বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১

শিশুদের চেঁচামেচি আর হৈ-হুল্লোড়ে মুখোড় ‘শরীয়তপুর পার্ক’

ভেদরগঞ্জ (শরীয়তপুর) প্রতিনিধি
  ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬:৪২
শিশুদের চেঁচামেচি আর হৈ-হুল্লোড়ে মুখোড় ‘শরীয়তপুর পার্ক’

শরীয়তপুর জেলা প্রশাসন কর্তৃক সম্প্রতি উদ্বোধন হওয়া ‘শরীয়তপুর পার্ক’ এখন শিশুদের চেঁচামেছি আর হৈ-হুল্লোড়ে মুখোড়। বিকেল থেকে রাতঅবদি অভিবাবকের হাত ধরে আনন্দে মাতে কোমলমতি শিশুরা। শিশুদের বায়না পূরণ করতে অনেক বাবা-মা’র বিকেল কাটে এ পার্কে। তাদের বাধ-ভাঙ্গা আনন্দে বাবা-মায়ের মনও যেন আনন্দে নেচে ওঠে। শিশুদের বিনোদনের এমন সুযোগ তৈরি করে প্রশংসায় ভাসছে জেলা প্রশাসন।

স্থানীয়রা জনায়, দীর্ঘদিনেও শরীয়তপুরে শহরে কোন বিনোদন কেন্দ্র গড়ে না ওঠায় সাধারণ মানুষের মাঝে একটি বিনোদন কেন্দ্রের প্রবল আকাঙ্খা তৈরি হয়েছিল। বর্তমান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন আহম্মেদ এ জেলায় পদায়িত হওয়ার পর বিষয়টি তার নজরে আসে। দ্রুত সময়ের মধ্যে শিশুদের বিনোদনের জন্য সরকারী বরাদ্ধ না থাকায় স্থানীয় অনুদানের উপর ভিত্তিকরে একটি পার্ক করার উদ্যোগ নেন তিনি। শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের উল্টোপাশে ১ একর জমির উপরে নির্মিত হয়েছে কোমলমতি শিশুদের বিনোদনের জন্য এই পার্ক। পার্কটির নাম দেয়া হয়েছে ‘শরীয়তপুর পার্ক।

এ পার্কটির সম্পূর্ণ কাজ এখনো শেষ হয়নি। তবে ঈদু-উল-ফিতর ও বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে বিনোদনের জন্য ঈদু-উল-ফিতর এর দিন থেকে পার্কটি খুলে দেয়া হয়েছে শিশুদের জন্য। প্রতিদিন বিকেল ৩ টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত আর সরকারী ছুটির দিনে সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে শরীয়তপুর পার্ক। প্রতিদিন দুর দুরান্ত থেকে শতশত শিশু বিনোদনের জন্য ভীড় করে পার্কটিতে। শিশুদের জন্য এমন উদ্যোগ নেয়ায় জেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানতেও ভুলেনা অভিবাবকরা।

পার্কে ঘুরতে ঘুরতে কথা হয় মধ্যবয়সি আল্পনা আক্তারের সাথে। তিনি তার ৫ বছরের ছেলে রোহান আর ৮ বছরের মেয়ে তানজিলাকে নিয়ে ঘুরতে এসেছে। ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুরে তার বাড়ি। ফেইজ বুকে দেখে ছেলে-মেয়ে বায়না ধরেছে শরীয়তপুর পার্কের। অবশেষে সন্তানদের চাওয়া পুরণ করতে এতো দুর থেকে এসেছেন তিনি।

ঘুরতে কেমন লেগেছে জানতে চাইলে তানজিলা জানায়, অনেক মজা করেছি। আমাদের বাড়ির কাছে হলে প্রতিদিন আসতাম। কিন্তু আমাদের বাড়ি অনেক দুরে। আমাদের বাড়ির কাছে- এমন একটা পার্ক থাকলে ভালো হত। তার ভাই ৫ বছর বয়সী রোহান ছুটাছুটি আর চেঁচামেচি করে যেন আত্মহারা। বেশ আনন্দ পাচ্ছিল ছেলেটি।

আল্পনা আক্তার বলেন, সন্তানদের আনন্দের জন্য তাদের বায়না পূরণ করতেই হয়। তাদের জন্যই আজ আসা। তাদের চেঁচামেচি আর হৈ-হুল্লোড় শুনতে ভালই লাগছে। এ আয়োজন করার জন্য ডিসি স্যারকে ধন্যবাদও জানান তিনি।

আংগারিয়া থেকে বেড়াতে আসা আবু সুফিয়ান বলেন, আমি দুই মেয়েকে নিয়ে এসেছি। এই শহরে বাচ্চাদের নিয়ে ঘুরার কোন জায়গা নেই। এ পার্কটি হওয়াতে অনেক ভালো হয়েছে। এখন ইচ্ছে করলে একটু বাচ্চদের নিয়ে ঘুরার সুযোগ পাবো।

বিনোদপুরের শিক্ষিকা রওশন আরা বলেন, ডিসি স্যার প্রসংশনীয় কাজ করেছে। এতো দিনেও একটি পার্ক তৈরি হয়নি এটা ছিল আমাদের জন্য লজ্জার। তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। তবে এখনো অনেক কাজ বাকি রয়েছে। এ স্যারের সময়েই সব কাজ শেষ করে পার্কটি পূর্ণতা পাবে এটা আমাদের বিশ্বাস।

পার্কে সার্বিক তত্ত্বাবধানে থাকা শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মাইনউদ্দিন বলেন, অতি অল্প সময়ে পার্কটি এ অবস্থায় পৌচেছে। আমরা দিনরাত পরিশ্রম করেছি যাতে এ ঈদে শিশুদের জন্য পার্ক টি খুলে দেয়া যায়। আমাদের পরিশ্রম সফল হয়েছে। যেভাবে শিশুরা ভিড় করছে, আমাদের কল্পনাকেও হার মানিয়েছে। এ জেলায় শিশুদের বিনোদনের কোন র্স্পট না থাকায় পুরো জেলার সব বয়সের মানুষের ঢল নেমেছে এ পার্কে। এখনো অনেক কাজ চলমান রয়েছে। আশা করি অল্প দিনের মধ্যে আরো অনেক সমৃদ্ধ হবে এ পার্ক।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে