১৭টি হলের পর এবার নতুন আরেকটি আবাসিক হলে আসন পেতে যাচ্ছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। প্রায় ৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ১০তলা আবাসিক হলটির সকল কাজ শেষে চলতি বছরের ডিসেম্বরেই শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের পরিচালক এস. এম. ওবায়দুল ইসলাম।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হলটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। পরে বেশ কয়েকবার মেয়াদ বৃদ্ধির পর ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বুঝিয়ে দেওয়ার কথা স্থির করেছে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান মাজিদ সন্স কনস্ট্রাকশন লিমিটেড।
এদিকে বিগত প্রশাসন হলটির নামকরণ করেছিলেন শহীদ এএইচএম কামরুজ্জামান হল তবে জুলাই আন্দোলনের পর শিক্ষার্থীরা হলটির নাম পরিবর্তন করে নতুন নাম রাখেন সাকিব-রায়হান হল। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে এখনো হলটির চূড়ান্ত নাম নির্ধারণ করা হয়নি। ২৪ হাজার বর্গমিটার জায়গা নিয়ে নির্মিত হচ্ছে উন্নতমানের এই হলটি। ১০ তলাবিশিষ্ট ভবনের মধ্যে থাকবে ছয়টি ব্লক যেখানে আসন সংখ্যা রয়েছে প্রায় ১১শতাধিক। এছাড়াও হলটিতে রয়েছে বিভিন্ন রকম সুবিধা।
এদিকে কামরুজ্জামান হল ছাড়াও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আরও তিনটি মেগা প্রজেক্টের কাজ চলমান। তারমধ্যে শেখ হাসিনা হল, বিশ তলা অ্যাকাডেমিক বিজ্ঞান ভবন ও ১০ তলা শিক্ষক কোয়ার্টারের কাজ চলমান রয়েছে বলে জানা গেছে।
কর্তৃপক্ষের তথ্য মতে, নতুন এ হলটি হতে যাচ্ছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সবথেকে বড় আবাসিক হল। হলটিতে ৫৯৮টি কক্ষ রয়েছে যার সবকটি কক্ষই হবে দুই আসন বিশিষ্ট। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্তে থাকছে চারটি লিফটের ব্যবস্থা পাশাপাশি থাকছে চারটি প্রশস্ত সিঁড়ি, থাকছে জেনারেটর, ডিপ টিউবওয়েলের, বিশাল আকৃতির মসজিদ, আধুনিক ডিজাইনে নির্মিত প্রায় ৩ শতাধিক আসন বিশিষ্ট অডিটোরিয়াম। দুই তলায় থাকছে শিক্ষার্থীদের জন্য উন্নতমানের লাইব্রেরি, ইনডোর কক্ষ, জিমনেসিয়াম, শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা করার জন্য রিডিং রুম। নিচ তলায় থাকছে গ্রীণ জোন ও শিক্ষার্থীদের জন্য স্থায়ী দোকান। এছাড়াও পুরো হলটি থাকবে সিসিটিভি ক্যামারার আওতায় যা কন্ট্রোল করার জন্য আইটি নামে আলাদা একটি কক্ষও থাকবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের পরিচালক এস.এম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, "জুলাই বিপ্লবের পর বর্তমান প্রশাসনের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য ছিল উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করা। তারমধ্যে শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট নিরসন করা ছিল অন্যতম। তারই অংশ হিসাবে প্রায় ৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন কামরুজ্জামান হলের কাজ প্রায় শেষের দিকে যা আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে হলটি শিক্ষার্থীদের ব্যবহারে উপযোগী হবে বলে আমরা আশাবাদী।"
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাঈন উদ্দিন বলেন, "৫ই আগস্টের পর নির্মানাধীন হলটির কাজ স্থবির হয়ে পড়ে। এদিকে বর্তমান প্রশাসন টিকাদার প্রতিষ্ঠানের সাথে আলোচনা করে আবারও কাজ শুরু করেন। নির্মাণাধীন হলটিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকেও ভিজিট করা হয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে শিক্ষার্থীদের ব্যবহারে উপযোগী করে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।"