বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ফুলবাড়ীতে বৈরী আবহাওয়ায় ডুবছে কৃষকের স্বপ্ন

ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে পাকা ধান
ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
  ২৬ মে ২০২৫, ১৬:৩৪
ফুলবাড়ীতে বৈরী আবহাওয়ায় ডুবছে কৃষকের স্বপ্ন
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে বৈরী আবহাওয়ায় সড়কে ধান শুকাচ্ছেন কৃষক-কিষাণী: ছবি যায়যায়দিন

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে টানা খরার পর শুরু হয়েছে ঝোড়ো বাতাসসহ টানা বৃষ্টি। এতে শেষ মুহূর্তে ফসল ঘরে তোলা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন কৃষক।

টানা বৃষ্টিপাতের কারনে ক্ষেতেই ঝরে যাচ্ছে পাকা ধান। ঝড়বৃষ্টি শুরুর আগেই কিছু কৃষক ফসল কেটে বাড়ি আনলেও সেগুলো মাড়াই ও শুকানোর কাজ করতে পারছেন না। পানিতে ভেজা থাকছে মাটি। এ জন্য ধান শুকাতে এলাকার সড়কগুলো ব্যবহার করছেন তারা।

1

কৃষকরা বলছেন, ভেজা ও নরম মাটিতে ধান শুকাতে দিলেই আরও ভিজে যাচ্ছে। বৃষ্টি হলে বারবার তুলে রাখতে হয়। ক্ষেতের অধিকাংশ ধান পেকে গেছে। কাটতে না পারায় ঝড়-বাতাসে শীষ থেকে ঝরে যাচ্ছে। আবার কেটে বাড়ি আনলেও মাড়াই, পরিষ্কার ও শুকাতে না পারায় ধান থেকে চারা গজিয়ে যাচ্ছে।

ধানচাষি সাইফুল ইসলাম জুয়েল, আরমান আলী ভবেশ চন্দ্র ও হাবিবুর রহমানসহ বিভিন্ন এলাকার একাধিক কৃষক একই কথা বলেছেন।

তাদের ভাষ্য, অন্যবারের তুলনায় এবার ধানের ফলন ভালো হয়েছে। উৎপাদন খরচ বাদে লাভের আশা করছেন তারা। বাজারে আশানুরূপ দাম পেলে ঋণ পরিশোধ করে পরিবার নিয়ে ঈদ উদযাপন করতে পারবেন।

বৈরী আবহাওয়ার কারণে এ আশা পূরণ নিয়ে সংশয়ে আছেন জানিয়ে কৃষকরা বলছেন, টানা বৃষ্টিপাতের কারনে যে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, এতে নির্বিঘ্নে ফসল ঘরে তোলা নিয়ে চিন্তায় আছেন। এ কারনে বাজারে ধানের দামও কমে গেছে। প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে সাড়ে ৮৫০ টাকা। অথচ কয়েকদিন আগেও বিক্রি হয়েছে এক হাজার থেকে ১২শ’ টাকায়।

উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্যানুযায়ী, উপজেলায় এবারে ১৪ হাজার ১৮৬ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। চাষ হয়েছে লক্ষমাত্রার অধিক জমিতে। ফলন ভালো হয়েছে। আবাদকৃত জমির ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯৫ হাজার ৭৬০ মেট্রিক টন ধান।

দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. তোফাজ্জল হোসেন বলেন, সোমবার (২৬ মে) সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত ১১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) কৃষিবিদ মো. শাহানুর রহমান বলেন, সাধারণ বৃষ্টিতে তেমন ক্ষতির আশঙ্কা নেই। শিলাবৃষ্টি হলেই সমস্যা। ৮০ শতাংশ পেকে গেলেই ধান কাটার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে কৃষকদের। এ পর্যন্ত এলাকার ৯০ ভাগ ক্ষেতের ধান কাটা শেষ হয়ে গেছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে