বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২

নারায়ণগঞ্জে শহিদ পরিবার ও আহতদের মাঝে অনুদান ও সঞ্চয়পত্র বিতরণ 

জাহাঙ্গীর আলম, বিশেষ প্রতিনিধি
  ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ২১:১৬
নারায়ণগঞ্জে শহিদ পরিবার ও আহতদের মাঝে অনুদান ও সঞ্চয়পত্র বিতরণ 
ছবি: যায়যায়দিন

জাতির ইতিহাসে এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়—জুলাই গণঅভ্যুত্থান। সেই বীরত্বগাঁথার উত্তরসূরিদের প্রতি সম্মান জানাতে ৩০-০৪-২০২৫ অর্থাৎ বুধবার নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় এক হৃদয়গ্রাহী অনুষ্ঠান।

এতে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে আহত ‘সি’ ক্যাটাগরির যোদ্ধাদের আর্থিক অনুদানের চেক এবং শহিদ পরিবারের সদস্যদের মাঝে সঞ্চয়পত্র বিতরণ করা হয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নারায়ণগঞ্জের সম্মানিত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা। উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, নারায়ণগঞ্জ জেলার সিভিল সার্জন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ছাত্র প্রতিনিধি, জুলাই আহত যোদ্ধা ও শহিদ পরিবারের সদস্যরা, গণমাধ্যমকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই এক মিনিট নিরবতা পালন করে শ্রদ্ধা জানানো হয় সেসব বীর সন্তানদের যাদের আত্মত্যাগে আজকের এই নতুন বাংলাদেশ।

অনুষ্ঠানে তিনজন শহিদ পরিবারের সদস্যদের প্রত্যেককে ১০ লক্ষ টাকা মূল্যমানের সঞ্চয়পত্র এবং ২১২ জন আহত যোদ্ধাকে এককালীন ১ লক্ষ টাকা করে অনুদানের চেক হস্তান্তর করা হয়।

অনুদান প্রাপ্ত শহিদ পরিবারের একজন সদস্য বলেন, “আমার পিতার আত্মত্যাগ আজ সরকারি স্বীকৃতি পেল। এই সম্মাননা আমাদের পরিবারের জন্য এক গর্বের মুহূর্ত।”

সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বীর সন্তানরা আমাদের জাতীয় ইতিহাসের এক গৌরবময় অধ্যায়। তাঁদের সাহসিকতা, আত্মত্যাগ ও অদম্য চেতনা আমাদের জাতি পুনর্গঠনের প্রেরণা। আমরা বিশ্বাস করি, এই যোদ্ধাদের বীরত্বগাথাই আমাদের নতুন প্রজন্মকে আলোকিত ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে।”

তিনি আরও বলেন, “নারায়ণগঞ্জের উন্নয়ন-অগ্রগতির যাত্রায় আমরা তরুণ সমাজ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, গণমাধ্যমকর্মী এবং সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রত্যাশা করি। সম্মিলিত প্রচেষ্টাই গড়ে তুলবে একটি সমৃদ্ধ, শান্তিপূর্ণ ও প্রগতিশীল নারায়ণগঞ্জ।”

অনুষ্ঠানটি শুধুমাত্র অনুদান বিতরণ নয়, বরং ছিল জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের এক অনন্য প্রয়াস। অনুষ্ঠানজুড়ে ছিল আবেগ, গর্ব এবং ভবিষ্যতের প্রতি প্রত্যয়।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সেই বীর সন্তানেরা আজো বেঁচে আছেন আমাদের চেতনায়, আমাদের সংগ্রামের প্রেরণায়। আর তাঁদের সম্মাননা যেন হয়ে উঠল ইতিহাসকে বুকে ধারণ করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার দৃঢ় অঙ্গীকার।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে