শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২

ধারাবাহিক আর করছি না : ফজলুর রহমান বাবু

মাতিয়ার রাফায়েল
  ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ১১:২৪
ধারাবাহিক আর করছি না : ফজলুর রহমান বাবু
ফাইল ছবি

দেশের সব শ্রেণির দর্শকপ্রিয় অভিনেতা ফজলুর রহমান বাবু। মঞ্চ, টিভি, চলচ্চিত্র ও ওটিটি- সব মাধ্যমেই দীর্ঘদিন ধরে নানামুখী চরিত্রে অভিনয় করে আসছেন। অভিনয়ের জন্য ছয়বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন। সর্বশেষ সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত ‘নোনাজলের কাব্য’ চলচ্চিত্রে ‘শ্রেষ্ঠ অভিনেতা পার্শ্ব চরিত্রে’র জন্য পুরস্কার লাভ করেছেন। শুধু অভিনয় দিয়েই নয়, গান দিয়েও অসংখ্য শ্রোতার হৃদয় কেড়েছেন।

কেমন কাজকর্ম চলছে এখন?

এখন আমি টেলিভিশনের জন্য দু’টি সিঙ্গেল নাটকের কাজ করছি। বর্তমানে আমি ‘পালাবদল’ নামে একটি সিঙ্গেল নাটকের শুটিংয়ে আছি। এ ছাড়া বেশ কিছুদিন ধরে একটা সিনেমার শুটিংয়ে আছি। সিনেমাটির নাম ‘ওমর’। মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ এটি পরিচালনা করছেন।

‘ওমর’ ছবিতে আপনার চরিত্র কেমন?

এটা তো বলা যাবে না। আগেই যদি চরিত্রটি সম্পর্কে বলে ফেলি তাহলে পত্রিকায় এটা পড়ে দর্শক বুঝে ফেলবে যে, ‘ও এই, বুঝেছি কী হবে’। তখন দর্শকই সিনেমাটা দেখতে চাইবে না। আমি চাই, দর্শক হলে গিয়েই আমার অভিনয়টা দেখুক। তবে এই ছবিতে আমি একটি বিশেষ উল্লেখযোগ্য চরিত্রে অভিনয় করছি। বেশ ভালো একটি চরিত্র। এই ছবিতে আমার কো-আর্টিস্ট হিসেবে আছেন শরিফুল রাজ, শহীদুজ্জামান সেলিমসহ আরও অনেকে। নিশ্চয় তারাও সবাই যার যার চরিত্রের দিক থেকে সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করবেন। আমিও তাই করব।

ধারাবাহিক নাটকে কি আর ফিরবেন না?

গত তিন চার বছর ধরেই ধারাবাহিক নাটক আমি করি না। ধারাবাহিক নাটক করা ছেড়ে দিয়েছি। দু’টি কারণে আমি ধারাবাহিক নাটক করছি না। প্রথমত, সময়ের অভাব। ধারাবাহিকের জন্য প্রতি মাসে একটা নির্দিষ্ট সময় দিতে হয়। এই বাধ্যবাধকতার জায়গাটাতেই আমি যুক্ত হতে চাই না। কারণ আমাকে আরও কাজে থাকতে হয়। দেখা যাবে, একটা ধারাবাহিকে যুক্ত হয়ে একটি, দু’টি লট করে আর সময় দিতে পারলাম না। তখন পরিচালক বিপদে পড়বেন। দ্বিতীয়ত, এখন যেসব ধারাবাহিক হচ্ছে বেশির ভাগই খুবই নিম্নমানের। নাম দেখলেই মনে হয় না, এটাতে কাজ করি। নাম দেখলেই অরুচি ধরে যায়। সব একই টাইপের ধারাবাহিক। ফালতু-ফালতু নাম। মনে হয় তারা ইয়ার্কি-ফাইজলামি করছে, দুষ্টামি করছে। এগুলোকে শিল্পের পর্যায়ে ফেলা যায় না।

ধারাবাহিক নাটকে এ রকম চরিত্র আগেও তো দু’একটি থাকত? সেগুলোতে কিন্তু সু² শিল্প ছিল। এখন তো নাটকের পুরোটা জুড়েই ভাড়ামিতে ছেয়ে গেছে। এগুলোর টার্গেটই যেনতেনভাবে পাবলিককে খাওয়ানো। তাদের ধান্ধাটিই হচ্ছে পাবলিককে নাটকটা কীভাবে খাওয়াবে সেরকম তৎপর থাকা। আপনি নিজেও বুঝবেন, এগুলোতে অভিনয় করা আমাদের নামের সঙ্গে যায় না। সবচেয়ে বড় কথা আমরা যারা শিল্প-সংস্কৃতি করি, লেখালেখি করি, অভিনয় করি, পরিচালনা করি- তাদেরও তো একটা দায়িত্ব আছে দেশ তৈরি করার। সুস্থ বিনোদন দেওয়ার। সুস্থ বিনোদনের মাধ্যমে দেশে সুস্থ নাগরিক তৈরি করার। সেক্ষেত্রে আমরা যদি এই দায়িত্বকে ধারণ না করি তখন দেশের সাধারণ নাগরিক তো নিম্নমানেরই হবে। এখন যারা নিম্নমানের দেশ তৈরি করতে চাইবেন তারা তো নিম্নমানের নাটকই করবেন।

সিনেমায় তরুণ নির্মাতারা ভালো

করলেও নাটকে কেন এমন হচ্ছে?

খুবই ভালো একটা প্রশ্ন করেছেন। কিছু কিছু তরুণ নাটক নির্মাতা কিন্তু ভালো জীবনভিত্তিক নাটক বানানোর চেষ্টা করছে। তবে ভালো নাটকের চেয়ে খারাপ নাটকের সংখ্যা বেশি হয়ে যাওয়ায় তখন ভালোটা চোখে পড়ে না। মানুষের চোখে তখন খারাপটাই ধরা পড়ে বেশি। যেমন আমি মাসে তিনটি-চারটি সিঙ্গেল নাটক করি। আমি যেসব নাটক করি গল্প দেখে, পরিচালক দেখে এবং কো-আর্টিস্ট, পারফর্মার দেখে করি। সেসব নাটক ভালোই হচ্ছে।

আপনার গলায় কিন্তু গানটাও বেশ হৃদয়গ্রাহী হয়!

ওই দর্শক-শ্রোতারা পছন্দ করেন বলে গাই। তবে গানটা অবশ্য আমার প্রফেশন না, মাঝে মাঝে মনের টানে গাই আর কি। তবে গান নিয়ে আমার আলাদাভাবে কোনো পরিকল্পনা নেই। মাঝেমধ্যে গান করি। নিয়মিত করি না। ঠিক আছে ভাই। আমি এখন শট এ আছি।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে