শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

ছুটি শেষে প্রাণবন্ত ক্যাম্পাস

মালেক সরদার
  ১৬ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

শীতের ছুটি শেষে আবারও ক্যাম্পাসে ফিরতে শুরু করেছেন শিক্ষাথীর্রা। গল্প, গানে আর আড্ডায় মুখরিত হয়েছে ওঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটা চত্বর। প্যারিস রোড, আমতলা, টুকিটাকি চত্বর, ইবলিশ চত্বর, শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্বরসহ ক্যাম্পাসের সবখানেই যেন ফিরে পেয়েছে প্রাণের ছেঁায়া। কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পাশে আগের মতো শুরু হয়েছে বিভিন্ন বিভাগের ছাত্রছাত্রীদের গ্রæপ স্টাডি। সন্ধ্যায় রোকেয়া হলের সামনে বটতলায় পাওয়া যাচ্ছে কালাইরুটি, ভাপা ও চিতই পিঠা। ক্যাম্পাসের প্রিয় নীল সাদা বাস ছুটছে শিক্ষাথীের্দর নিয়ে। শুরু হয়েছে ক্লাস পরীক্ষাসহ একাডেমিক সব কাযর্ক্রম।

বিভিন্ন সময় ক্যাম্পাস ছুটি হলেও এবারের শীতের ছুটিটা ছিল কিছুটা ব্যতিক্রম। অন্যান্য ছোটখাট ছুটির সময় অনেকেই টিউশনি, কোচিংসহ নানা কারণেই বাড়ি যান না। কিন্তু এবারের ছুটি কিছুটা আলাদা ছিল বলা যায়। কারণ, শীতের ছুটির মধ্যেই অনুষ্ঠিত হয়েছে একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চন। তাই সবাই অন্যরকম এক আগ্রহ নিয়েই গিয়েছিলেন বাড়ির পানে। তা ছাড়া অনেকে আবার নতুন ভোটার। এ জন্য প্রথম ভোট দেয়ার জন্য তারা উন্মুখ হয়ে ছিলেন। ক্যাম্পাসে ফিরে চায়ের কাপে চুমুকের সঙ্গে চলছে ছুটির দিনের গল্পগুলো।

দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রতিবছর হাজারো ছাত্রছাত্রী এসে ভতির্ হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। শুরু হয় লালিত স্বপ্ন পূরণের উদ্দেশ্যে অবিরাম ছুটে চলা। ক্লাস, পরীক্ষা, টিউটোরিয়াল, প্রেজেন্টেশন সবকিছু মিলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় জীবন। তবে এখানেও মাঝে মাঝে এসে যায় ক্লান্তি। মনটা ছুটে যেতে চায় চেনা শেকড়ের কাছে। বাবা-মা আর প্রিয় মুখগুলো দেখার জন্য উৎসুক হয়ে থাকেন সবাই। তাই ছুটির সময় হলেই সবার মধ্যে বাড়ি যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়। যাদের বাড়ি তুলনামূলক একটু দূরে তারা তো অনেক সময় ?ছুটি শুরুর দু-একদিন আগেই চলে যান । গ্রামের সবুজ মেঠো পথ যেন হাতছানি দিয়ে ডাকে। বাড়ি গেলেই মায়ের হাতের নানা রকম প্রিয় খাবার তালিকা আরও কত কি। কিন্তু দেখতে দেখতে চোখের নিমিষেই যেন শেষ হয়ে যায় ছুটির দিনগুলো। ছুটির মধ্যে কাটানো স্মৃতিময় মুহূতর্গুলো সঙ্গে নিয়ে আবারও ফিরতে হয় সেই চিরচেনা ক্যাম্পাসে।

এবারের ছুটির সময় কেমন কেটেছে জানতে চাইলে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষাথীর্ লুবনা খান বষার্ বলেন, ছুটি হলেই গ্রামে ছুটে যাই । যদিও বেশ কিছু কারণে এবারের ছুটিতে গ্রামের বাড়ি যাওয়া হয়নি। তবুও অনেক চমৎকার সময় কেটেছে ছোট ভাই আর পরিবারের সবার সঙ্গে। তবে সবার গ্রামে যেতে দেখে মন খারাপ হয়েছে। অপেক্ষায় আছি, পরের ছুটিতে দাদু বাড়ি যাব।

বাংলা বিভাগের শিক্ষাথীর্ ইমরান খান বললেন, আবার একটু ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, ক্যাম্পাস ছেড়ে বাড়িতে গিয়ে থাকতে আমার খুব একটা ভালো লাগে না। বন্ধু-বান্ধব, আর প্রিয় ক্যাম্পাসকে ছেড়ে থাকতে কেমন যেন একটা শূন্যতা অনুভব করি। তাইতো সবার পরে বাড়ি গিয়েও সবার আগেই চলে এসেছি। অনেকদিন পর বন্ধু-বান্ধবদের পেয়ে কি যে ভালো লাগছে তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।

শীতের ছুটি কেমন কাটলো সে ব্যাপারে কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষাথীর্ নাহিদ হাসান রাজু জানান, আবার একটু অন্যরকমভাবে। তিনি বলেন, ক্যাম্পাসে প্রতিদিনিই একটা নিদিষ্ট রুটিনের মধ্যে সময় কাটে। ক্লাস, ল্যাব ইত্যাদিতে সবসময় ডুবে থাকতে হয়। তাই এবার বাড়িতে গিয়ে প্রতিদিন গ্রামের মাঠে খেলাধুলা করেছি। কিছু দিনের জন্য মনে হয়েছিল আমি আবার যেন আমার শৈশবে ফিরে পেয়েছি।

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের চতুথর্ বষের্র শিক্ষাথীর্ আরাফাত শাহীন বলেন, এবারের ছুটি কিছুটা অন্যরকম ছিল আমার কাছে। বাড়িতে গিয়ে অনেক জায়গায় ঘুরে বেড়িয়েছি। সঙ্গে বই নিয়ে গিয়েছিলাম, তাই বই পড়েও অনেকটা সময় কেটেছে। মায়ের হাতের তৈরি অনেক রকম পিঠাপুলি খেয়েছি। তবে ফিরে আসার সময় কিছুটা মন খারাপ হয়েছিল। মা বলছিলেন আরও কয়েকটা দিন থাকার কথা। কিন্তু ছুটি শেষ, ক্যাম্পাসে তো ফিরে আসতেই হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<32284 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1