বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার পাঠানপাড়া পাড়াবাইশা বিলে সরকার কর্তৃক লিজপ্রাপ্ত জলমহলে প্রবাহমান পানি আটকে রাখতে চারপাশে উঁচু পাড় নির্মাণ করায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে আশপাশের কৃষিজমিতে চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় কৃষকরা।
জানা গেছে, ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী গত ২ এপ্রিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বরাবরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ২৭.৪০ একরের ওই জলমহলের চারদিকে অবৈধভাবে উঁচু পাড় নির্মাণ করে বর্ষার পানি আটকে রাখা হচ্ছে। এতে স্বাভাবিক পানি প্রবাহ ব্যাহত হয়ে কৃষিজমিতে পানি জমে থাকছে।
অভিযোগে আরও বলা হয়, বর্তমান ইজাদার অর্জুন চন্দ্র প্রামাণিক ও তার সহযোগীরা জলমহলের প্রবেশপথ বন্ধ করে ব্যক্তিগত লাভের উদ্দেশ্যে মাছ চাষ করছেন। এছাড়া, জলমহলের আংশিক মালিকানা দেয়ার আশ্বাস দিয়ে তারা স্থানীয়দের কাছ থেকে ৮২ হাজার টাকার বেশি অর্থ নিয়েছেন বলেও দাবি করা হয়েছে।
অভিযোগপত্রে আরও কয়েকজন স্থানীয় দালালের নামও উল্লেখ করা হয়—যারা দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণার মাধ্যমে এলাকাবাসীকে হয়রানি করে আসছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন ধিরেন সরকার, ইয়াছিন মোল্লা, মিন্টু বক্স, মেনাজুল, মিতু, হাছান, সৈয়দ জাফিরুল ইসলাম ও হান্নান আকন্দ।
জলমহলটি নিয়ে অতীতে একাধিক মামলা চলমান রয়েছে। অভিযোগকারীদের দাবি অনুযায়ী, জলমহলের মালিকানা সংক্রান্ত ৭০/১৪ নম্বর মামলাটি বর্তমানে দ্বিতীয় যুগ্ম জেলা জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, একই জলমহল নিয়ে ২০১৬ সালে সংঘটিত একটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের হওয়া জিআর ১/১৬ মামলায় ৩৭ জন আসামি রয়েছেন এবং নিহত লিটন মিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকেও এখনো বিচার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।
মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি ও জলমহলের ইজাদার অর্জুন চন্দ্র প্রামাণিকের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্বীকৃতি প্রামাণিক বলেন, "জলমহলটি ডিসি অফিস থেকে ইজারা নেওয়া হয়েছে। অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি তদন্তের জন্য আমার কাছে এসেছে। এটি বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে।"
এলাকাবাসীর দাবি, জলমহলে স্বাভাবিক পানি প্রবাহ নিশ্চিত করে কৃষকদের দুর্ভোগ লাঘব করতে অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক এবং যারা অবৈধভাবে বাঁধ নির্মাণ ও প্রতারণামূলক লেনদেনে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।