রাজশাহীর পুঠিয়ার বানেশ্বর বাজারের চারজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ীকে অবৈধ গ্রেফতার ও বৈধ মাল জব্দের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত। এবং অবিলম্বে গ্রেফতারকৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি চাই, ও জব্দকৃত মাল তাদের জিম্মাই ফেরত চাই। বানেশ্বর বাজার ব্যবসায়ী সমিতি ও এলাকাবাসির আয়োজনে শনিবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে বানেশ্বর বাজার বনিক সমিতির হল রুমে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
বানেশ্বর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি যুবায়ের মন্ডলের সভাপতিত্বে লিখিত প্রেস নোট পড়ে শোনান বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোঃ এনামুল হক। আরও উপস্থিত ছিলেন বানেশ্বর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও হাট ইজারাদার ওসমান আলী, শ্রী রবি সাহা, অমিত সরকার, শ্রী রাকেশ, শুভন সাহাসহ অনেকে।
লিখিত বক্তব্যে মোঃ এনামুল হক বলেন, গত ১০ মে মঙ্গলবার ৪ জন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শ্রী বিকাশ কৃষ্ণ সরকার, শ্রী শৈলেন কুমার পাল, মোঃ এমদাদুল হক ও রাজিব সাহা কে বিশেষ ক্ষমতা আইনে আটক এবং রক্ষিত ভোজ্যতেল জব্দ করা হয়েছে। ফলে এক দিকে যেমন ব্যবসায়িক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে, বানেশ্বর বাজারসহ রাজশাহী মহানগরের আশেপাশের ৭ থেকে ৮টি উপজেলায় তেল সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। অপরদিকে সাধারন জনগনের বাসাবাড়ি, খাবারের হোটেল, ডাউলমিল, বেকারীসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজে ব্যাপক প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে। বানেশ্বর দীর্ঘদিনের একটি পুরাতন বাজার ও ব্যবসা কেন্দ্র। এখান থেকে ৪/৫ জেলার ৮/১০টি উপজেলার তেলসহ বিভিন্ন মালামাল সরবরাহ হয়। আটককৃত চারজন ব্যবসায়ী ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অত্যন্ত প্রাচীন (৫০-৮০) এবং সুনামধারী।
জব্দকৃত তেল জব্দের দুই থেকে পাঁচ দিন পূর্বে গোডাউনে প্রবেশ করে যার বেশির ভাগই ৫ থেকে ৭ দিন পূর্বে ক্রয়কৃত তেল। সরকারী বিধি মোতাবেক একজন ব্যবসায়ী পাইকারি পর্যায়ে ৩০ মেট্রিক টন (১৫০ ব্যারেল) এবং খুচরা পর্যায়ে ৫ মেট্রিক টন (২৫ ড্রাম) তেল ৩০ দিন পর্যন্ত রাখলে মজুতের আওতায় পড়বে না। উল্লেখিত ৪ জন ব্যবসায়ী নিয়মিত সরবরাহকারী কেউই মজুতদার নন। এদের মধ্যে একজন গত বছরের সেরা করদাতা ও রয়েছে। বানেশ্বর বাজারের সাধারণ ব্যবসায়ী মনে করেন বাজার নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তরের পরিবর্তে মনিটরিং পরামর্শ প্রদান এবং বাজারকে তার তম চলতে দিলে বেশি সুফল পাওয়া যাবে। এমতাবস্থায়, বিশেষ ক্ষমতা আইনে আটক এই চারজন ব্যবসায়ীকে দ্রুত মুক্তি প্রদান, জব্দকৃত তেল ফেরত প্রদানসহ ব্যবসার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আবেদন ও জোর দাবি জানান এই সংবাদ সম্মেলনে। আটককৃত তেল ক্রয়ের তারিখ ও তালিকা ১। শ্রী বিকাশ কৃষ্ণ সরকার (০৮/০৫/২২ একটি চালান, ১/৫/২২ একটি চালান), ২। শ্রী শৈলেন কুমার পাল ১/৫/২২ইং দুইটি চালান, ১/৫/২২ একটি চালান, ৩। মোঃ ইমদাদুল হক ৭/৫/২২ তিনটি চালান, ৪। রাজিব সাহা ১/৫/২২ ১টি চালান, ৭/৫/২২ একটি চালান এসেছে বলে জানান।
উল্লেখ্য, রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর বাজারের পাঁচটি গোডাউনে মজুদ করা ৯২ হাজার ৬শত ১৬ লিটার সয়াবিন তেল জব্দ করেছে ডিবি ও থানা পুলিশ। গত মঙ্গলবার বিকেলে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর বাজারে পুঠিয়া থানা ও ডিবি পুলিশ অভিযান চালায়।
রাজশাহী জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইফতে খায়ের আলম জানান, এ সময় সেখানে পাঁচটি গোডাউনে ৪৫৪ ড্রামে ৯২ হাজার ৬১৬ লিটার সয়াবিন তেল পাওয়া যায়। এর মধ্যে সরকার এন্ড সন্সের গোডাউনে ৭৪ ড্রাম এবং তার গোডাউনের সামনে দাঁড়ানো ট্রাকে ৬০ ড্রাম, এন্তাজ স্টোরের গুদামে ১৪২ ড্রাম, মেসার্স পাল এন্ড ব্রাদার্সের গুদামে ১০৩ ড্রাম ও রিয়া স্টোরের গোডাউনে ৭৫ ড্রাম তেল জব্দ করা হয়।
তিনি বলেন, প্রতি ড্রামে রয়েছে ২০৪ লিটার তেল। সবাই তেলগুলো মজুদ করে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। তেল গুলো সব জব্দ করা হয়েছে। ট্রাক ড্রাইভারসহ ৫ কে আটক করা হয়। মজুদদারদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করা হবে বলেও জানায় পুলিশ সুপার।
যাযাদি/এসএইচ