শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২
পরীক্ষায় অনৈতিক সুযোগ না দেয়ায়

কটিয়াদীতে এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে ইউএনও, ওসির সামনের কক্ষ প্রত্যবেক্ষকগণকে হত্যার হুমকি

কটিয়াদী(কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
  ৩১ আগস্ট ২০২৩, ২০:৪৯
কটিয়াদীতে এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে ইউএনও, ওসির সামনের কক্ষ প্রত্যবেক্ষকগণকে হত্যার হুমকি
কটিয়াদীতে এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে ইউএনও, ওসির সামনের কক্ষ প্রত্যবেক্ষকগণকে হত্যার হুমকি

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে এইচএসসি পরীক্ষা চলাকালীন সময় রাহুল ইসলাম নামে এক শিক্ষার্থীকে পরীক্ষা কেন্দ্রে অসদুপায় অবলম্বনের সুযোগ না দেওয়ায় তিন প্রত্যবেক্ষককে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি প্রদান করেন। ঘটনাটি ঘটেছে ডা. আব্দুল মান্নান মহিলা কলেজ কেন্দ্রে সকাল ১১টার দিকে। রাহুল ইসলাম কটিয়াদী সরকারি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ও উপজেলার মসূয়া ইউনিয়নের আদমপুর গ্রামের অহিদ মিয়ার ছেলে। এ বিষয়ে ডা. আব্দুল মান্নান মহিলা কলেজ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামীমা সুলতানা কটিয়াদী মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকালে ডা. আব্দুল মান্নান মহিলা কলেজ কেন্দ্রে এইচএসসি পরীক্ষার হিসাব বিজ্ঞান ২য় পত্র বিষয় পরীক্ষা চলাকালীন সময় রাহুল ইসলাম নামে এক পরীক্ষার্থী তার পিছনের সিটে বসা অপর পরীক্ষার্থীর উত্তরপত্র দেখে লিখার সময় কক্ষ প্রত্যবেক্ষক তাকে সতর্ক করেন। তাতে সে কোন কর্ণপাত না করায় কক্ষ প্রত্যবেক্ষক রাহুলের উত্তরপত্রটি নিয়ে যায। ফলে রাহুল ক্ষিপ্ত হয়ে প্রত্যবেক্ষকগণের সাথে অসদাচরণ শুরু করে এবং পরীক্ষার শেষে শিক্ষককে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। তার আচরণে পরীক্ষা হলের পরিবেশ নষ্ট হওয়ার কারণে অন্যান্য পরীক্ষার্থীদের মনোযোগে বিগ্ন ঘটে। পরীক্ষা কেন্দ্রের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মইনুর রহমান মনির বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করেন। উপজেলা সমাজসেবা অফিসারের পরামর্শে পরীক্ষার্থীকে পূনরায় তার উত্তরপত্র দিয়ে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ করে দেয়। রাহুল উত্তরপত্র ফিরে পাওয়ার পর নিজ আসনে বসে কেন্দ্র সচিবসহ শিক্ষকদের গালিগালাজ করতে থাকে। এর মধ্যেই উপজেলা নির্বাহী অফিসার খানজাদা শাহরিয়ার বিন মান্নান, কটিয়াদী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. আতাউর রহমান ও কটিয়াদী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ এস এম শাহাদাত হোসেন কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে রাহুলকে পরীক্ষা শেষ করার সুযোগ দিতে বলেন। এ সময় কেন্দ্রের নিরাপত্তা বিধানের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। অভিযুক্ত পরীক্ষার্থী রাহুলের পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর তার মা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, কটিয়াদী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জসহ অন্যান্যাদের উপস্থিতিতেই পরীক্ষার্থী রাহুল ইসলাম কেন্দ্র সচিব ও কক্ষ প্রত্যবেক্ষকগণকে হত্যার করবে বলে চিৎকার করে বলতে থাকে। এ সময় সে আত্নহত্যা করার হুমকি দেয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সকলের উপস্থিতিতে শিক্ষার্থী রাহুল ইসলামকে তার মায়ের হেফাজতে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেন।

ডা. আব্দুল মান্নান মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও কক্ষ প্রত্যবেক্ষক মাসুক ইবনে আজিজ জানান, পরীক্ষা চলাকালীন সময় শিক্ষার্থী রাহুল ইসলাম নিয়ম বহির্ভূত কাজ করার সময় তার উত্তরপত্র নিয়ে যাওয়ায় আমিসহ তিনজন প্রত্যবেক্ষককে প্রকাশ্যে প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। এমতাবস্থায় আমরা নিরাপত্রাহীনাত ভুগছি। আমি পরীক্ষার হলে আর কোন দায়িত্ব পালন করতে যাবনা।

ডা. আব্দুল মান্নান মহিলা কলেজে কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অধ্যক্ষ শামীমা সুলতানা জানান, এইচএসসি পরীক্ষার হিসাব বিজ্ঞান ২য় পত্র বিষয়ে পরীক্ষা চলাকালীন সময় পরীক্ষার নিয়ম শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে শিক্ষার্থী রাহুল ইসলামকে বাধা দিলে সে আমাকেসহ কক্ষে দায়িত্বে থাকা শিক্ষকগণকে হত্যার হুমকি দেয়। নিরাপত্তা চেয়ে কটিয়াদী মডেল থানা একটি সাধারণ ডায়রি করেছি।

কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার খানজাদা শাহরিয়ার বিন মান্নান জানান, সংবাদ পেয়ে কেন্দ্র পরিদর্শন করি। পরীক্ষার্থী রাহুল ইসলাম প্রত্যবেক্ষকদের সাথে নানা রকম অসদাচরণ করেছে। বিল্ডিংএর ছাদে উঠে আত্মহত্যারও চেষ্টা চালায় সে। তাকে নামিয়ে এনে পরীক্ষা শেষ করার সুযোগ দিয়ে পরীক্ষা শেষে তার মায়ের নিকট বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। পরবর্তী বিষয়ের পরীক্ষাতেও যদি আজকের মত আচরণ করে তবে তার বিরোদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তাকে দেখে অসুস্থ মনে হয়েছে, তার চিকিৎসা করানো প্রয়োজন।

যাযাদি/এসএস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে