শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

দৃষ্টিনন্দন আল-আমান বাহেলা খাতুন মসজিদটি ঘুরে এলাম

হুসাইন আহমদ
  ১৫ জুলাই ২০২৩, ০০:০০

বর্তমান সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার পৌর সদরে গেলেই চোখ আটকে যায় দৃষ্টিনন্দন এক মসজিদে। মসজিদটির নাম 'আল-আমান বাহেলা খাতুন জামে মসজিদ'। মসজিদটি দেখামাত্রই মনে হবে, এটি সৃষ্টি ও স্রষ্টার একাত্ম হওয়ার এক শান্তিপূর্ণ স্থান। মসজিদটি বেলকুচি পৌরভবন সংলগ্ন দক্ষিণে আড়াই বিঘা জমির ওপর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন এবং ৩০ কোটি টাকা ব্যয় করে নয়নাভিরাম এ মসজিদটি নির্মাণ করা হয়।

প্রতিদিনই শত শত মানুষ মসজিদটি দেখতে এখানে আসে। এত মানুষ মসজিদটি দেখতে গেলেও আল-আমান বাহেলা খাতুন মসজিদটিতে রয়েছে এক অন্যরকম প্রশান্তি আর অদ্ভুত নীরবতা। আর এটি বেলকুচি ও দেশের বৃহত্তম নান্দনিক একটি মসজিদ। এটি পর্যটক ও মুসলিস্নদের মোটেই হতাশ করে না। সারা দেশের দর্শকদের কাছে এটি কতটা জনপ্রিয় তার প্রমাণ মিলবে সেখানে গেলেই। এটি প্রথম কয়েক মাসেই লাখ লাখ দর্শক দেখে গেছেন। ভ্রমণ বিষয়ক স্থাপনার মধ্যে দ্বিতীয় জনপ্রিয় স্থাপনার নাম হিসাবে আসে এখন এই মসজিদটির নাম।

জাঁকজমকপূর্ণ এই মসজিদটিতে একসঙ্গে হাজার হাজার মানুষ নামাজ আদায় করতে পারে। এ ছাড়া মসজিদটির দু'পাশে নির্মিত বিশাল বড় বড় সুউচ্চ মিনার ও মসজিদের মাঝখানের ছাই রঙের বিশালাকৃতির মনোরম বৃহত্তম গম্বুজের কারুকার্যের সৌন্দর্য বর্ণনা করা সম্ভব নয়। যা এই মসজিদটির সৌন্দর্যের অন্যতম এক রূপকার। হঁ্যা, এই মসজিদটির সৌন্দর্য দেখে যে কেউ আশ্চর্য হবেই। মার্বেল পাথরের তৈরি গম্বুজ ও কলাম। বাইরের দৃষ্টিনন্দন কারুকার্য ও কালার সত্যিই এক অসাধারণ সৌন্দর্যের মিলনমেলা। আর ভিতর-বাইরের রংবেরঙের লাইটিংগুলো এমনভাবে সাজানো-গোছানো, সবাইকে বাধ্য করবে তার সৌন্দর্যের প্রেমে পড়তে ও মুগ্ধ হতে। এই বাতিগুলোর আলোকসজ্জা সূর্যাস্তের পর চোখ জুড়িয়ে দেয়। দিনের বেলায় দেখার থেকে সন্ধ্যার পর মসজিদটি সম্পূর্ণ ভিন্নরকম মনে হবে।

একটি মুসলিম স্থাপত্য ও প্রার্থনার জায়গা হিসেবে এখানে প্রবেশের জন্য অবশ্যই পরিশীলিত শালীন পোশাক পরিধান করতে হয়। আর প্রবেশ করার আগে অবশ্যই জুতা খুলে নিতে হয়। খালি পায়ে হাঁটতে না চাইলে একজোড়া মোজা হতে পারে পায়ের সঙ্গী। দিনের বেলা সেখানে ঘোরার সময় প্রয়োজন হবে সানপস্নাসও। কারণ, মসজিদের সামনের ও দো'তলার মেঝেতে থাকা মার্বেল পাথরে সূর্যের আলোর প্রতিফলনে চোখ ধাঁধিয়ে যায়। মসজিদটি সারাদিনই দর্শনার্থী ও মুসলিস্নদের সারাদিন এখানে আসা-যাওয়া করার মাধ্যমে ব্যস্ত থাকে। তবে দুপুরের তপ্ত রোদে এই মসজিদের প্রাঙ্গণে হেঁটে চলা বেশ কষ্টকর। তাই এখানে সকালে বা বিকেলে যাওয়াটাই সবচেয়ে ভালো। তবে সবচেয়ে ভালো হয় বিকেলে গেলে। কেননা, বিকেলের সৌন্দর্যের সঙ্গে সঙ্গে রাতের আলোকসজ্জাও ভালোভাবে উপভোগ করা যায়। আমাদের এই ভ্রমণে আমিসহ এলাকার ছোট ভাই, বন্ধু মিলে আরও অনেকেই ছিলাম। বৃষ্টিবন্দি ঈদ ছুটির আজকের দিনটিই ছিল বেশ আনন্দ ও প্রশান্তিময়।

অতএব, এই মসজিদটি আপনার মধ্যে এক অন্যরকম আবহ সৃষ্টি করবে। এই মসজিদটির পরিবেশটাই মনে করিয়ে দেবে এক আধ্যাত্মিক শান্তি ও প্রশান্তির কথা। তাই আপনিও এই নান্দনিক সৌন্দর্যের প্রতীক 'আল-আমান বাহেলা খাতুন জামে মসজিদটি' ঘুরে আসতে পারেন। তার সৌন্দর্যে মুগ্ধতা ও প্রশান্তি উপভোগ করতে পারেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে