পটুয়াখালীর দশমিনায় জেজেডি ফ্রেন্ডস ফোরামের উদ্যোগে ’৭০-এর ১২ নভেম্বর প্রলয়ঙ্করী ঘূণির্ঝড়ে প্রয়াত উপক‚লবাসীর স্মরণে উপক‚ল দিবস পালন করা হয়েছে। গত ১২ নভেম্বর সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় উপজেলা পরিষদের সামনে এ উপলক্ষে শোভাযাত্রা ও বেলা ১২টায় আলোচনা সভা ও দুপুর ১টায় উপজেলা নিবার্হী অফিসারের কাছে স্মারকলিপি প্রদানের মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করা হয়।
সিএফটিএমএর সভাপতি পিএম রায়হান বাদলের সভাপতিত্বে ও দৈনিক যায়যায়দিনের দশমিনা সংবাদদাতা মো. মামুন তানভীরের পরিচালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ডা. সামচুন্নাহান খঁান ডলি। বিশেষ অতিথি ছিলেন সিএফটিএম সহসভাপতি হাবিবুর রহমান ঢালী, অন্বেষার নিবার্হী পরিচালক মজিবুর রহমান টিটু, সাংবাদিক সাফায়েত হোসেন ও মো. বাদল রহমান প্রমুখ।
আলোচনা সভায় বক্তারা ’৭০-এর ১২ নভেম্বর প্রলয়ঙ্করী ঘূণির্ঝড় সম্পকের্ বলেন, ভয়াল ১২ নভেম্বর পটুয়াখালীর দশমিনাসহ উপক‚লবাসীর বিভীষিকাময় দুঃস্বপ্নের দিন। ৪৮ বছর পেরিয়ে গেলেও আজও থামেনি স্বজন হারা মানুষের কান্না। ১৯৭০ সালের এই দিনে বিচ্ছিন্ন এলাকা লÐভÐ হয়ে ধ্বংস লীলায় পরিণত হয়। মুহ‚তের্র মধ্যেই প্রলয়ঙ্করী ঘূণির্ঝড় ও জলোচ্ছ¡াস ক্ষতবিক্ষত করে দেয় স্থানীয় জনপথ। মৃত্যুপুরীর হাত থেকে রক্ষা পেতে দৌড়াদৌড়ি ছুটাছুটির আপ্রাণ চেষ্টা করেও শেষ পযর্ন্ত ব্যথর্ হন তারা। হারিয়ে যায় লক্ষ্যাধিক প্রাণ। নিখেঁাজ হয় হাজার হাজার মানুষ। উপক‚লীয় দশমিনাসহ দুগর্ম এলাকায় হতদরিদ্রদের একমাত্র আয়ের উৎস গবাদি পশুগুলো ভাসিয়ে নিয়ে যায়। বেড়িবঁাধ, জলাভূমি, জঙ্গলসহ বিভিন্ন প্রান্তে স্বজন হারা মানুষগুলো তাদের প্রিয়জনের লাশ খুঁজে পায়নি। জলোচ্ছ¡াসের পর থেকে দেড়মাস পযর্ন্ত স্বজন হারানোদের কান্নায় উপক‚লের আকাশ পাতাল ভারি ছিল। গত ৪০ বছরের সব কয়টি ঘূণির্ঝড়ের চেয়ে ’৭০-এর ঝড়টি সব চাইতে হিংস্র ছিল বলে দাবি করছেন প্রত্যক্ষ দশীর্রা। ’৭০-এ’র হারিকেনরূপী জলোচ্ছ¡াসের সময় ঝড়টি উপক‚লীয় পটুয়াখালী ১৮টি জেলায় আঘাত হানে। তৎকালীন তথ্যপ্রযুক্তি অনেকটা দুবর্ল থাকায় উপক‚লে অনেক মানুষই ঝড়ের পূবার্ভাস পায়নি। এ সময় জলোচ্ছ¡াস হয়েছিল ৮/১০ ফুট উচ্চতায়। কেউ গাছের ডালে, কেউ উঁচু ছাদে আশ্রয় নিয়ে কোনোমতে প্রাণে রক্ষা পেলেও ৩/৪ দিন তাদের অভুক্ত কাটাতে হয়েছে। ১২ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের সামুদ্রিক জলোচ্ছ¡াসটি অলৌকিকভাবে ভাসিয়ে নিয়ে যায় হাজার হাজার মানুষের প্রাণ। পানিতে ভেসে যাচ্ছে অগণিত মানুষের লাশ। বিভিন্ন গাছের মাথায় ঝুলতে দেখা গেছে মানুষ ও পশুর মৃতদেহ। চারিদিকে শুধু লাশ আর লাশ। যেন লাশের মিছিল হয়েছিল ’৭০-এর জলোচ্ছ¡াসে। গোটা পটুয়াখালী জেলাকে তছনছ করে দিয়েছে। যেন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছিল এ জেলার জনপদ। বক্তরা ১২ নভেম্বরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে উপক‚ল দিবস হিসেবে ঘোষণা দেয়ার দাবি জানান।
উপদেষ্টা
জেজেডি ফ্রেন্ডস ফোরাম
দশমিনা,পটুয়াখালী