মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২

ববি শাটডাউন: দক্ষিণ বঙ্গ ব্লকেড কর্মসূচি কাল

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
  ১২ মে ২০২৫, ১৫:৪৭
ববি শাটডাউন: দক্ষিণ বঙ্গ ব্লকেড কর্মসূচি কাল
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ: ছবি যায়যায়দিন

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শূচিতা শরমিনের পদত্যাগের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় শাটডাউন করেছেন শিক্ষার্থীরা।

আগামীকাল মঙ্গলবার (১৩ মে) থেকে ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে দক্ষিণবঙ্গ ব্লকেড কর্মসূচি পালন করবেন তারা।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

সোমবার (১২ মে) দুপুর দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রান্ডফ্লোরে শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অবস্থান কর্মসূচি থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয়।

বিক্ষোভকালে শিক্ষার্থীরা বলেন, উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আজ ২৮তম দিনে তারা ব্লকেড কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হয়েছেন।

তারা অভিযোগ করেন, বারবার রাষ্ট্রপক্ষকে জানানোর পরেও কোনো সাড়া মেলেনি। শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, যদি সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ হয়, তার জন্য কর্তৃপক্ষই দায়ী থাকবে।

তারা স্পষ্ট ভাষায় জানান, আগামীকাল দুপুর ১টা ৫৯ মিনিটের মধ্যে যদি উপাচার্য শূচিতা শরমিনকে অপসারণ করা না হয়, তবে তারা দক্ষিণবঙ্গ অচল করে দেবেন।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী সুজয় বিশ্বাস শুভ বলেন, ‘আমাদের যৌক্তিক আন্দোলন মেনে নিয়ে উপাচার্যকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছিলাম। কিন্তু তারা আমাদের কথায় কোনো কর্ণপাত করেননি। আগামীকাল ২টার মধ্যে উপাচার্য পদত্যাগ না করলে আমরা দক্ষিণবঙ্গ অচল করে দেওয়ার ঘোষণা দিচ্ছি।’

উপাচার্যের পদত্যাগে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছেন বিগত প্রায় ১৫ দিন যাবৎ। এর আগে গত ১৭ এপ্রিল থেকে চার দফা নিয়ে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।

তখন উপাচার্য আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দমন করতে জিডি করেন থানায়। এর পরই আন্দোলনকারীরা ফুঁসে ওঠেন।

উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। আন্দোলনের ২৮ তম দিনেও কোনরকম ইতিবাচক সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় অচল হয়ে পড়ছে বিশ্ববিদ্যায়টি।

উপাচার্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনের শুরু থেকেই ক্যাম্পাস ছাড়া তিনি। অবস্থান করছেন ঢাকায়।

এদিকে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা, ভর্তি ও ফলাফল প্রকাশসহ নানাবিধ জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, এই উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউই চাচ্ছে না। তার উচিত হবে দ্রুত পদত্যাগ করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়কে মুক্তি দেওয়া।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী মোশারফ হোসেন বলেন, ‘আমরা এতদিন শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের দাবি-দাওয়া জানিয়ে আসছিলাম। এমনকি উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিও শান্তিপূর্ণভাবে উপস্থাপন করেছি।

কিন্তু কর্তৃপক্ষ আমাদের দাবিগুলোর প্রতি কোনো কর্ণপাত করছে না। এই পরিস্থিতিতে, আমরা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার আগামীকাল দুপুর ২টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছি।

আগামীকাল দুপুর ২টার মধ্যে যদি আমাদের দাবিগুলো মেনে না নেওয়া হয়, তবে আমরা পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী দক্ষিণাঞ্চলকে অচল করে দেব।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের প্রভাষক মুস্তাকিম মিয়া বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের সকল যৌক্তিক আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করছি।’

কোস্টাল স্টাডিজ অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক ড. হাফিজ আশরাফুল হক বলেন, ‘এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবারের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী উপাচার্যের স্বৈরাচারী মনোভাবের কারণে কেউই ভালো নেই।

এই ফ্যাসিস্ট মনোভাবের স্বৈরাচারী ভিসি যদি বহাল থাকেন, তাহলে এই বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংস হয়ে যাবে।

এই বিশ্ববিদ্যালয়কে রক্ষার স্বার্থে আমরা শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের এই যৌক্তিক আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে তাদের পাশে আছি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিন চলমান আন্দোলনের বিষয়ে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের ভুল বুঝিয়ে আন্দোলন করানো হচ্ছে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বাভাবিক করার জন্য চেষ্টা করছেন।

যাযাদি/এল

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে