বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে বর্ণিল আয়োজনের মাধ্যমে ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও শুভ নববর্ষ উদযাপনে জলকেলির (পানি ছিটানো) মাধ্যমে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মারমা সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব সাংগ্রাই শেষ হয়েছে।
সপ্তাহব্যাপী উদ্যাপিত সাংগ্রাই উৎসবে পুরোনো বছরকে বিদায় আর নতুন বছরকে স্বাগত জানানো হয়। এর পাশাপাশি বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী পিঠা তৈরি, ছোঁওয়াইং দান, বুদ্ধ প্রতিবিম্ব স্নান, ধর্ম দেশনা শ্রবণ অনুষ্ঠিত হয়।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ১০টায় বাংলা নতুন বছর ১৪৩২ উপলক্ষে বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা ও উপজাতি সম্প্রদায়ের সাংগ্রাই উৎসব উদ্বোধন ও মঙ্গল শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত জলকেলি সাংগ্রাই অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনও মুহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী।
এসময় উপস্থিত ছিলেন কৃষি কর্মকর্তা এনামুল হক, উপজেলা প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ, বান্দরবান জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক সাইফুদ্দিন বাহাদুর ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার আক্তার উদ্দিন, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্মকর্তা শাহা আজিজ, থানা’র অফিসার ইনচার্জ ওসি মাসরুরুল হক,উপজেলা প্রাণী সম্পদ (ভা:) কর্মকর্তা, ছৈয়দ নুর সহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বৃন্দ, সামাজিক সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিগণ, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষেও শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা।
জলকেলিতে মারমা তরুণ-তরুণীরা একে-অপরকে পানি ছিটিয়ে খেলা শুরু করেন। পাশাপাশি চলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কয়েক হাজার মারমা নারী-পুরুষ এই উৎসবে যোগ দেন। পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর বর্ষবরণ উৎসব ‘বৈসাবি উৎসব প্রতিবছর চৈত্র সংক্রান্তি ও বাংলা নববর্ষবরণ উপলক্ষে মারমাদের ‘সাংগ্রাই এবং চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যারা ‘বিজু নামে এই উৎসব পালন করে।
ইতি পূর্বে ১৪ এপ্রিল সকালে বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রার ও সাংগ্রাই উৎসবের সূচনা করা হয়। হিংসা-বিদ্বেষ না থেকে মৈত্রীময় জলধারায় পুরাতন বছরকে বিদায় এবং নতুন বছরকে বরণ করতে সাংগ্রাই করা হয়।
সাংগ্রাই উপলক্ষে উপজাতীয় পল্লি গুলাতে নানা ধরনের খেলাধুলাসহ পিঠা উৎসবের আয়োজন করে থাকে। পাশাপাশি বিহারে বসবাস করে ধর্ম পালন করে থাকে তারা।
আজ ১৯ শে এপ্রিল বর্ণাঢ্য আয়োজনের মাধ্যমে সাংগ্রাই জলকেলি উৎসব শেষ করেন বাইশারী ইউনিয়নের ধৈয়ার বাপের মার্মা পাড়ায় বৌদ্ধ বিহারের ভিক্ষুক উঃ দ্যাংমাছিলা। তিনি প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন।
জলকেলি আয়োজক কমিটির সদস্য রিসু মার্মার সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন উক্যমং মার্মা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আয়োজক কমিটির উপদেষ্টা মংয়াং মার্মা, সাধারণ সম্পাদক উশৈথোয়াই মার্মা।
যাযাদি/ এমএস