সিলেটে বানভাসীদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষার্থীদের সংগঠন কিন'র সদস্যরা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে জানান তারা।
সোমবার (২০ জুন) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের এলাকার ১৩টি পরিবারকে ত্রাণ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটির সেক্রেটারি অব ওয়েব মো. সালমান আসাদ্দু।
'বন্যার্তদের হাহাকার সাহায্য প্রার্থনায় কিন'র ব্যানারে তারা গত শনিবার থেকে ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচি পালন করছেন।
সালমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকটস্থ বন্যা কবলিত এলাকায় 'কিন স্কুলের শিক্ষার্থীদের ১৩ টি পরিবারের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়। প্রথমদিনের ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচি কালিবাড়ী পয়েন্ট, মদিনা মার্কেট থেকে শুরু করা হয় এবং তেমুখী সহ পাশের এলাকায় ত্রাণ বিতরণী কার্যক্রম চলমান থাকে। যা বন্যা পরবর্তীকালীন দূর্যোগে বন্যা কবলিত পরিবারের কষ্ট কিছুটা হলেও লাগব করবে।
সালমান আরো বলেন, ওই সকল পরিবারের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে চিড়া ৩ কেজি, গুড় আধা কেজি, লবন আধা কেজি, বিস্কুট আধা কেজি
স্যালাইন ৫ টি, মোমবাতি আর দিয়াশলাই ৫ টি ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ৫ টি। চলমান বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমাদের ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচিটি গত শনিবার থেকে শুরু হয়েছে, যা বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত চলমান থাকবে।
কিনের সামাজিক সচেতনতা ও প্রচার সম্পাদক ইসরাত জাহান রিফা বলেন, চলমান বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় কারো ঘর বাড়ি ভাসিয়ে নিয়ে গেছে; কারো বা ঘরে কোমর পানি। ঘরে খাবার নাই, বিশুদ্ধ পানি নেই; ভেঙে পড়েছে সকল যোগাযোগ ব্যবস্থা। এই পরিস্থিতিতে জীবন বাঁচানোই দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে সিলেট ও সুনামগঞ্জ অঞ্চলের বন্যাদূর্গত মানুষদের। উজান থেকে আসা ঢলে সিলেটের ৮০ শতাংশ এলাকা এখন পানির নিচে। এর মধ্যে সুনামগঞ্জের ৯০ শতাংশ এলাকা ডুবে গেছে। বাকি তিন জেলার শহরের কিছু উঁচু স্থান, পাহাড়ি এলাকা এবং ভবন ছাড়া সবখানে এখন পানি।
কিনের এডুকেশন সেক্রটারি আদিবা মালিহা বলেন, এই দূর্যোগের মুহূর্তে সিলেট অঞ্চলের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পাশাপাশি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কিন স্কুলের শিক্ষার্থীদের পরিবারের কাছে শুকনো খাবার, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, স্যালাইন পৌঁছে দেয়ার জন্য সকলের সাহায্যের প্রয়োজন৷ সিলেটের এই সংকটের সময়ে সকলের প্রতি উদাত্ত আহ্বান থাকবে, আপনারা নিজ নিজ জায়গা থেকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সহায়তায় এগিয়ে আসবেন এবং তাদের দূর্ভোগ কিছুটা হলেও লাঘব করবেন।
কিনের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবা মোস্তফা সৌরভী বলেন, বিগত বছরগুলোর মতো এইবারও আমরা বন্যায় বিপর্যস্ত মানুষের সাহায্যের জন্য কাজ করছি। সিলেট এবং সুনামগঞ্জ অঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি এ যাবত কালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ আকার ধারন করেছে। এ জায়গাগুলোতে তাৎক্ষণিক সাহায্যের প্রয়োজন। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় কিনের প্রতিনিধিদল ইতোমধ্যে সুনামগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী মঙ্গলবার থেকে আমরা সুনামগঞ্জে দুইদিন অবস্থান করব। এই দুইদিনে চার বেলা ক্ষতিগ্রস্ত বন্যার্ত মানুষদের রান্না করে খাওয়ানো হবে এবং এতে খরচ পড়বে সর্বমোট ৮০,০০০ টাকা। প্রতিবেলায় মোট ১ হাজার জন মানুষকে রান্না করে খাওয়ানো হবে। এর পাশাপাশি বানভাসি ৫০০ টি পরিবারের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করা হবে।
যাযাদি/ এস