রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

মাছ চাষের জন্য একটি দীঘি করেছি

যাযাদি রিপোর্ট
  ০৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:১৫
ফাইল ছবি

প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার খান আতাউর রহমানের ছেলে খান আসিফুর রহমান আগুন। মা বরেণ্য নজরুল সঙ্গীতশিল্পী নিলুফার ইয়াসমীন এবং খালা সাবিনা ইয়াসমিন। আগুন নিজের গানেরও স্বাতন্ত্র্য প্রতিষ্ঠা করেছেন। নব্বই দশক থেকে শুরু করে একটানা দুই দশক তিনি প্লে-ব্যাকে আধিপত্য বিস্তার করেছিলেন। এ শিল্পীর বর্তমান ব্যস্ততা নিয়ে কথা বলেছেন...

নতুন বছরে নতুন গানের ব্যস্ততা কেমন? আমাদের আসলে বসে থাকার সুযোগ নেই। সব সময়েই নতুন গানের মধ্যেই থাকতে হয়। রিলিজ দিতে হয়তো কিছুটা সময় নিতে হয় কিন্তু গানের রেকর্ডিং আমাদের কমবেশি চলতেই থাকে। এরমধ্যে আবার আমার একটি নতুন শখের বাস্তবায়ন করেছি। মানিকগঞ্জের সিংগাইরে একটি দীঘি খনন করিয়েছি। যার চারপাশে খেজুর গাছ লাগানো হয়েছে। ইলেকট্রিকের বেড়া আর সিসি ক্যামেরাও থাকছে। এটার নাম দিয়েছি ‘ডিজিটাল দীঘি’। এ বছরেই সেখানে মাছ চাষ করব।

তার মানে গায়ক থেকে মাছের খামারি?

হ্যাঁ, এখন থেকে এটাই হবে আমার ঠিকানা। সপ্তাহে একদিন এখানে সময় কাটাব। খিঁচুড়ি রান্না হবে, গ্রামের লোকেরা খাবে। এই খামারের পাশাপাশি আগামীতে একটি ডেইরি ফার্মও করব।

এরমধ্যে নতুন কী গান করলেন?

এরমধ্যে গত বছর আমার কয়েকটি গান রিলিজ পেয়েছে। যেমন আছে ‘হৃদয়টাকে দিলাম লিখে’, ‘পথে পথে দিলাম ছড়াইয়ারে’, ‘কেউ বোঝে না মনের ব্যথা’ প্রভৃতি। ‘কেউ বোঝে না মনের ব্যথা’ গানটিতে তো প্রচুর দর্শকের কাছ থেকে ভালো সাড়া পেয়েছি। যদিও আমি ভাইরালে বিশ্বাসী না তারপরেও বিশ্বাস করতে হয় যে, আমার এই গানটি রীতিমতো ভাইরাল হওয়া একটি গান।

গান ভাইরাল হলেও তা উন্মুক্ত পরিবেশে শোনা যায়! এ নিয়ে কিছুই করার নেই। এটা কিছুতেই বন্ধ করা যাবে না। এটা আমাদের মেনে নিতে হবে। এক প্রযুক্তি আরেক প্রযুক্তির কাছে মার খাচ্ছে। তখন গানও মার খাওয়া এক প্রযুক্তি ছেড়ে আরেক প্রযুক্তির কাছে গিয়ে নত হচ্ছে এবং সেভাবেই গীত হচ্ছে।

এভাবে চললে তো গান জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে? জনবিচ্ছিন্ন কেন হবে। জনবিচ্ছিন্ন তো হয়ও নি? শুধু ধারাটারই পরিবর্তন হয়েছে। মানুষ তো এখনো গান শুনছে। হয়তো এখন আগের মতো ভালো গান হচ্ছে না। হাজারে বড়জোর একটা হয়তো ভালো গান হচ্ছে। এছাড়া বাকি সব গানই আবর্জনার মতো ভাগাড়ে গিয়ে ঠাঁই পাচ্ছে। কিন্তু গান তো মানুষ আগের মতোই শুনছে।

খোলা মাঠ বা যেখানেই হোক গান তো কোথাও থেকে ভেসে আসে না! ও, এভাবে তো ভেবে দেখিনি! এই অর্থে অবশ্য গান জনজীবন থেকে বিচ্ছিন্নই বলা চলে। এটা খুবই দুঃখজনক। এখন তো মানুষজন সেই উন্মুক্ত পরিবেশের শোনা প্রিয় গানের কলিতে কণ্ঠ দিতেও সঙ্কোচবোধ করে। আসলেই গানটা এখন একটা অবরুদ্ধ পরিবেশে চলে এসেছে। রুচিটাই বদলে গেছে মানুষের। রুচির গভীরতা কমে গেছে।

নতুন প্রজন্মের শিল্পীদের গান কেমন লাগে? আজকালকার গানে মেলোডিই কমে গেছে। আসলে রুচিটাই বদলে গেছে মানুষের। রুচির গভীরতা কমে গেছে। সুরের গভীরতা কমে গেছে। বেশির ভাগ গানের কথায়ও কোনো আগা মাথা নেই। ভালো গাইড না পেলেই এমন হয়। আমিও তো এক সময় তরুণ ছিলাম। তখন কেউ না কেউ আমার পাশে ছিল বলেই প্রতিষ্ঠা পেয়েছি। সে লক্ষ্যে আমিও একটি গানের প্রতিষ্ঠান খুলেছি। কারণ তাই আমিও চাই, আমার হাত ধরে কিছু প্রতিভা ওঠে আসুক।

অ্যালবাম আর ইউটিউব, এ দুটোর মধ্যে কোনটা বেশি ভালো লাগে? দুটোর পরিবেশনার ধরন দু’রকম। তারপরও ভালো লাগার হিসেবে আমি অডিও ইন্ডাস্ট্রিটাকেই বেশি প্রাধান্য দেব। কারণ, অ্যালবামে একসঙ্গে দশ বারোটি গান প্রকাশ হতো আর ইউটিউবে তা একটা করে প্রকাশ করতে হচ্ছে। এটা একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনার মতো। আর একসঙ্গে দশবারোটি গান প্রকাশ হওয়া মানে একটা বড় সৌভাগ্যের ব্যাপার। আর ইউটিউবের গান মানুষ তো মনোযোগ দিয়ে শোনেও না।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে