শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
আন্তর্জাতিক আইন

যুদ্ধবন্দিকে ফিরিয়ে নেয়ার বিধান ও পদ্ধতি

নতুনধারা
  ০৫ মার্চ ২০১৯, ০০:০০

জেনেভা কনভেনশনের অনুচ্ছেদ ১১৮-তে বলা আছে- যুদ্ধবিরতি হওয়ার পর কোনো রকম দেরি না করেই যুদ্ধবন্দিদের মুক্তি এবং স্বদেশে প্রত্যাবাসন বা ফেরত পাঠাতে হবে। কিন্তু এভাবে ফেরত পাঠানোর মতো পরিবেশ যদি না থাকে বা দুই পক্ষ কোনো যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছতে না পারে, তাহলে যুদ্ধরত প্রতিটি পক্ষ কোনো রকম দেরি না করে উপরের নীতির আলোকে যুদ্ধবন্দিদের ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে নিজস্ব একটি পরিকল্পনা তৈরি করে তা বাস্তবায়ন করবে। যে পদ্ধতি গ্রহণ করা হবে, তা যুদ্ধবন্দিকে জানাতে হবে।

যে দেশ যুদ্ধবন্দিকে ফেরত পাঠাচ্ছে এবং তিনি যে দেশের নাগরিক, উভয় দেশ সমান হারে যুদ্ধবন্দিদের ফেরত পাঠানোর সব খরচ বহন করবে। সে সব ক্ষেত্রে দুটি নীতি অনুসরণ করা হবে: ১. যুদ্ধরত দুটি দেশ যদি একই সীমান্ত ব্যবহার করে, তাহলে তাকে আটক করার পর থেকেই যাবতীয় খরচের সমান অংশ দেবে ওই বন্দির দেশ। ২. যদি উভয়পক্ষের মধ্যে এক সীমান্ত না হয়, তাহলে আটককারী দেশটি ওই বন্দিকে নিজের খরচে তাদের নিয়ন্ত্রিত ভূখন্ডে নিয়ে আসবে, যেখান থেকে ওই বন্দির দেশ যতটা সম্ভব কাছাকাছি হবে। যুদ্ধবন্দিদের ফেরত পাঠানোর বাকি খরচ দুই পক্ষ সমানভাবে বহন করতে সম্মত হবে। তবে যুদ্ধবন্দিদের ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রতা তৈরির কোনো কারণই গ্রহণযোগ্য হবে না।

অনুচ্ছেদ ১১৯ -এ বলা আছে, প্রত্যাবাসন বিষয়ে অনুচ্ছেদ ৪৬ থেকে ৪৮ পর্যন্ত যে সব শর্ত রয়েছে তার অনুরূপ হবে। যুদ্ধবন্দিদের কারও বিরুদ্ধে ফৌজদারি কোনো অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ থাকলে তার প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত তাকে বন্দি অবস্থায় থাকতে হবে। কেউ দোষী বলে প্রমাণিত হয়ে থাকলে তার ক্ষেত্রেও একই বিষয় প্রযোজ্য হবে।

বিচারকার্য শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিংবা শাস্তির মেয়াদ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দুই পক্ষ বন্দির পক্ষে একে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখবে। দুই পক্ষের সমঝোতার ভিত্তিতে কমিশন প্রতিষ্ঠা করা হবে বিচ্ছিন্ন বন্দিদের খুঁজতে এবং তাদের অবিলম্বে প্রত্যাবাসনের উদ্দেশ্যে। আর্টিকেল ৪৯-এ বলা হয়, আহত কিংবা অসুস্থ বন্দিদের ক্ষেত্রে যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা ভ্রমণের জন্য সুস্থতা অর্জন না করছেন ততক্ষণ তাদের হস্তান্তর করা যাবে না। প্রত্যাবাসনের বিষয়ে হস্তান্তরের শর্তাবলি প্রযোজ্য হবে এবং এ সম্পর্কে বলা হয়েছে অনুচ্ছেদ ৪৬-এ।

যখন আটককারী শক্তি যুদ্ধবন্দিকে ট্রান্সফারের সিদ্ধান্ত নেবেন, তখন বন্দিদের বক্তব্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেবেন যাতে তাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া আরও জটিল না হয়। হস্তান্তর প্রক্রিয়া সবসময় মানবিকভাবে সম্পন্ন করতে হবে এবং যে শর্তের অধীনে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে তা যেন আটককারী কর্তৃপক্ষের দেয়া শর্তের চেয়ে কম অনুকূল না হয়।

হস্তান্তরের সময় বন্দির জন্য পর্যাপ্ত খাবার এবং পানিসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহ করতে হবে যাতে সুস্থতা বজায় থাকে। এ ছাড়া সমুদ্র কিংবা আকাশপথে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে আটককারী শক্তিকে সকর্তামূলক পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<39453 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1