টেকনাফে এক চাঞ্চল্যকর ও নিন্দনীয় ঘটনার জন্ম দিয়েছে কথিত এক বিএনপি নেতার নেতৃত্বে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত হয়েছে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের একটি মানববন্ধন।
সম্প্রতি সীমান্ত এলাকা হিসেবে পরিচিত ও বহু আগে থেকেই মাদকপাচার ও সন্ত্রাসের অভয়ারণ্য হিসেবে আলোচিত-সমালোচিত কক্সবাজারের টেকনাফে সাংবাদিকদের সাহসী অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের ফলেই কিছু চিহ্নিত ইয়াবা কারবারি ও চোরা কারবারিদের নাম প্রকাশ্যে আসে।
মাদক কারবারিদের বাধা হয়ে দাঁড়ায় সাংবাদিকদের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন।
তাদের স্বার্থ রক্ষায় এবং সাংবাদিকের কণ্ঠরোধ করতে কথিত বিএনপি নেতা ওসমান গনি ও ছাত্রদলনেতা ইবরাহীম, যারা দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় রাজনীতির ছত্রছায়ায় অপরাধীদের রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে আসছেন, তাদের নেতৃত্বেই ইয়াবা কারবারীদের এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী হিসেবে দেখা যায় খারাংখালীর কুখ্যাত ইয়াবা ব্যবসায়ী আবু তালেব, যার বিরুদ্ধে মাদকের বড় চালান পাচারের অভিযোগ এসেছে। রয়েছে একাধিক মামলাও ।
একইভাবে মিনাবাজারের চিহ্নিত মাদক কারবারি মান্নান, যিনি মূলত রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে ইয়াবা পাচারের নিরাপদ রুট পরিচালনা করেন বলেও অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, তাকেও মানববন্ধনের সম্মুখ সারিতে দেখা যায়।
আরও উপস্থিত ছিলেন কয়েকজন কথিত ‘ব্যবসায়ী’ ও ‘সামাজিক ব্যক্তিত্ব’, যাদের প্রকৃত পরিচয় ইয়াবা ও চোরাচালান সিন্ডিকেটের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে স্থানীয় জনগণ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দীর্ঘদিন ধরেই চিহ্নিত করে আসছে।
এই মানববন্ধনের সবচেয়ে ভয়াবহ দিক হলো, এটি ছিল একটি সুপরিকল্পিত ও সংগঠিত প্রচেষ্টা—একজন অনুসন্ধানী সাংবাদিককে হয়রানি করার জন্য।
সাংবাদিকতা এমন একটি পেশা, যেখানে সত্য প্রকাশ করাটাই প্রধান দায়িত্ব। বিশেষ করে সীমান্ত এলাকা টেকনাফে যেখানে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার ইয়াবা ব্যবসা চলে, যেখানে স্থানীয় কিছু রাজনীতিক, প্রশাসনিক ব্যক্তিত্ব ও প্রভাবশালী মাদক ব্যবসায়ী একটি অশুভ চক্র গঠন করে এলাকায় নৈরাজ্য ও ভয়াবহ সামাজিক ক্ষতি সাধন করছে, সেখানে নির্ভীক সাংবাদিকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সম্প্রতি সাহসী ও অনুসন্ধানী সাংবাদিক দৈনিক যুগান্তর এর ভ্রাম্রমান প্রতিনিধি ইয়াবা কারবারি সিন্ডিকেটের নাম-ঠিকানাসহ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। ওই প্রতিবেদনে মাদক কারবারি মান্নানসহ টেকনাফের কিছু প্রভাবশালী চোরাকারবারি ও তাদের রাজনৈতিক মদদ দাতাদের কার্যক্রমের বিস্তারিত চিত্র উঠে আসে, যা জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন তোলে এবং প্রশাসনিক মহলেও চাপে পড়ে তারা।
এদিকে টেকনাফ উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পরিচয়দানকারী ওসমান বলেন, ইয়াবা ব্যবসায়ীরা মিছিলে ছিল, কিন্তু ওরা মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছে। সাংবাদিক আবুল কাসেমের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আছে, তাই এলাকাবাসী মানববন্ধন করেছে।