বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ভাঙ্গুড়ায় ভিডব্লিউবি কার্ডের চাল বিতরণে অর্থ আদায়ের অভিযোগ

ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধি
  ২১ মে ২০২৫, ১৭:১৭
ভাঙ্গুড়ায় ভিডব্লিউবি কার্ডের চাল বিতরণে অর্থ আদায়ের অভিযোগ
ছবি: সংগৃহীত

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা ও অসহায় নারীদের জন্য বরাদ্দকৃত ভিডব্লিউবি কার্ডের চাল বিতরণে অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার দিলপাশার ইউপি'র দু'জন সদস্যদের নামে এ অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও দিলপাশার ইউপি'র প্রশাসক নাজমুন নাহারের কাছে দেন সুবিধাভোগিরা।

হতদরিদ্রদের অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার (১৯ মে) সকাল ১১টায় বেতুয়ান দক্ষিণপাড়া বাজার চত্বরে ইউপি'র ৭ ও ৮ নাম্বার ওয়ার্ডের ৯১জন হতদরিদ্রকে চলতি মাসের ভিডব্লিউবি'র বিনামূল্যের ৩০ কেজি চাল বিতরণ করা হয়।

1

হতদরিদ্ররা অভিযোগ করে জানান, প্রত্যেক কার্ড ধারীর কাছ থেকে ইউপি সদস্য আরজু খান ও আক্কাস আলী ২০০ থেকে ৩০০ টাকা করে আদায় করেছেন।

উপজেলার দিলপাশার ইউপি'র বেতুয়ান গ্রামের আবু সামার স্ত্রী মোছা. সাবিনা খাতুন (কার্ড নং-১), রকিবুল বারীর স্ত্রী জুলেখা খাতুন (কার্ড নং-২৮)সহ ওয়ার্ড দু'টির অর্ধশতাধিক হতদরিদ্র কার্ডধারী অভিযোগ করে বলেন, ৭ ও ৮নং ওয়ার্ড মেম্বার আরজু খান ও আক্কাস আলী চাল বিতরণের দিন সোমবার সকালে এলাকার মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেন, প্রত্যেক কার্ডধারীকে ৩০০ টাকা করে বাধ্যতামূলক জমা দিয়ে চালের বস্তা নিতে হবে।

ভুক্তভোগীরা আরও জানান, ‘আমরা দরিদ্র মানুষ, সরকার আমাদের বিনা পয়সায় চাল দিছে। কিন্তু দু'জন মেম্বার ৩০০টাকা করে না দিলে চাল দিতে রাজি হচ্ছে না। ফলে আমরা বাধ্য হয়েই ধার-দেনা করে ২০০ থেকে ৩০০শ' টাকা জমা দিয়ে চালের বস্তা নিয়েছি।’

অবৈধভাবে হতদরিদ্র মানুষের কাছ থেকে টাকা উত্তোলনকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ফোনে বিষয়টি ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুন নাহার জানতে পারেন। তার জরুরী নির্দেশনায় ইউপি সচিব ঘটনা স্থলে গিয়ে উত্তোলিত টাকার মধ্য ১০০ টাকা করে ফেরত দেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য আরজু খান ও আক্কাস আলী উভয়ই বলেন, ‘কিছু কার্ডধারী স্বেচ্ছায় ২০০-৩০০ টাকা করে চাল উত্তোলন খরচ হিসাবে জমা দিয়েছিল। বিষয়টি ইউএনও'র নজরে গেলে ইউপি সচিবের উপস্থিতিতে আমরা পরিবহন খরচ বাবদ কিছু টাকা রেখে প্রত্যেকে ১০০ টাকা করে ফেরত দিয়েছি।’

দিলপাশার ইউপি'র সচিব শামীম আহমেদ এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশনায় সুবিধাভোগিদের কাছ থেকে দু'জন ইউপি সদস্যের অবৈধভাবে উত্তোলিত টাকার ১০০ টাকা করে ফেরত দিয়েছেন।

উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার ও চাল বিতরণ ট্যাগ অফিসার মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, এ অভিযোগের বিষয়টি তিনি কিছুই জানেন না।

ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও দিলপাশার ইউপি'র প্রশাসক নাজমুন নাহার বলেন, ভূক্তভোগীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে অবৈধভাবে উত্তোলিত টাকা দিলপাশার ইউপি সচিবের মাধ্যমে তাদের ফেরতের ব্যবস্থা এবং তদন্তের আলোকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে