শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
যৌন নিপীড়ন

কলকাতা হাইকোটের্র নানা উদ্যোগ

নতুনধারা
  ৩০ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

সাম্প্রতিক সময়ে স্কুলগামী মেয়ে শিক্ষাথীের্দর নিগ্রহের বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে কলকাতার বিভিন্ন স্কুলে। এরই প্রেক্ষিতে শিশুদের ওপর যৌন নিগ্রহ রুখতে নতুন নিদেির্শকার প্রয়োজন আছে বলে মনে করছে কলকাতা হাইকোটর্। নিদেির্শকা তৈরির জন্য কমিটি গড়ে দিয়েছে আদালত।

গত কয়েক মাসে কলকাতার একাধিক স্কুলে শিশুদের ওপর যৌন নিগ্রহের ঘটনা সামনে এসেছে। কখনো শিক্ষক, কখনো অশিক্ষক কমীর্র বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। ক্ষিপ্ত অভিভাবকরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন স্কুলে। স্কুল কতৃর্পক্ষ থেকে পুলিশ প্রশাসন, এদের কাজকমের্ অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ। তাদের বক্তব্য, স্কুলে শিশুদের ওপর নিগ্রহের অভিযোগের সুরাহা হয়নি, ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা না ঘটে সে ব্যাপারেও কতৃর্পক্ষ আন্তরিক নন। তাই অভিভাবকরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কলকাতা হাইকোটের্র বিচারপতি নাদিরা পাথেরিয়া অক্টোবর মাসের গোড়ায় নতুন কমিটি গঠনের নিদের্শ দিয়েছেন। কলকাতার আটটি প্রথম সারির স্কুলের প্রতিনিধিদের ওই কমিটিতে রাখার কথা বলা হয়।

রাজ্য সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে কমিটির সদস্য স্কুলশিক্ষা দপ্তরের প্রধান সচিব। আইন বিশারদ থেকে ইউনিসেফের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে এই কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত আদালতের গুরুত্বপূণর্ পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে। এই কমিটি নিজেদের মধ্যে আলোচনা চালাচ্ছে।

সদস্যরা এই আলোচনার ভিত্তিতে তৈরি করবেন একটি নিদেির্শকা, যার লক্ষ্য হবে স্কুলে শিশুদের যৌন হেনস্থায় লাগাম টানা। ১২ নভেম্বর এই নিদেির্শকা আদালতে জমা দিতে হবে কমিটিকে। নিদেির্শকায় বলতে হবে, শিশুদের যৌন নিগ্রহ কীভাবে রোখা সম্ভব। কী হতে পারে পথ ও পদ্ধতি। ওই তারিখেই হবে অভিভাবকদের দায়ের করা মামলার পরের শুনানি। নিদেির্শকা খতিয়ে দেখে পরবতীর্ নিদের্শ দেবে কলকাতা হাইকোটর্।

এদিকে শিশু নিগ্রহের ঘটনা প্রচারে মিডিয়ার প্রতি আদালত নতুন নিদেির্শকা জারি করেছে। এরকম ঘটনা প্রচারে ভারতীয় মিডিয়ার প্রতি নতুন নিদেির্শকা অনুমোদন করেছে দিল্লির উচ্চ আদালত। একটি জনস্বাথর্ মামলার ভিত্তিতে গঠিত বিশেষ কমিটির নিদেির্শকায় বলা হয়, নিগৃহীত শিশুর পরিচয় মিডিয়াকে গোপন রাখতে হবে।

শিশু নিগ্রহের ঘটনাকে কেন্দ্র করে যেসব ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়, এবং সংশ্লিষ্ট সেই শিশুর পরিচয় মিডিয়ায় যেভাবে তুলে ধরা হয়, তাতে আদালত যারপরনাই ক্ষুব্ধ। সমাজে শিশুরা হামেশাই শোষণ, যৌন নিগ্রহ, পাচার, জীবনের নিরাপত্তা, মানসিক পীড়ন এবং সংগঠিত অপরাধের শিকার হয়ে থাকে। সেটা সামাজিক ও মানসিক দিক থেকে আরও মারাত্মক হয়ে ওঠে যখন তা সবিস্তারে তুলে ধরা হয় মিডিয়ায়।

সম্প্রতি জনৈক আইনজীবীর দায়ের করা জনস্বাথর্ মামলার প্রেক্ষিতে দিল্লি হাইকোটর্ এক বিশেষ কমিটি গঠনের নিদের্শ দেয়। কমিটিতে ছিলেন জুভেনাইল জাস্টিস বোডর্, জাতীয় শিশু সুরক্ষা অধিকার কমিশন, এনজিও, মিডিয়া ও ভারতের প্রেস কাউন্সিলের প্রতিনিধিরা। তাদের সুপারিশ করা নিদেির্শকায় বলা হয়, শিশুর পরিচয়, অথার্ৎ নামধাম, ঠিকানা, ছবি, স্কুলের নাম বা মা-বাবার পরিচয় ইত্যাদি যেন মিডিয়ায় তুলে ধরা না হয়। খবর হিসেবে প্রচার করার সময় যেন যথেষ্ট সাবধানতা অবলম্বন করা হয়। কারণ, এই সব শোষণের ঘটনা প্রচার করলে তাদের সামাজিক লজ্জা, মানসিক চাপ এবং আবেগ দারুণভাবে আহত হয়। মিডিয়ার উচিত শিশুসংক্রান্ত খবরাখবর প্রচার এবং মত প্রকাশ ও জানার অধিকারের মধ্যে একটা ভারসাম্য রাখা।

কলকাতার অধিকারকমীর্রা বলছেন, পরিচয় প্রকাশ করলে নিগৃহীত শিশু বৈষম্যের শিকার হয়। তার স্কুলে যাওয়ার অসুবিধা হয়, তাকে সমাজে রাখা মুশকিল হয়ে পড়ে। এমনকি তার বাবা-মাকেও নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। এর জন্যই আদালত মনে করছে যে, কোথাও একটা নৈতিক বিধি লঙ্ঘিত হচ্ছে। মিডিয়া নিশ্চয় খবর করবে, কিন্তু তাদেরও একটা নীতি থাকা উচিত, কতটা বলব, কতটা বলব না।

ডয়েচে ভেলে অবলম্বনে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<19977 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1