সারাদেশ

মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার কদমবাড়িতে চলমান গণেশ পাগলের মেলায় (কুম্ভমেলা) জুয়াড়িদের সাথে হাতাহাতির ঘটনায় বুলেট হারানো কনস্টেবলসহ দুই পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) রাতে প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মাদারীপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম।

প্রত্যাহারকৃত দুই পুলিশ সদস্য হলেন- মাদারীপুর জেলা পুলিশ লাইন্সের কনস্টেবল মেহেদী হাসান ও জুবায়ের হাসান।

পুলিশ, স্থানীয় ও বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বুধবার (২৮ মে) রাত ১০ টা পর্যন্ত মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ি ইউনিয়নের দীঘিরপাড় এলাকায় মহামানব গনেশ পাগল সেবাশ্রমের আয়োজিত ঐতিহ্যবাহী কুম্ভমেলায় ডিউটি করেন পুলিশ কনস্টেবল মেহেদী হাসান।

পরে বৃহস্পতিবার (২৯ মে) ভোররাত ৪ টার দিকে সিভিল পোশাকে মেলার মাঠের জুয়ার আসরে যান মেহেদী ও জুবায়ের।

এসময় জুয়ারিদের সাথে তাদের বাকবিতন্ডা ও হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে মেহেদীর সাথে থাকা সরকারি শর্টগানের ৩০ রাউন্ড বুলেট নিয়ে পালিয়ে যায় জুয়াড়িরা।

এ খবর পাওয়ার পরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে উদ্ধার অভিযানে নামেন পুলিশ ফোর্স সহ উর্ধতন কর্মকর্তারা। পরবর্তীতে বৃহস্পতিবার (২৯ মে) রাতে দুই পুলিশ সদস্য মেহেদী ও জুবায়েরকে প্রত্যাহার করা হয়।

এ ব্যাপারে পুলিশের কনস্টেবল মেহেদী হাসানের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি ঢাকা পোস্টকে জানান, তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

তিনি বর্তমানে মাদারীপুর পুলিশ লাইন্সে আছেন। তার কাছ থেকে ৩০ রাউন্ড বুলেট ছিনতাইয়ের বিষয়টা সিনিয়ররা দেখছেন। সিনিয়ররা কাজ করছেন বলে জানান তিনি।

তবে ওই ঘটনার সময় তার সাথে কতজন ছিলেন জানতে চাইলে কনস্টেবল মেহেদী কলটি কেটে দেন।

এ বিষয়ে প্রত্যাহারকৃত আরেক পুলিশ সদস্য জুবায়ের হাসানের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অবস) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বৃহস্পতিবার (২৯ মে) ভোরের ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। জুয়া ও গাজা সেবনের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে পুলিশ।

উল্লেখ্য, বুধবার (২৮ মে) সকাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার কদমবাড়িতে শুরু হয় প্রায় দেড়শ বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী কুম্ভমেলা বা গণেশ পাগলের মেলা যা স্থানীয়ভাবে কামনার মেলা নামেও পরিচিত।

আগামী শনিবার (৩১ মে) পর্যন্ত ৪ দিন ব্যাপী এ মেলা চলবে। মহামানব শ্রী শ্রী গণেশ পাগলের স্মরণে আয়োজিত এই ধর্মীয় উৎসবে দেশ ও বিদেশের নানা প্রান্ত থেকে ভক্তরা আসেন। এ মেলাকে কেন্দ্র করে সহস্রাধিক ছোট বড় বিভিন্ন দোকান বসেছে। প্রতি বছর ১৫ লক্ষ লোকের সমাগম ঘটে এ মেলায় বলে জানিয়েছেন আয়োজক কমিটি।

এর আগে মঙ্গলবার (২৭ মে) রাত থেকেই দলে দলে জয় ডংকা ও নানা রকমের বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে জয় হরিবল ও জয়বাবা গণেশ পাগল ধ্বণি করতে করতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সাধু সন্যাসী ও ভক্তবৃন্দরা বাসে, ট্রাকে, ট্রলারে ও পদব্রজে মেলা প্রাঙ্গণে আসতে শুরু করেন।