রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

কাঁচা মরিচ চাষে বেড মালচিং পেপার ব্যবহার

আব্দুস সালাম আরিফ, পটুয়াখালী
  ০২ আগস্ট ২০২৩, ০৯:৫১

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় কাঁচা মরিচ আবাদে বেড মালচিং পেপার পদ্ধতি দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। স্থানীয় কৃষকরা বর্ষা মওসুমে এ পদ্ধতি ব্যবহার করে অধিক ফলন পাচ্ছেন। পাশাপাশি খরচও কম হচ্ছে। কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, এ পদ্ধতি ছড়িয়ে দিতে পারলে উৎপাদন আরও বাড়ানো সম্ভব।

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জের ইউনিয়নের কুমিরামারা গ্রামের আদর্শ কৃষক জাকির হোসেন। জাকির স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে একজন আদর্শ কৃষক হিসেবে পরিচিত। নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘এক শতক জমিতে যে কাঁচা মরিচ হয়েছে তা থেকে অনায়াসে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা বিক্রি করা যাচ্ছে। আর এবার আমি মোট ২০ শতাংশ জমিতে কাঁচা মরিচ আবাদ করেছি। এখন প্রতিকেজি মরিচ ১৮০ টাকা বিক্রি করছি। কাঁচা মরিচ হলো এখন কৃষকের মানিব্যাগ। কাঁচা মরিচ নয় এটা বলতে পারেন কাঁচা টাকা।’

শুধু জাকির নয়, এই এলাকার অনেক কৃষকই এবার আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করে কাঁচা মরিচ আবাদ করেছেন। আর বর্ষা মওসুমে কাঁচা মরিচ আবাদে তারা ব্যবহার করেছেন মালচিং পেপার। এর ফলে অধিক বর্ষাতেও গাছের গোড়ায় পানি জমছে না কিংবা অধিক তাপে গাছের গোড়ার মাটি শুকিয়ে যায় না। ফলে মরিচের ফলন যেমন ভালো হয়েছে তেমনি খরচও অনেক কম বলে জানান স্থানীয় কৃষকরা।

কুমিরমারা গ্রামের কৃষক সুলতান গাজী বলেন, ‘মালচিং পেপার ব্যবহার করে কাঁচা মরিচ চাষ করলে বেশ কিছু উপকার পাওয়া যায়। প্রথমত একবার সার দিয়ে গাছ লাগালে পরবর্তীতে আর কোনো সার প্রয়োগের প্রয়োজন হয় না, এ ছাড়া মালচিং পেপারের কারণে বিভিন্ন পোকা মাকড়ের আক্রমণও কম হয়। আর গাছের গোড়ায় ছাড়া পুরো বেড মালচিং পেপার দিয়ে ঢেকে দেওয়ায় কোনো ধরনের আগাছা জন্মাতে পারে না। ফলে আগাছা দমনে বাড়তি খরচ করতে হয় না। এতে করে উৎপাদন বাড়ছে। এ বছর ভালো দাম পাওয়ায় সকল কৃষক লাভবান হয়েছে। আর দিন দিন এই পদ্বতিতে কাঁচা মরিচ আবাদের পরিমাণ বাড়ছে।

এবার এই এলাকায় শতাধিক কৃষক কাঁচা মরিচের আবাদ করেছে আর প্রতিদিনই তারা পটুয়াখালী কুয়াকাটা মহাসড়কের পাশে গড়ে ওঠা পাখিমাড়ায় অস্থায়ী সবজির আড়তে কাঁচা মরিচসহ অন্যান্য সবজি বিক্রি করছেন।

পটুয়াখালী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, নীলগঞ্জের কৃষকরা সবজি উৎপাদনে অনেকটা সমৃদ্ধ। তারা জমিতে সারি সারি বেড তৈরি করে বেডের উপর মালচিং পেপার ব্যবহার করে সেখানে মরিচ আবাদ করে ভালো ফলন পাচ্ছেন। এই পদ্ধতি পুরোজেলার কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারলে কাঁচা মরিচ উৎপাদন আরও বাড়ানো সম্ভব হবে। আর বর্তমানে নীলগঞ্জে যে কাঁচা মরিচ উৎপাদন হচ্ছে তা জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হচ্ছে। আধুনিক কৃষি ও চাষাবাদে কৃষি বিভাগ সবসময়ে কৃষকদের পাশে রয়েছে।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে