বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

রপ্তানি লক্ষ্য অর্জনে নিরবচ্ছিন্ন  বিদ্যুৎ-জ্বালানি, নীতিগত সহায়তা চায় পোশাক শিল্প

অর্থ-বাণিজ্য রিপোর্ট
  ২২ মে ২০২৫, ১৫:৪১
আপডেট  : ২২ মে ২০২৫, ১৫:৫৬
রপ্তানি লক্ষ্য অর্জনে নিরবচ্ছিন্ন  বিদ্যুৎ-জ্বালানি, নীতিগত সহায়তা চায় পোশাক শিল্প
ছবি: সংগৃহীত

1

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক (আরএমজি) খাতকে ১০০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি লক্ষ্যে নিয়ে যেতে সরকারকে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করার পাশাপাশি শক্তিশালী নীতিগত সহায়তা ও জনবলের দক্ষতা উন্নয়নে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন পোশাক শিল্প নেতারা।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) ২০২৫-২৭ মেয়াদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্যানেলের 'সম্মিলিত পরিষদ'-এর নেতারা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ, নীতিগত সহায়তা এবং দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন।

বুধবার (২১ মে) ঢাকার একটি হোটেলে আয়োজিত ইশতেহার প্রকাশ ও পরিচিতি অনুষ্ঠানে এসব দাবি তোলেন তারা। ২৮ মে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে বিজিএমইএ'র সদস্যরা আগামী তিন বছরের জন্য ৩৫ জন পরিচালক নির্বাচিত করবেন, যারা দেশের তৈরি পোশাক খাতের শীর্ষ বাণিজ্য সংস্থাটির নেতৃত্ব দেবেন।

সম্মিলিত পরিষদের প্যানেল প্রধান ও চৈতি গ্রুপের মালিক মো. আবুল কালাম অনুষ্ঠানে ১২ দফা ইশতেহার প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট, ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে তৈরি পোশাক শিল্প এখন একাধিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি।

তিনি বলেন, তৈরি পোশাক খাত বর্তমানে সবচেয়ে কঠিন সময় পার করছে এবং প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে দ্রুত সরকারের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে টিম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল্লাহ হিল রাকিব বলেন, "বিশ্বব্যাপী তৈরি পোশাক বাণিজ্যের ৭৬ শতাংশই ম্যান-মেড ফাইবারভিত্তিক। এই বাজার বিশাল এবং আমাদের জন্য বড় সম্ভাবনাও তৈরি করেছে। সরকার যদি ম্যান-মেড ফাইবারকে উৎসাহিত করতে নীতিগত সহায়তা দেয় এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানির স্থিতিশীল সরবরাহ নিশ্চিত করে, তাহলে ১০০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানির লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব হবে।"

তিনি বলেন, "বাংলাদেশ এখনো তুলাভিত্তিক অর্থনীতির ওপর নির্ভরশীল। একে ম্যান-মেড ফাইবারভিত্তিক অর্থনীতিতে রূপান্তরের সময় এসেছে। আমাদের দেশে যেখানে ম্যান-মেড ফাইবারভিত্তিক পোশাক উৎপাদনের হার মাত্র ১৬ শতাংশ, সেখানে চীনে তা ৪২ শতাংশ এবং ভিয়েতনামে ৪৬ শতাংশ।"

আবদুল্লাহ হিল রাকিব ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সমালোচনা করে বলেন, "আমাদের দরকার সহনীয় সুদের হার এবং বায়ারদের কাছ থেকে প্রতিযোগিতামূলক মূল্য।"

যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক শুল্কারোপ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে রাকিব বলেন, "আমরা এই শুল্কযুদ্ধ নিয়ে হুমকির মুখে আছি। যদি সামনে কোনো অস্বাভাবিক শুল্কের মুখোমুখি হতে হয়, তখন আমাদের এই শিল্প কোথায় যাবে?"

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ফারুক হাসান। তিনি সরকারকে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের সময় পেছানোর আহ্বান জানান এবং উত্তরণের পর ট্রানজিশন পিরিয়ড কয়েক বছর বাড়ানোর অনুরোধ জানান।

তিনি বলেন, "আমাদের রপ্তানি ও আর্থিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এখনো মনে করি, এলডিসি উত্তরণ আরও কয়েক বছর পিছিয়ে দেওয়া উচিত। এতে করে আমরা আরও বেশি সুবিধা পেতে পারি।"

অনুষ্ঠান শেষে এক প্রতিক্রিয়ায় ফারুক হাসান জানান, তিনি চান এলডিসি উত্তরণ ২০৩১-২০৩২ সাল পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়া হোক।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে