শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১

লোহাগাড়ায় ভুয়া সনদে চাকুরী করার অভিযোগ!

লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
  ৩১ মার্চ ২০২৪, ১৭:২৬
লোহাগাড়ায় ভুয়া সনদে চাকুরী করার অভিযোগ!

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার পুটিবিলা গৌড়স্থান উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) জেসমিন আক্তার কম্পিউটার প্রশিক্ষন না নিয়েই বাজারের ভূয়া সনদে শিক্ষকতা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ব্যাপারে আহমদ রেজা চৌধুরী নামে এক লোক লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে অভিযোগ দায়ের করেন। গত ২৮ মার্চ তারিখে করা অভিযোগে উল্লেখ করা হয় ২০০৬ সালে গৌড়স্থান উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) হিসাবে নিয়োগ পেয়ে এমপিও ভুক্তির জন্য জেসমিন আক্তার এর কাগজপত্র মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে প্রেরণ করা হলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ পরিচালক (মাধ্যমিক) সিরাজুম মুনিরা স্বাক্ষরিত ( স্মারক নং ৪ জি/৩৩৫৬- ম/০৭/১২৩৮৬ তাং- ০৫/১১/২০০৮ইং) তারিখের এক নোটিশে তার(জেসমিন আক্তার) এর সনদ যথাযথ নয় তাই এমপিও ভুক্তির সুযোগ নাই বলে জানান।

কিন্তু বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজম খান দূর্নীতির আশ্রয় নিয়ে ৫ বছর পর ২০১০ সালে উক্ত জাল সনদেই জেসমিন আক্তার এমপিও ভুক্ত হয়ে অদ্যাবধি সরকারি বেতনভাতাদি উত্তোলন করিতেছে যা প্রকাশ্যে দূর্নীতির শামিল।

উক্ত জাল জালিয়াতির বিষয়টি অধঃস্তন অনেক কতৃপক্ষকে অবহিত করলেও উক্ত জেসমিন আকতারের স্বামী অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আজম খান প্রভাব বিস্তার করে তিনি বহাল তবিয়তে আছেন। অভিযোগে জাতীয় স্বার্থে বিষয়টি তদন্তপূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন বলে দাবী করা হয়।

এক শিক্ষক বলেন, জেসমিন আক্তার একজন ভুয়া সনদধারী শিক্ষক। তিনি ২০০৬ ইংরেজি সালে গৌড়স্থান উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) হিসাবে নিয়োগ পেয়ে দীর্ঘ ৫ বছর পর ২০১০ ইং সালে এমপিও ভুক্ত হন। ২০০৬ ইংরেজি সালে নিয়োগের পর অন্যান্য পদে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের সাথে জেসমিন আক্তার এর ফাইল এমপিও ভুক্তির জন্য চট্টগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে প্রেরণ করা হলে ভুয়া সনদের কারণে তাকে এমপিওভুক্ত করা হয়নি বেশ কয়েকবার ফাইল প্রেরণের পর তাকে এমপিও ভুক্ত না করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে গত ৫/১১/২০০৮ ইংরেজি তারিখে স্মারক নং- ৪জি/৩৩৫৬-ম/০৭/১২৩৮৬ এর মাধ্যমে সুত্র জেলা শিক্ষা অফিসার, চট্টগ্রাম- এর স্মারক নং-১১৮৭/০৮) উল্লেখ করে তারিখ-৩১/০৮/০৮ ইং উপ পরিচালক (মাধ্যমিক) সিরাজুল মনির স্বাক্ষরিত এক নোটিশ প্রেরণ করা হয়।

নোটিশে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয় জেসমিন আক্তার এর কম্পিউটার সনদ যথাযথ না থাকায় তাকে এমপিও ভুক্তি,র সুযোগ নেই। পরে দীর্ঘ ৫ বছর পর ২০১০ ইং সালে এমপিও ভুক্তি হন।

বিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানান এ ফাইল প্রেরণে জেলা শিক্ষা অফিসের সাবেক কর্মকর্তা মোটা অংকের উৎকোচ গ্রহণ করেন।

এদিকে অভিযোগ মতে এ অনৈতিক কাজে সহায়তা করে প্রধান শিক্ষক ও জেলা শিক্ষা অফিসের সাবেক কর্মকর্তা সরকারের বিশাল অংকের টাকা তছরুপ করেছেন ।

জানা যায় জেসমিন আক্তার নিয়োগ পান ১০ বেতন কোডে এবং টাইম স্কেল পেয়ে ৯ বেতন কোডে উন্নিত হন। সর্বসাকুল্যে তিনি ৩০/৪০ লক্ষ সরকারী টাকা অবৈধ গ্রহন করেন। যা প্রকাশ্য দূর্নীতির শামিল।

অভিযোগ বিষয়ে জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে কল করা হলে তিনি বিষয়টি তদন্তপূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।

এ ব্যাপারে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জানান, আমি লোহাগাড়ায় যোগদানের আগে জেসমিন আক্তারের নিয়োগ। কোন অভিযোগ পেলে তদন্ত স্বাপেক্ষে ব্যবস্থা নেব।

উক্ত বিষয়ে প্রধান শিক্ষক আজম খানকে কল করলে তিনি বলেন জেমিন আক্তার আমার স্ত্রী সে অবৈধভাবে নিয়োেগ পায়নি। বরং আমার সাথে একপি পক্ষ শত্রুতামূলক ভাবে এ কথা ছড়াচ্ছে। জেসমিন আক্তারের মোবাইল নং চাইলে তিনি কথা বলাই দেবেন বলে পরে কথা বলাই দেননি।

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে