বারহাট্টা উপজেলা আওয়ামীলীগের অফিসের জমিটি জোরপূর্বক দখল করা হয়েছিল।ব্যাক্তি মালিকানার ওই জমিতেই গত ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে উপজেলা আওয়ামীলীগের অফিস পরিচালনা করা হচ্ছিল।
যেখানে জোরপূর্বক দখল করে অফিস করা হয়েছিল সেটি উপজেলার গোবিন্দপুর মৌজার বিআরএস ৬০ খতিয়ানের ৫৪৫ দাগে অবস্থিত।ক্রয়সূত্রে ওই দাগের ২০ শতাংশ জমির মালিক আব্দুল কাদির খান নামের এক ব্যাক্তি।গত ১৫ বছরে বহুবার প্রশাসনের কাছে নিজেদের জমি বুঝিয়ে দিতে অভিযোগ দিয়েও কোন সমাধান পাননি ভুক্তভোগীর ওয়ারিশানরা।উল্টো ক্ষমতাসীনদের কাছ থেকে জুটে হুমকি এমনটাই দাবী ওই ভুক্তভোগী পরিবারের।
ভুক্তভোগী আব্দুল কাদির খানের একমাত্র ছেলে মুহাম্মদ রুবেল আলম খান যায় যায় দিনকে জানান বারহাট্টা উপজেলা আওয়ামীলীগের দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম আমরা ২০১৯ সালে উপজেলা প্রশাসন বরাবর অভিযোগ করি।কিন্তুু তৎকালীন উপজেলা প্রশাসন বিষয়টির সুরাহা করেনি।কিন্তুুু আমরা আমাদের জমি ফিরে পাওয়ার বিষয়ে হাল ছাড়িনি।
পরবর্তীতে ২০২২ সালে খাস জমির অযুহাতে আমাদের আরো জমি দখলের পাঁয়তারা করে উপজেলা আওয়ামীলীগ ।তাই আমরা ২০১৯ সালের আবেদনের সূত্র ধরে আবার উপজেলা প্রশাসনকে স্ক্যাচম্যাপ সহ আমাদের পূর্বের বেদখল হওয়া ২০ শতাংশ জমি বুঝিয়ে দিতে বলি।তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মাজহারুল ইসলামের প্রশাসন স্ক্যাচম্যাপ করে খুঁটি দিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারটিকে ২০ শতাংশ জমি বুঝিয়ে দেয়।কিন্তুু প্রশাসনের বুঝিয়ে দেওয়ার কয়েকঘন্টার মধ্যেই খুঁটিগুলি অপসারণ করে ফেলে ক্ষমতাসীনরা।সাথে চলে হুমকি ও সীমাহীন হয়রানি।
তিনি আরও জানান আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তি।অথচ খাস জমির মিথ্যা অযুহাতে আমাদের ২০ শতাংশ জমি দীর্ঘ ১৫ বছর দখল করে রাখা হল।আমাদের ওয়ারিশানদের সীমাহীন হয়রানি করা হল।অথচ আমাদের বাবা ১৯৮২ সালের পরে আর কোন জমি কিনেননি।অর্থাৎ ৫৪৫ দাগের জমিটাও তিনি ১৯৮২ সালের আগেই কিনেছিলেন। ৮২ থেকে এত বছরের দখল এবং সকল কাগজপত্র থাকার পরও কি করে দখলদাররা জোরপূর্বক দখল রাখতে পারে।আর প্রশাসনও চোখ বন্ধ করে রাখে।
জোরপূর্বক দখল করে ব্যাক্তিমালিকানার জমিতে কেন হয়েছিল উপজেলা আওয়ামীলীগের অফিস এই বিষয়টি জানতে বারহাট্টা উপজেলা আওয়ামীলীগের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তুু ফোন বন্ধ থাকায় এই বিষয়ে তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
বারহাট্টা উপজেলার বর্তমান ইউএনও মোঃ খবিরুল আহসান জানান ব্যাক্তি মালিকানার জমি খাস বলে দখলে রাখার কোন সুযোগ নেই। এমন ভুক্তভোগী আরো থেকে থাকলে প্রশাসনকে অবগত করলে দ্রুত ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
উল্ল্যেখ্য, সর্বশেষ ২৪ এর গণঅভ্যুথানে ৫ আগস্ট স্বৈরাচারী শাসনের অবসান হলে বিক্ষুদ্ধ জনতা জোরপূর্বক দখলকৃত বারহাট্টা উপজেলা আওয়ামিলীগের অফিস আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়।স্বৈরাচারী শাসনের অবসান হলে নিজেদের বেদখলকৃত জমি বুঝে ফেলেও এখনও গত ১৫ বছরের অত্যাচারের কথা মনে হলে ভয়ে আঁতকে উঠছে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।