টেক্সটাইল শিল্প দেশীয় অর্থনীতির প্রাণ। বাংলাদেশে যে কয়েকটি পেশায় শূন্য পদের তুলনায় চাকরি প্রার্থীর সংখ্যা কম, এর মধ্যে টেক্সটাইল খাত একটি।
শুধু তাই নয়, অনেক সময় পাস করার আগেই চাকরির নিশ্চয়তা পাওয়া যায় এই বিভাগে পড়ে।
আর এ বিষয়টিকে বিবেচনায় ধরেই গ্রিন ইউনিভার্সিটির টেক্সটাইল বিভাগ দীর্ঘদিন ধরে সাফল্যের স্বাক্ষর রেখে যাচ্ছে। টেক্সটাইলের ওপর দেশের একমাত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ‘বুটেক্স-এর প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য (সাবেক) অধ্যাপক ড. নিতাই চন্দ্র সূত্রধরের সরাসরি তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে এই বিভাগ। বর্তমানে তিনি বিভাগটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
ড. নিতাই চন্দ্র সূত্রধর জানান, গোটা বিশ্ব তো বটেই, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটেও টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং সাবজেক্টটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বলা যায়, আমাদের দেশে যে পরিমাণ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার প্রয়োজন, তার অর্ধেকও আমরা জোগান দিতে পারছি না।
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পাস করে যে কেউ খুব সহজেই পোশাকশিল্পের কাজে নিজেকে জড়াতে পারেন। অধ্যাপক ড. নিতাই চন্দ্র সূত্রধর ছাড়াও বেশ কয়েকজন পিএইচডি ডিগ্রীধারী ও অভিজ্ঞ শিক্ষক রয়েছেন বিভাগটিতে।
বাংলাদেশ বাইরে আন্তর্জাতিক মানের পড়াশোনার জন্য বিদেশে টেক্সটাইলে বিএসসি, এমএসসি এবং পিএইচডি করার সুযোগ রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিদেশে এমন কোনো দেশ নেই যেখানে টেক্সটাইল বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি নেয়া যায় না।
যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনা, ফিলাডেলফিয়া, জর্জিয়া ইউনিভার্সিটি, যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অব লিডস, ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্ট অব ইংল্যান্ড ব্রিস্টল, ইউনিভার্সিটি অব বোল্টন, কানাডার ম্যানিটবা, আলবার্টা ও ম্যাকগিল ইউনিভার্সিটি, অস্ট্রেলিয়ার আরএমআইটি ইউনিভার্সিটি, কোরিয়ার ইনহা ইউনিভার্সিটি, চায়নার উহান ও ডংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়, হংকংয়ের হংকং পলিটেকনিক ইউনিভার্সিটি উচ্চশিক্ষার জন্য শীর্ষে রয়েছে।
ক্যারিয়ার কেমন?
আধুনিকায়নের সঙ্গে সঙ্গে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কর্মক্ষেত্র দিন দিন প্রসার হচ্ছে এবং বিদেশেও আকর্ষণীয় বেতনে বাংলাদেশী গ্র্যাজুয়েটরা সফলতার সঙ্গে কাজ করছে।
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের কর্মক্ষেত্রও বিস্তর। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি, কেমিক্যাল, ফ্যাব্রিক, ইয়ার্ন মার্কেটিং, মেশিন মাকেটিং, দেশী-বিদেশী কনসালট্যান্সি, ডাটা অ্যানালাইসিস, কলেজ, আইএফসির মতো বিভিন্ন ডেভেলপমেন্ট সংস্থা, আরএমজি, ফ্যাশন ডিজাইনিং, জুট ও এগ্রিকালচার ইনস্টিটিউট, সরকারি প্রতিষ্ঠান, ডেনিম, গার্মেন্ট ওয়াশিং, গার্মেন্টস কোম্পানি, দেশী-বিদেশী বায়িং হাউজ, শিল্প ঋণ প্রদানকারী সংস্থা, ট্রেডিং হাউজ, বিভিন্ন স্পিনিং, নিটিং, উইভিং এবং ডাইং মিল, প্রিন্টিং ছাড়াও ব্যাংকের প্রজেক্ট ফাইন্যান্সে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ রয়েছে।
একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার ১৫-২৫ হাজার টাকায় চাকরি শুরু করলেও তিন-চার বছর কাজের অভিজ্ঞতা থাকলে বেতন ৫০-৬০ হাজার টাকা হতে পারে।
বাংলাদেশে প্রায় পাঁচ হাজার গার্মেন্টস এবং পাঁচ হাজারেরও বেশি বস্ত্র শিল্প রয়েছে। প্রায় ৪৫ লাখ লোক শুধু পোশাক শিল্পে কাজ করে। এছাড়া প্রায় ৮৫ হাজার বিদেশী বাংলাদেশে বৈধভাবে কাজ করে। সুতরাং একটি বিশাল কাজের সুযোগ রয়েছে এ খাতে।
গ্রিন ইউনিভার্সিটির টেক্সটাইল বিভাগের অনন্য বৈশিষ্ট্য হলো- স্বল্প খরচে আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষাদান করা। তাছাড়া বিভাগটিতে হাতে-কলমে শেখার জন্য পাওয়ার লুম, নিটিং মেশিনসহ ফেব্রিক ল্যাব, স্যাম্পল ড্রায়ার, জিগার, প্যাডরোলার, উইন্স, স্ট্ক্রিন প্রিন্টার, স্যাম্পল ওয়াশিং মেশিনসহ কালারেশন ল্যাব, গার্মেন্ট ল্যাবে স্যাম্পল কাটারসহ আধুনিক সুইং মেশিন, টেস্টিং কোয়ালিটি কন্ট্রোল ল্যাবে প্রয়োজনীয় মেশিনারি, ওয়ার্কশপ প্র্যাকটিস, পদার্থ ও রসায়ন ল্যাব, ইঞ্জিনিয়ারিং ড্রইং ও ফেব্রিক ডিজাইন অ্যানালাইসিসের জন্য পৃথক ল্যাব রয়েছে।
বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. শরীফুল আলম বলেন, গ্রিন ইউনিভার্সিটিতে পড়ুয়া ৭০ ভাগ শিক্ষার্থী গ্রাজুয়েশন শেষ করার আগে চাকরি পেয়ে যায়; যেটা সচারচার অন্য বিভাগগুলোয় দেখা যায় না। এছাড়া গ্রাজুয়েশন শেষ করার পর এই বিভাগের চাকরি প্রাপ্তির হার শতভাগ।
প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকমণ্ডলী: গ্রিন ইউনিভার্সিটিতে চাকরিরত সব শিক্ষক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। শুধু তাই নয়, যোগ্য ও অভিজ্ঞ শিক্ষকমণ্ডলী দ্বারা শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতে সদা সচেষ্ট গ্রিন বিশ্ববিদ্যালয়।
এ ক্ষেত্রে ফার্স্টক্লাসধারী লিখিত, প্রেজেন্টশন ও ভাইভা পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, নিয়োগদানের পর তাদের (শিক্ষক) শিক্ষাদান দক্ষতা বৃদ্ধিতে সেমিস্টারজুড়ে (চার মাস) প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। যে ধারা গ্রিন ইউনিভার্সিটি ছাড়া মাত্র দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান করা প্রবীণ শিক্ষকরাও তুলনামূলক অধিক যোগ্য ও অভিজ্ঞ।
সুযোগ-সুবিধা: চীনের উহান টেক্সটাইল ইউনিভার্সিটি এবং বেইজিং ল্যাংগুয়েজ অ্যান্ড কালচারাল ইউনিভার্সিটির সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী প্রতিষ্ঠান দুটিতে অগ্রাধিকারভিত্তিতে পড়ার সুযোগ পাচ্ছেন গ্রিন ইউনিভার্সিটির টেক্সটাইল বিভাগের নির্দিষ্ট সংখ্যক শিক্ষার্থী। এর বাইরেও মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি তুন আবদুল রাজাক, বাইনারি ইউনিভার্সিটি, হোবেই ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি, চায়না থ্রি জর্জেজ ইউনিভার্সিটি, হোবেই ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব রেজিনাসহ যুক্তরাজ্য, কানাডা, মালয়েশিয়া, ভারতসহ বিশ্বের নামকরা অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এই প্রতিষ্ঠানের চুক্তি রয়েছে। অবকাঠামো ক্ষেত্রে অনন্য সুবিধা পাচ্ছে গ্রিন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। এজন্য ঢাকার সন্নিকটে পূর্বাচল আমেরিকান সিটির নান্দনিক পরিবেশে স্থায়ী ক্যাম্পাস গড়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়। ক্যাম্পাসটিতে যেতে রাজধানীর বেশ কয়েকটি পয়েন্ট থেকে নিজস্ব পরিবহনের ব্যবস্থা রেখেছে এই বিশ্ববিদ্যালয়।
ভর্তি: নতুন শিক্ষার্থীদের ভর্তিতে টিউশন ফির ওপর সর্বোচ্চ ১০০ শতাংশ ছাড় দিয়ে গ্রিন ইউনিভার্সিটি। এছাড়াও এসএসসি ও এইচএসসির ফলাফল ও করপোরেট ও গ্রুপভিত্তিক ভর্তি হলেও রয়েছে বিশেষ ছাড়। যোগাযোগ: যোগাযোগ: গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, পূর্বাচল আমেরিকান সিটি, রূপগঞ্জ, নারায়নগঞ্জ।