বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে ১০০ পণ্যে আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারের উদ্যোগ বাংলাদেশের

অর্থ-বাণিজ্য রিপোর্ট
  ২১ মে ২০২৫, ১৩:৪৫
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে ১০০ পণ্যে আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারের উদ্যোগ বাংলাদেশের
ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্কহার নিয়ে চলমান আলোচনার প্রেক্ষিতে বাণিজ্য সহজ করার লক্ষ্যে প্রায় ১০০টি পণ্যে আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারের কথা বিবেচনা করছে সরকার।প্রস্তাবিত তালিকায় যেসব পণ্য রয়েছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো– বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ, তৈরি পোশাক শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামাল, ম্যান মেড ফাইবার, উল, বর্জ্যপানি শোধনাগার (ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট), ডায়ালাইসিস ফিল্টার, অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র এবং কিছু নির্দিষ্ট ধরনের অস্ত্র। এসব পণ্যে বর্তমানে সর্বোচ্চ ৩৭ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপিত রয়েছে।

1

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট ঘোষণার আগে প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

এনবিআরের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশে না করার শর্তে বলেন, 'আমরা ১৬১টি ট্যারিফ লাইন (পণ্য) শনাক্ত করেছি, যেগুলো যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি হতে পারে। এর মধ্যে ১০০টি পণ্যের ওপর থেকে আমদানি শুল্ক পুরোপুরি তুলে নেওয়া হতে পারে।' ওই কর্মকর্তা আরও জানান, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) নিয়ম অনুযায়ী এসব পণ্যে শুল্ক প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত কেবল যুক্তরাষ্ট্রের জন্য প্রযোজ্য হবে না, বরং তা সব দেশের ক্ষেত্রেই সমানভাবে প্রযোজ্য হবে। তিনি বলেন, 'তবে এতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।'

এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, প্রস্তাবিত ১৬১টি পণ্যের মোট আমদানি মূল্য ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ছিল প্রায় ২৮ হাজার কোটি টাকা, যা থেকে প্রাপ্ত রাজস্ব ছিল প্রায় ৬১০ কোটি টাকা। কর্মকর্তাদের মতে, এসব পণ্যে আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারের ফলে রাজস্ব ঘাটতি খুব একটা হবে না। বরং এতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বাড়বে এবং দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর ক্ষেত্রে সহায়ক হবে বলে সরকার আশা করছে।

২০২৫ সালের ২ এপ্রিল ট্রাম্প প্রশাসন এক নির্দেশনার মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের ওপর উচ্চ শুল্কারোপ করে, যার আওতায় বাংলাদেশের পণ্যের ওপর সর্বোচ্চ ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা বাংলাদেশি পণ্যে গড়ে প্রায় ১৫ শতাংশ শুল্ক ছিল। পরে যুক্তরাষ্ট্র সরকার ১০ শতাংশ শুল্ক বহাল রেখে অবশিষ্ট অংশ তিন মাসের জন্য স্থগিত রাখে।

বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে বাংলাদেশ। আমদানি শুল্ক কমানোর প্রস্তাব সেই আলোচনারই একটি অংশ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশ প্রায় ২.২ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে, বিপরীতে রপ্তানি করেছে ৮.৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। ফলে যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ রপ্তানি বাজার।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে