রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

সৌরশক্তি ব্যবহার আরও বাড়বে

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক
  ০৪ মার্চ ২০২৩, ০০:০০

শুধু সূর্যের তাপ নয়, অদৃশ্য ইনফ্রারেড রশ্মি কাজে লাগাতে পারলে সৌরশক্তি আরও কার্যকর হয়ে উঠবে। সোলার সেলের পেছনে কালো সিলিকন লাগিয়ে এমনটা করা সম্ভব।

সূর্য আমাদের আলো ও উত্তাপ দেয়। সৌরশক্তি দিয়ে বিদু্যৎও উৎপাদন করা হয়। সোলার সেল সৌরশক্তি ধারণ করে। এরপর তা বিদু্যতে পরিণত করে।

তা সত্ত্বেও প্রায় এক-চতুর্থাংশ সৌরশক্তি নষ্ট হয়। কারণ সাধারণ সোলার প্যানেল এখনো সূর্যের ইনফ্রারেড রশ্মি ধারণ করতে পারে না। ফ্রাউনহোফার ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী স্টেফান কন্টারমান তা বদলাতে চান। তিনি বলেন, 'সূর্যের আলোর স্পেকট্রামের মধ্যে ইনফ্রারেড রশ্মিও রয়েছে। আমাদের এই সোলার সেলের পেছনে কালো সিলিকন বসানো রয়েছে, যা এই রশ্মিকে বিদু্যতে পরিণত করতে পারে।'

অর্থাৎ কৃত্রিমভাবে তৈরি এই রুক্ষ সারফেস জ্বালানির অপচয় হতে দেয় না, আরও বেশি জ্বালানি ধারণ করে। কন্টারমানের মতে, 'এটা একটা সিলিকন চাকতি, যার উপরটা পালিশ করা। এর উপর আমরা লেজার দিয়ে তিনটি অক্ষর খোদাই করেছি। এই কালো সিলিকন এবার আমার হাতের উত্তাপ শুষে নিচ্ছে। ইনফ্রারেড ক্যামেরার সামনে 'ওয়েভার' রাখলে আমার হাতের উত্তাপের মধ্যদিয়ে গলে যাবে। কিন্তু যেখানে লেজারের ছোঁয়া পড়েছে, সেখানে কিন্তু উত্তাপ জমা থাকবে।'

সৌরশক্তিকে আরও কার্যকর করতে পারলে তা প্রকৃত বিকল্প হয়ে উঠতে পারে। ফলে নতুন এই পস্ন্যান্টের মাধ্যমে সৌরশক্তি থেকে জ্বালানি উৎপাদনের প্রক্রিয়া আরও উন্নত হয়ে উঠবে। সাধারণ সোলার সেলও সিলিকন দিয়ে তৈরি। সেই সিলিকনের উপর লেজার প্রয়োগ করলে নতুন ও উন্নত সোলার সেলের উপাদান তৈরি করা যায়। কন্টারমান আরও জানালেন, 'আমাদের উচ্চশক্তির লেজার পালস ওপরের ভাগে পরিবর্তন আনে। এরপর সেই রুক্ষ সারফেসের ওপর সূক্ষ্ণ চোঙার মতো কাঠামো তৈরি হয়। ফলে প্রায় কোনো প্রতিফলন ছাড়াই আরও অনেক বেশি আলো ধরা পড়ে। খালি চোখে দেখলে তখন তা কালো মনে হয়।' পরীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, যেখানেই কালো সিলিকন রয়েছে, সেখানে সোলার সেল ইনফ্রারেড রশ্মি শুষে নিচ্ছে। ডান দিকের ল্যাম্প সাধারণ আলো তৈরি করছে, বামের ল্যাম্প ইনফ্রারেড রশ্মি বিকিরণ করছে। সেই বিদু্যৎই চাকাটিকে ঘোরাচ্ছে। এর ফলে সৌরবিদু্যৎ শিল্পে নতুন জোয়ার আসতে চলেছে। অনেক কোম্পানি এখনই কালো সিলিকনের এই নতুন প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করছে। এমনকি সূর্যের আলো ছাড়াই সেগুলো কাজ করতে পারে। কন্টারমান বলেন, 'ইনফ্রারেড রশ্মি খালি চোখে দেখা যায় না। তাই ঘর অন্ধকার থাকলেও এই উত্তাপ কাজে লাগানো যায়, বিদু্যতে রূপান্তর করা যায়।'

বড় যন্ত্র বা কারখানাও ইনফ্রারেড রশ্মির উৎস হতে পারে। বছর দেড়েকের মধ্যেই হাইনরিশ হ্যারৎস ইনস্টিটিউটের সোলার সেল বাজারে আসবে। ফলে গোটা বিশ্বে বিকল্প জ্বালানি উৎপাদনে বিপস্নব আসতে চলেছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে