বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

​১০ বছরেও উদ্বোধন হয়নি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ

চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
  ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১২:৫৩
​১০ বছরেও উদ্বোধন হয়নি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ

দীর্ঘ ১০ বছরেও আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন হয়নি চিলমারী উপজেলার বালাবাড়ীহাট রেল স্টেশন এলাকায় নির্মিত মুক্তিযুদ্ধের সম্মুখ সমরের স্মৃতিস্তম্ভ। তাই সেখানে শ্রদ্ধাঞ্জলী দেননা কেউ। শহিদ স্মৃতিস্তম্ভটি নির্মাণের পর থেকেই অযত্ন অবহেলায় পড়ে আছে।

গণপূর্ত বিভাগ সুত্র জানায়, ২০১২ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে প্রায় ২২ লাখ ১ হাজার ৫৫২ টাকা ব্যায়ে চিলমারী উপজেলার বালাবাড়ীহাট রেল স্টেশনের পাশে মুক্তিযুদ্ধের সম্মুখ সমরের স্মৃতিস্তম্ভটি নির্মিত হয়। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে এটির নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করে গণপূর্ত বিভাগ। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী স্মৃতিস্তম্ভের সাদা ফলকে উৎকীর্ণ করা হয় স্বাধীনতা যুদ্ধে বালাবাড়ীহাট রেল স্টেশন এলাকায় পাকবাহিনী ও তার দোষরদের যুদ্ধকালিন সময়ে মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতাকামী মানুষের উপর নৃশংশতার ইতিহাস ও পাক বাহিনীর সাথে মুক্তিবাহিনীর সম্মুখ যুদ্ধের কথা।

এদিকে স্মৃতিস্তম্ভটি নির্মিত হওয়ায় বিশেষ করে এলাকার মুক্তিযোদ্ধারা অত্যন্ত খুশি হলেও এটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের অপেক্ষায় দীর্ঘ ১০ বছর পেরিয়ে গেছে।

সরেজমিন দেখা যায়, স্মৃতিস্তম্ভটি দীর্ঘদিন অযত্ন অবহেলায় পড়ে থাকায় এর চারিদিকে ঘেরা নিরাপত্তা বলয়ের লোহার বেষ্টনিতে মরিচা ধরেছে। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে চিলমারী উপজেলার বালাবাড়ী রেলওয়ে স্টেশন পাকবাহিনীর একটি শক্ত ঘাঁটি ছিল। বৃহত্তর রংপুর জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে পাক-হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোষর রাজাকার, আলবদর বাহিনী মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতাকামী জনগণকে যুদ্ধকালিন সময়ে ধরে এনে এখানে অমানবিক নির্যাতন করে নৃশংস্বভাবে হত্যা করত। এমনকি বাঙ্গালীদের গায়ে পাট বেঁধে কেরোসিন তেল দিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয়া হত। ১৯৭১ সালের ১৭ অক্টোবর ১১ নং সেক্টরের কমান্ডার কর্ণেল তাহেরের নেতৃত্বে এ স্থানে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে পাকবাহিনীর তুমুল যুদ্ধ সংঘটিত হয়। দেশের স্বাধীনতার জন্য জীবন বাজি রেখে সম্মুখ যুদ্ধ করতে গিয়ে অনেক অকুতভয় মুক্তিযোদ্ধা শহিদ হন। যুদ্ধে আনুমানিক ২০ জন পাক হানাদার বাহিনী নিহত হয়। অনেক রক্তের বিনিময়ে বালাবাড়ীহাট রেলওয়ে স্টেশন শত্রুমুক্ত হয়।

চিলমারী মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুুটি কমান্ডার মো. মোজাফ্ফর আহম্মেদ জানান, স্মৃতিস্তম্ভটি রক্ষণাবেক্ষণ, আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন ও এর নিরাপত্তার স্বার্থে একজন নিরাপত্তা কর্মী দেয়ার ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে কথা বলেছেন। এ ব্যাপারে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম ডব্লিউ রায়হান শাহ্ বলেন, স্মৃতিস্তম্ভটি গণপূর্ত বিভাগ আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেনি। তবে গণপূর্তবিভাগ স্মৃতিস্তম্ভটির লোহার বেষ্টনীর গেটের চাবি দিয়ে গেছে। আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের কাছে হস্তান্তর করলে পুষ্পমাল্য অর্পনে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।

যাযাদি/এসএইচ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে