শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

হাওয়ায় ভাসছেন গ্যাল গ্যাডট

তারার মেলা ডেস্ক
  ১৪ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০
গ্যাল গ্যাডট

হলিউডের অভিনয়শিল্পী গ্যাল গ্যাডট। 'ওয়ান্ডার ওম্যান' হিসেবেই বিশ্বজুড়ে তার পরিচিতি। করোনার কারণে নানা জল্পনায় অবশেষে সিনেমা হলেই মুক্তি পেয়েছে তার অভিনীত চলতি বছরের সবচেয়ে আলোচিত সিনেমা 'ওয়ান্ডার ওম্যান-১৯৮৪'। এতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করা অভিনেত্রী গ্যাল গ্যাডটের অসাধারণ অভিনয় এরই মধ্যে দর্শকের মনে দাগ কেটেছে। অনেক তারকাও এই অভিনেত্রীকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন দারুণ পারফর্মের জন্য। সব কিছু মিলিয়েই সিনেমাপ্রেমীদের কাছে প্রশংসিত হচ্ছে সিনেমাটি।

সম্প্রতি ডেটলাইন তাদের এক প্রতিবেদনে প্রকাশ করেছে, নতুন 'ওয়ান্ডার ওম্যান থ্রি'তেও কেন্দ্রীয় চরিত্রে দেখা মিলবে ইসরায়েলি সুন্দরী গ্যাল গ্যাডটের। এর পরিচালনা এবং চিত্রনাট্যে থাকছেন পেটি জেনকিন্স। নতুন এই কিস্তি নিয়ে ওয়ার্নের ব্রসের টবি এমিরিচ এক সংবাদ বিবৃতিতে জানান, পুরো পৃথিবীর 'ওয়ান্ডার ওম্যান' ভক্তদের প্রথমেই জানাই কৃতজ্ঞতা। তারা আবারও ডায়না প্রিন্সকে ভালোবাসা দিয়েই গ্রহণ করেছে। করোনার বাধা অতিক্রম করেও তারা ছবিটি হলে গিয়ে দেখছেন। এটা আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে দারুণভাবে। আমরা 'ওয়ান্ডার ওম্যান' সিনেমাটি চালিয়ে যাব। আমরা অত্যন্ত খুশি গ্যাল এবং পেটিকে এই টিমে পেয়ে। তারা যেন সত্যিকারের জীবনের 'ওয়ান্ডার ওম্যান'।

এর আগে সুপারহিরোভিত্তিক সিনেমার ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় সৃষ্টি করেছে 'ওয়ান্ডার ওম্যান'। ফোর্বস ম্যাগাজিনের হিসাবে, পরিচালক প্যাটি জেনকিনসের 'ওয়ান্ডার ওম্যান' এখন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি আয়ের 'সুপারহিরো অরিজিনাল' চলচ্চিত্র। একজন নারীর পরিচালনায় এ ছবিটির প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন একজন নারী। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে ছবিটি আয় করেছে ৮০০ মিলিয়ন ডলার। আগামী ২৫ আগস্ট জাপানে মুক্তি পেলে 'ওয়ান্ডার ওম্যান'-এর আয় আরও বেড়ে যাবে- তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।

'ওয়ান্ডার ওম্যান' সিরিজের প্রথম পর্ব মুক্তির পর থেকেই আলোচনায় ছবির সুপারহিরোইন গ্যাল গ্যাডট। সিনেমা মুক্তির পর থেকেই সম্মানিত হচ্ছেন তিনি। ছবিটি যেমন হয়েছে ব্যবসা সফল, ক্যারিয়ারেও সফলতা পেয়েছেন ইসরায়েলি এই সুন্দরী। এর আগে ২০১৭ সালের ক্রিটিক চয়েস অ্যাওয়ার্ডে পুরস্কৃত হন তিনি। এই অভিনেত্রী সম্মানিত হন সি-হার অ্যাওয়ার্ডে। সেখানে গ্যাল গ্যাডটের সঙ্গে 'ওয়ান্ডার ওম্যান' সিনেমার পরিচালক প্যাটি জেনকিনসও পুরস্কৃত হন। নারী চরিত্রকে যারা পৃথিবীব্যাপী জনপ্রিয় করে তোলে এবং এন্টারটেইনমেন্ট মিডিয়ায় যারা নারী চরিত্রের ছক বদলে দেয়, তাদের দেয়া হয় এই সি-হার পুরস্কার। অ্যাসোসিয়েশন অব ন্যাশনাল অ্যাডভারটাইজার্স এই পুরস্কার দিয়ে আসছে। ওই সময় পুরস্কার অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী বলেন, 'গ্যাল গ্যাডটকে সম্মানিত করতে পেরে আমরা অনেক খুশি। 'ওয়ান্ডার ওম্যান'- এর মতো ব্যবসাসফল ছবি সে উপহার দিয়েছে,

এটাই শুধু কারণ নয়। এই সফলতাকে কাজে লাগিয়ে গ্যাল ইসরায়েলে তার নিজ ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিকে উন্নত করেছে। এমনকি বিভিন্ন দেশে নারী-পুরুষ বৈষম্যের বিরুদ্ধে কাজ করেছে।'

মাত্র ১৮ বছর বয়সে মিস ইসরায়েলের মুকুট পরেছিলেন গ্যাল গ্যাডট। কাজ করেছেন সে দেশের প্রতিরক্ষা বাহিনীতেও। ২০১৮ সালের ১১ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় অনুষ্ঠিত ২৩তম 'ক্রিটিকস চয়েজ অ্যাওয়ার্ড' অনুষ্ঠানে পুরস্কৃত হয়েছেন তিনি। অনুষ্ঠানে তার বক্তব্যে গ্যাল গ্যাডট বলেন, অভিনয় জীবনের শুরু থেকেই বারবার আমাকে একটা প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়েছে। 'আপনার স্বপ্নের চরিত্র কোনটা?' প্রতিবারই আমি খুব স্পষ্টভাবে বলেছি, আমি একজন স্বাধীন, শক্তিশালী নারী চরিত্রে অভিনয় করতে চাই। যে চরিত্র সত্যিকার অর্থেই নারীর শক্তিটা ফুটে উঠবে। তখনো আমি জানতাম না, 'ওয়ান্ডার ওম্যান' চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ আমার হবে। সেই শুরু থেকে যে চরিত্রটা আমি মনে মনে খুঁজছিলাম, ওয়ান্ডার ওম্যান ঠিক তাই। একজন হৃদয়বান, শক্তিশালী, সহানুভূতিশীল ও ক্ষমাশীল মানুষ। সে ভুলগুলোকে শোধরাতে চায়। আশপাশের সবাই যখন হাত গুটিয়ে বসে থাকে, সে তখন সঠিক কাজটা করতে চায়। সে সারা পৃথিবীর মানুষের নজর কেড়ে নিতে জানে। আর এসব কাজের মাধ্যমেই সে মানবতার জন্য একটা অনুকরণীয় উদাহরণ তৈরি করে।

তিনি আরও বলেন, সে দ্বিধায় ভোগে, নিরাপত্তাহীনতা তাকেও ভাবায়। সে কিন্তু একজন নিখুঁত মানুষ নয়। ভালো-মন্দের নিয়ে এই মানবিক গুণাবলিই তাকে আরও বাস্তবিক করে। ওয়ান্ডার ওম্যান একটি দেশের নয়, সারা বিশ্বের। আমরা সমগ্র পৃথিবীর মানুষের কাছেই তাকে একটা অনুপ্রেরণামূলক চরিত্র গড়ে তুলতে চেষ্টা করেছি। আবার এটাও মাথায় রেখেছি, ওয়ান্ডার ওম্যান একজন নারী, এই বিষয়টাই যেন মুখ্য হয়ে না যায়। এই সিনেমা তৈরির পুরো প্রক্রিয়াটা আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে। আমার বিশ্বাস, আমরা দর্শককেও অনুপ্রাণিত করতে পেরেছি। চলচ্চিত্রের দুনিয়ায় যখন আমি পা রেখেছি, তখন নারীপ্রধান সিনেমা খুব বেশি তৈরি হতো না। এমনকি নারী পরিচালকের সংখ্যাও কম ছিল। অথচ এ বছর দেখুন, সবচেয়ে ব্যবসাসফল ছবিগুলোর মধ্যে তিনটি ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্রে আছেন কোনো না কোনো নারী। এমনকি এই তিনটি ছবির মধ্যে একটির পরিচালকও একজন নারী, আমার প্রিয় প্যাটি জেনকিনস (ওয়ান্ডার ওম্যান ছবির পরিচালক)। সেরা ১০০ ছবির মধ্যে আটটি ছবির নির্মাতা নারী। এটা কেবল শুরু, নিশ্চয়ই আমাদের আরও অনেকটা পথ পাড়ি দিতে হবে।

অনেকটা দৃঢ় কণ্ঠে গ্যাল গ্যাডট বলেন, 'যারা সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছেন। আপনাদের সবাইকে কথা দিচ্ছি, সত্য প্রকাশে আমি কখনো পিছপা হব না। একসঙ্গে এগিয়ে যাব, সমতার জন্য এক হয়ে কাজ করব।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে