বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচনের মাসে অনুমোদন পেল আরেকটি ব্যাংক

যাযাদি রিপোটর্
  ১২ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০
আপডেট  : ১২ ডিসেম্বর ২০১৮, ১০:৪৯
নির্বাচনের মাসে অনুমোদন পেল আরেকটি ব্যাংক

অনিচ্ছা সত্তে¡ও বিভিন্ন মহলের লবিং ও সরকারের চাপে এ নিবার্চনী মাসে রাজনৈতিক বিবেচনায় বেঙ্গল কমাশির্য়াল ব্যাংককে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। মঙ্গলবার রাতে গভনর্র ফজলে কবিরের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পষের্দর সভায় ব্যাংকটির কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে সন্তুষ্ট হয়ে নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিবার্হী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম। পষের্দ তিনটি ব্যাংকের আবেদনের বিষয়ে এজেন্ডা থাকলেও বাকি দুইটি ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডার পবিবতর্ন ও কর-সংক্রান্ত জটিলতার কারণে ফিরিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই দুই ব্যাংক হলোÑপিপলস ব্যাংক ও সিটিজেন ব্যাংক। ‘বেঙ্গল কমাশির্য়াল ব্যাংক লিমিটেডের’ প্রধান উদ্যোক্তা হলেন বেঙ্গল গ্রæপের ভাইস চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন। যদিও শুরুতে ‘বাংলা ব্যাংক’ নামেই অনুমোদনের আবেদন জমা দেয়া হয়েছিল। দেশে তাদের প্লাস্টিক শিল্পসহ বিভিন্ন ব্যবসা রয়েছে। তিনি আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের ভাই। দ্য সিটিজেন ব্যাংকের মালিক হলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের মা জাহানারা হক। সিটিজেন ব্যাংকের প্রস্তাবে কিছু ঘাটতি রয়েছে। সেগুলা ঠিকঠাক করে উপস্থাপন করতে নিদের্শনা দেয়া হয় আগের বোডর্সভায়। মঙ্গলবারের সভায় নীতিগত অনুমোদন মেলেনি এই ব্যাংকের। পিপলস ব্যাংকের উদ্যোক্তা চট্টগ্রামের স›দ্বীপের বাসিন্দা যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতা এম এ কাশেম। কেন্দীয় ব্যাংক বলছে, প্রবাসী কাশেমের বিদেশে কী পরিমাণ সম্পত্তি রয়েছে তা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সেটি বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠালে তা পষের্দ উপস্থাপন করা হবে। পষর্দ সেটি বিবেচনা করে ব্যাংক স্থাপনের আগ্রহপত্র দেবে। এর আগে গত অক্টোবরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সবের্শষ বোডর্ সভায় চূড়ান্ত অনুমোদন পায় পুলিশ সদস্যদের মালিকানায় ‘কমিউনিটি ব্যাংক অব বাংলাদেশ’। ওই সভায় এজেন্ডাভুক্ত এই তিন ব্যাংকের কিছু কাগজপত্রে ত্রæটি থাকায় অনুমোদনের জন্য শতর্ জুড়ে দেয়া হয়েছিল। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভনর্র ফজলে কবির পরিচালনা পষের্দর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। পষের্দর অন্য সদস্যরা হলেন জাতীয় রাজস্ব বোডের্র (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, আথির্ক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, অথর্ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভনর্র এস এম মনিরুজ্জামান, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) গবেষণা পরিচালক ড. রুশিদান ইসলাম রহমান, ইসলাম আফতাব কামরুল অ্যান্ড কোং চাটার্ডর্ অ্যাকাউন্ট্যান্টসের এ কে এম আফতাব উল ইসলাম এফসিএ এবং বাংলাদেশ অথর্নীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. জামালউদ্দিন আহমেদ। গত ২৫ নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের পূবির্নধাির্রত বোডর্সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও একজন পষর্দ সদস্য দেশের বাইরে থাকায় তা স্থগিত হয়। ওই সভায়ও এই তিনটি ব্যাংকের অনুমোদনের বিষয়টি এজেন্ডাভুক্ত ছিল। এ দিকে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রথম মেয়াদে নয়টি ব্যাংকের লাইসেন্স দেয়া হয়। সেগুলোর বেশির ভাগই খারাপ অবস্থার মধ্যে আছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নিবার্চন। নিবার্চন সামনে রেখে উদ্যোক্তারা সরকারের ওপর এ বিষয়ে এক ধরনের চাপ তৈরি করেন। কারণ নিবার্চনের আগে অনুমোদন না পেলে পরবতীের্ত হয়তো বিষয়টি ফাইলবন্দি হয়ে যাবে। তাই উদ্যোক্তাদের লবিংয়ে ও সরকারের চাপে বাংলাদেশ ব্যাংক এ ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়। এর আগে ব্যাংকগুলোকে লাইসেন্স দেয়ার জন্য অথর্মন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত নিজেও কয়েকবার বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে চিঠি লেখেন। অথর্মন্ত্রী সবের্শষ গত ২৫ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের তাগিদ দেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে