসতে হয়েছে।'

অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জিতলেও তামিমের স্বপ্ন এখন বড়দের হয়েও বিশ্বকাপ জয়ের। এমন কী ২০২০ সালে যুব বিশ্বকাপ জয় করাটা অতীত হয়ে গিয়েছে বলছেন এই ওপেনার। সামনে এশিয়া কাপের খেলা থাকলেও তামিমের মাথায় বিশ্বকাপের চিন্তা। এই ওপেনার মনে করছেন কপালে এইবার বিশ্বকাপ জয়টাও হয়ে যেতে পারে।

তামিম বলছিলেন, 'আমরা যেটা অর্জন করছি, সেটা তো এখন অতীত। সবার মধ্যে এখন একটাই কথা, একটা স্বপ্ন যে বড়দের হয়ে বিশ্বকাপ জেতা। সবারই যখন দেখা হয়, সামনে যেহেতু বিশ্বকাপ, একটা জিনিসই মাথায় কাজ করে, আমরা এশিয়া কাপ যত টুর্নামেন্টই খেলি না কেন, ব্যাক অব দ্য মাইন্ডে কিন্তু ওয়ার্ল্ড কাপ থেকেই যায়। ইনশাআলস্নাহ চেষ্টা করব এবার। যদি কপালে থাকে, ইনশাআলস্নাহ হয়ে যাবে।'

ছোট থেকে নিজের মার-মার কাট-কাট যে খেলাটা সেটা এখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তামিম খেলতে পারবেন কি না সেটা নিয়েই যথেষ্ট আলোচনা হচ্ছে। তবে এসব নিয়ে খুব একটা চিন্তিত নন এই ওপেনার, 'আমি এটা নিয়ে চিন্তা করছি না। কোন বোলার বল করছে, এটা নিয়ে আমি ভাবি না। আমি চেষ্টা করি বল দেখে খেলার।'

নিজের খেলার ধরন নিয়ে তামিম আরও বললেন, 'দেখুন, আমি এসব চিন্তা করে ব্যাটিংয়ে নামি না। মনের মধ্যে এটাই থাকে যে পজিটিভ ক্রিকেট খেলব। অনেকেই বলে আমি অনেক আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলি। এই রকম না। আমি শুধু স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করি। আমার শক্তির ওপর বিশ্বাস রাখার চেষ্টা করি। আমি বিশ্বাস করি, আমার শক্তিতে এবং পজিটিভ খেলায়।'

প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সঙ্গে প্রথমবার কাজ করছেন তামিম। টাইগার এই প্রধান কোচও দিয়েছেন টোটকা, 'জাতীয় দলে আসার পর কোচ বলছেন, তুমি এতদিন যেভাবে খেলে এসেছ, তোমার সহজাত খেলা যেটা, সেটাই খেলবে। উনি বলছেন যে তোমার যদি নিজের কোনো সমস্যা থাকে, তাহলে আমার কাছে এসে কথা বলবে। উনি সব সময় প্রশ্ন করতে পছন্দ করেন। কারণ, তাহলে নিজের ভেতর থেকে সব কিছু আসে। এদিক থেকে বলব ভালো।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে