শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মেহেরপুরে বাড়ির ছাদে শাপলা ও পদ্ম ফুলের রাজ্য

মজনুর রহমান আকাশ, গাংনী
  ০৮ জুন ২০২৩, ১০:১৮

একটু বাতাসেই দুলে উঠছে বিভিন্ন প্রজাতির শাপলা ও পদ্ম ফুলগুলো। পাশেই সুগন্ধ ছড়াচ্ছে কাঠ গোলাপ, গাঁদা, বেলি, গন্ধরাজসহ অনেক ধরনের বাহারি ফুল। বাড়ির ছাদ ও উঠানের পানির ফুলের এক অপূর্ব মিতালি গড়ে তুলেছেন মেহেরপুরের সীমান্তবর্তী শোলমারী গ্রামের তরুণ উদ্যোক্তা সাইফুজ্জামান রিজন। শখের বসে করেছিলেন ছাদ বাগান। মাত্র ২৫০ টাকায় পদ্ম ফুলের একটি চারা কিনে পরীক্ষামূলক লাগিয়েছিলেন টবে। সেখান থেকেই শুরু দুই বছরের ব্যবধানে আর তার বাগানে বর্তমানে রয়েছে পাঁচ লক্ষ টাকার শাপলা ও পদ্ম ফুলের চারা। সাইফুজ্জামান রিজনকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষি বিভাগ।

দেখা গেছে, গোলাপ, গাঁদা, বেলির সঙ্গে ছাদের চৌবাচ্চায় ছোট পুকুর বানিয়ে শাপলা-পদ্ম ফুটিয়ে তিনি বাড়ির পুরো ছাদটাকে ফুলের রাজ্য করে গড়ে তুলেছেন সাইফুজ্জামান রিজন। ছাদে শোভা পাচ্ছে পদ্ম ও শাপলাসহ বাহারি ফুল। ইতোমধ্যেই রিজন আলাদা একটি পরিচিতি পেয়েছেন। প্রতিদিন তার বাড়ির ছাদে চৌবাচ্চায় ফোটা শাপলা ও পদ্ম ফুল দেখতে ভিড় করছেন উৎসুক মানুষ। এদের মধ্যে কেউ কেউ আসছেন ছাদ বাগান করার পরামর্শ নিতেও। ছাদ বাগানে ও বাড়ির উঠানে রয়েছে ৩০ প্রজাতির শাপলা ও ৫০ প্রজাতির পদ্ম ফুল। এ গুলো সকলেরই নজর কেড়েছে। শখের বসে গড়ে তোলা ছাদ বাগানে এখন তার বাগানে রয়েছে পাঁচ লক্ষ টাকার শাপলা ও পদ্ম ফুলের চারা।

সাইফুজ্জামান রিজন জানান, ছোট বেলা থেকেই নানা প্রজাতির ফুলের প্রতি ছিল দুর্বলতা। আর সেই দুর্বলতা থেকেই কিছু একটা করার প্রত্যাশা নিয়ে ফুলেরবাগান করার চেষ্টা। একটি ফুলের নার্সারিতে অনেকটা জায়গা লাগে কিন্তু শহরে জায়গা স্বল্পতা। তাই বাড়ির ছাদটাকে বেছে নিয়ে শুরু করা হয় ফুল চাষ। মাত্র ২৫০ টাকা নিয়ে টব ও চারা সংগ্রহ করা হয়। প্রথমে অনেকেই নিরুৎসাহিত করলেও এখন আশা যোগাচ্ছেন তারা। শখের বশে এর শুরুটা হলেও এখন বাণিজ্যিকভাবে রুপ নিয়েছে। ইতোমধ্যে অনেকেই শাপলা ও বাহারী পদ্মফুল কেনার জন্য যোগাযোগ করছেন।

ফুল দেখতে আসা মুজিবনগর দারিয়াপুরের আলমগীর জানান, অনেকের মুখেই এ বাড়ির ছাদে ফুলের চাষের কথা শুনে দেখতে এসেছেন। তিনি ফুল চাষের পরামর্শ নিচ্ছেন এবং এখান থেকে চারা সংগ্রহ করবেন বলেও জানান তিনি। বারাদি বাজারের বাসিন্দা ও মেহেরপুর সরকারী কলেজের ছাত্রি সুমাইয়া জানান, পড়ালেখার পাশাপাশি ফুল চাষ করবেন তাই পরামর্শ নিতে এসেছেন। ইতোমধ্যে ফুলের টব যোগাড় করেছেন এবং প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। এখান থেকে চারা নিয়ে রোপণ করবেন বলেও জানান তিনি।

মেহেরপুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানান, শাপলা ও পদ্ম আমাদের দেশে জলজ উদ্ভিদ। যা প্রকৃতি থেকেই জন্মায়। পদ্মের শালক ও শাপলার বীজ আমাদের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হতো। তাছাড়া সামাজিক অনুষ্ঠানে পদ্মপাতা ব্যবহারের প্রচলন ছিল।

ছাদে ও বাড়ির উঠানে তবে শাপলা ও পদ্মফুল চাষ করে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন রিজন নামের এক তরুণ উদ্যোক্তা। কৃষি বিভাগ তার দেখানো এই উদ্যোগেকে স্বাগত জানাই। সেই সাথে রিজন সফলতা পেলে এ বিষয়ে তরুণ উদ্যোক্তা তৈরিতে কাজ করবে জেলার কৃষি বিভাগ।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে