বগুড়া শাজাহানপুরে জমি বিরোধের জের ধরে নুরুল ইসলাম বাবলু (৭০) নামে এক বৃদ্ধ এবং মিনি বেগম (৩৫) নামেেআরেক নারীকে বেধরক মারপিট করা হয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদেরকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) শাজাহানপুর থানা সুত্রে জানা যায়, রবিবার উপজেলার আমরুল ইউনিয়নের বড়নগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, ওই গ্রামের বৃদ্ধ নুরুল ইসলামের বাবা মৃত ইয়াকুব আলী প্রবীণ ও লেখাপড়া না জানায় দীর্ঘ প্রায় ৫৫ বছর ধরে তার ১২ শতক পৈত্রিক সম্পত্তি ভোগদখল করে আসছিল তার চাচাতো ভাই আবদুর রহিমের ছেলে জাফরুল, জয়নাল,সাইফুল ও সলেমান। যা বৃদ্ধ বয়সেও জানতোনা নুরুল ইসলাম বাবলু।
এমনিভাবে কেটে গেছে যুগের পর যুগ। দীর্ঘ যুগ পর গতবছর বৃদ্ধ নুরুল ইসলাম বাবলুর ছেলে মাকসুদ রানা বিটল (৪০) এবং তার ছেলে আরাফাত (১৭) লেখাপড়া করার কারনে দাদার আমল থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত তাদের প্রাপ্য জমির হিসাব করতে থাকে। এজন্য ভুমি অফিস থেকে প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র উঠায় এবং খারিজ করে।
সেই তথ্য অনুযায়ী তারা আরও ১২ শতক জমি পায়। জমির দাগ অনুযায়ি তারা দেখতে পায়, তাদের দাদার চাচাতো ভাইয়ের ছেলে জাফরুল, জয়নাল,সাইফুল ও সলেমান ওই জমি ভোগ দখল করে আসছে।
এ বিষয়টি তাদের জানালে ও জমি দাবী করলে তারা জমি ছেড়ে দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এক পর্যয়ে গ্রাম্য শালিস ও আমরুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বিমান উভয় পক্ষকে ডেকে জমির কাগজ দেখতে চায়। এসময় বৃদ্ধ নুরুল ইসলাম বাবলু ও ছেলে মাকসুদ রানা বিটল (৪০) কাগজপত্র উপস্থাপন করলেও প্রতিপক্ষরা তাদের কোন কাগজ দেখাতে না পারায় ওই জমি ছেড়ে দিতে আদেশ দিয়ে বিষয়টি মিমাংসা করে দেন। এতে তারা সেসময় রাজীও হয়। কিন্তু বাড়ী এসে দীর্ঘদিনের ভোগ-দখলকৃত সম্পত্তি ছেড়ে দিতে অস্বীকৃতি জানায়।
এরই ধারাবাহিকতায় বাধ্য হয়ে বৃদ্ধ নুরুল ইসলাম বাবলু, তার ছেলে ও পরিবারের লোকজন ওই জমিতে চাষাবাদ করতে গেলে জাফরুল, জয়নাল, সাইফুল ও সলেমান সহ প্রায় ১৫/২০ জন ধারালো দেশীয় অস্ত্র দিয়ে নুরুল ইসলামের মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন অংশে কোপ দেয়। এসময় তার ছেলের বউ মিনি বেগম (৩৫) তাকে উদ্ধার করতে আসলে তারও মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন অংশে কোপ দেয়। মায়ের চিৎকারে ছেলে আরাফাত (১০) এগিয়ে আসলে তাকেও আঘাত করে। মিনি বেগম জানান, তাদের শুধু আঘাতই করা হয়নি, জীবন নাশের হুমকিও দেয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান,লোকজন এগিয়ে আসলে প্রতিপক্ষরা চলে যায়। এবিষয়ে জাফরুলের নিকট ফোন দিলে তাকে পাওয়া যায়ননি। এ ঘটনা সম্পর্কে শাজাহানপুর থানার ওসি ওয়ামুম আলম জানান, অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
যাযাদি/ এম