রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

দিনাজপুরে চালের দাম কমেছে কেজিপ্রতি ২ থেকে ৩ টাকা

দিনাজপুর প্রতিনিধ
  ২০ জানুয়ারি ২০২৪, ১৭:২৩

দিনাজপুরে খাদ্য বিভাগের বিশেষ অভিযানে দুই দিনের ব্যবধানে চালের দাম প্রকারভেদে কেজি প্রতি কমেছে দুই থেকে তিন টাকা পর্যন্ত। গত বারো দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজিতে ৭-৮ টাকা পর্যন্ত বাড়লেও সে তুলনায় দাম তেমন একটা কমেনি। হঠাৎ চালের দাম বাড়ায় গত বৃহস্পতিবার থেকে দেশব্যাপী মজুদ বিরোধী অভিযানের পাশাপাশি দিনাজপুরেও অভিযানে নেমেছিল জেলা খাদ্য বিভাগ। তাঁর সুফল পাওয়া গেছে আজ শনিবার চালের বাজারে।

তবে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। উভয়েই বলছেন যে পরিমান দাম বেড়েছিল কমেছে তার অর্ধেকের কম। একইসাথে বস্তা প্রতি ধানের দামও কমেছে ২৫০-৪৫০টাকা পর্যন্ত। শহরের সবচেয়ে বড় চালের বাজার বাহাদুর বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি তথাকথিত মিনিকেট চাল বিক্রি হয়েছে ৬৮ টাকায়।

যা আজ বিক্রি হচ্ছে ৬৭ টাকায়। তবে ২৮ ও ২৯ ধানের মিশ্রনে এই মিনিকেট চালের উৎপাদন। যা দিনাজপুর জেলায় বোচাগঞ্জ উপজেলায় একটি মাত্র মিল এটি করে থাকে। এবং এই চারের বাজার উক্ত মিলার ইচ্ছে মতো দাম নিয়ে থাকে। হিসেবে অনুযায়ী মিনিকেট চালের বাজার বেড়েছিল দশ টাকা। অভিযানের পরে সেই চালের দাম কমেছে মাত্র এক টাকা।

এভাবে ব্রি-২৮জাতের চাল প্রতিকেজি ৫৩টাকা থেকে ৫টাকা বেড়ে ৫৮ টাকা হলেও সর্বশেষ আজ শনিবার বিক্রি হয়েছে ৫৫ টাকায়, ব্রি-২৯ চাল প্রতিকেজি ৪৮টাকা থেকে ৫ টাকা বেড়ে ৫৩ টাকা হলেও শনিবার বিক্রি হয়েছে ৫১টাকায়, সুমন স্বর্ণ প্রতিকেজি ৪৭টাকা থেকে ৩টাকা বেড়ে ৫০টাকা হলেও শনিবার বিক্রি হয়েছে ৪৮টাকায়।

তবে এক্ষেত্রে গুটি স্বর্না চালের বাজার ব্যক্তিক্রম। এ চাল ৪৫ টাকা থেকে ২টাকা বেড়ে ৪৭ টাকা হলেও বর্তমানে প্রতিকেজি ৪৪ টাকা ৪০ পয়সা দরে। অর্থাৎ পূর্বের দামের চেয়ে ৬০ পয়সা কমেছে।

বাজারে চাল কিনতে আসা ক্রেতাদের সঙ্গে এই প্রতিবেদকের কথা হয়, তাদেরকে বললে ক্রেতারা জানান, ‘শুনলাম চালের দাম কমছে। কোথায় কমছে। ৫০টাকার কেজির চাল ৪৮ টাকা হয়েছে এটাকে কি দাম কম বলে?’

চালের দাম বাড়া কমার বিষয়ে বাহাদুর বাজারের ব্যাবসায়ীরা বলেন, চালের দাম বাড়া শুরু করেছে নির্বাচনের পরের দিন থেকে। ২৯শ টাকা বস্তার মিনিকেট হয়ে গেলো ৩৩শ টাকা। অভিযানে নামার পর ৪০০টাকা থেকে বস্তাপ্রতি ১০০টাকা কমল।

ব্যাবসায়ীরা বলেন, কিছু কুচক্রী মিল মালিক ধাপেধাপে চালের দাম বাড়িছে।, এক্ষেত্রে মিলারদেরকেই আইনের আওতায় আনা উচিত বলে মনে করেন চাল ব্যাবসায়ীরা। তবে এ ব্যাপারে মিল মালিকরা বলেন, ‘মিল পর্যায়ে চালের দাম বাড়ে কেজিতে ৫০ পয়সা। পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা সেটাকে বাড়িয়ে নিয়ে যান ৩-৪ টাকায়। পাশাপাশি কিছু মজুতদার তৈরী হয়েছে। বিভিন্ন অটো মিলে ডায়ার করে চাল মজুত করেন। পরে দাম বাড়ার সুযোগের অপেক্ষায় থাকেন।

অথচ সব দোষ হয় মিলারদের।’ চালের দাম কমার বিষয়ে বাংলাদেশ অটো, মেজর ও হাস্কি মিল অনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি সহিদুর রহমান পাটোয়ারি মোহন বলেন, ‘স্টক ব্যবসার নামে নিবন্ধনবিহীন একশ্রেনীর মজুতদার যারা চাল কিনে মজুত করেছেন এবং আরও স্টক করতে চাচ্ছেন এ ধরনের অভিযানের কারনে তারা স্থবির হয়েছেন। ফলে চালের বাজার কমতে শুরু করেছে।

এছাড়াও খুচরা ব্যবসায়ীদের অতি মুনাফার প্রবণতার কারনে দাম বেড়েছিল। তবে কয়েকদিনের মধ্যে চালের বাজার কেজিতে ৩-৪টাকা কমে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে ধান চালের বাজার নিয়ন্ত্রনে রাখতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে জেলা খাদ্য বিভাগ। নিবন্ধনের শর্ত উপেক্ষা করে দীর্ঘ সময় অতিরিক্ত ধান মজুদ করায় গত বৃহস্পতিবার দিনাজপুরের বিরল উপজেলায় এক হাস্কিং মিল মালিকের গুদামঘর সিলগালা করা হয়েছে।

একইসাথে ওই মিল মালিকের বিরুদ্ধে থানায় নিয়মিত মামলা দায়ের করাসহ খাদ্য বিভাগের নিবন্ধন বাতিলেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা খাদ্য বিভাগ। জেলা খাদ্য কর্মকর্তা কামাল হোসেন বলেন, কৃষি বিভাগের হিসেব অনুযায়ী জেলায় প্রায় দশ লাখ মেট্রিক উৎপাদন হয়েছে। খাদ্য ঘাটতির কোন সম্ভাবনা নেই। সেখানে ধান-চালের দাম বাড়ছে মুলত এক শ্রেনীর মজুত ব্যবসায়ীর কারনে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রেখেছি। একদিনের অভিযানে দাম কিছুটা কমেছে। আমদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আগামীতে আরও দাম কমবে বলে আশা রাখছেন তিনি।

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে