রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

ঝলকে বছর শুরু কঙ্গনার

তারার মেলা রিপোর্ট
  ০৪ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

বলিউডের অভিনেত্রী কঙ্গনা রানৌত এমন একটি নাম বিতর্ক যার পিছু কখনোই ছাড়ে না। কিংবা কঙ্গনা নিজেই বিতর্ককে ছাড়তে চান না। তার সিনেমাকে দর্শক যেভাবেই নিক না নিক প্রতি বছরই তিনি কোনো না কোনো বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবেনই। এটাই যেন তার স্বভাবের বৈশিষ্ট্য। তারকা থেকে, সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিষয়সহ সবকিছুতেই নাক গলান তিনি।

সম্প্রতি ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় হামাস। জবাবে পাল্টা হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে দুই পক্ষে রক্তক্ষয়ী সংঘাত শুরু হয়। এই সংঘাত নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মতামত দিয়েছেন অনেক বলিউড তারকা। এর মধ্যে কঙ্গনা রানৌত। সংঘাত শুরু হওয়ার পর ইনস্টা স্টোরিতে কঙ্গনা রানৌত লিখেছিলেন, 'সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চোখ রাখতে পারছি না। ইসরায়েলের নারীরা যেভাবে জঙ্গিদের হাতে আক্রান্ত হচ্ছেন, সেসব দেখে আমি এতটাই ধাক্কা খেয়েছি যে, আমি ক্ষতবিক্ষত, আতঙ্কিত। এমনকি ধর্ষণের হাত থেকেও রেহাই পাচ্ছে না। আরেকটা ভিডিওতে দেখলাম...। আমি ভেঙে পড়েছি সেটা দেখে। ইসরায়েলের এমন পরিস্থিতিতে আমি সমব্যথী।' এ রকমভাবে আন্তর্জাতিক ইসু্য থেকে শুরু করে সব বিষয়েই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকতেই যেন পছন্দ করেন কঙ্গনা রানৌত। এসব কারণে তাকে ঠোঁটকাটা অভিনেত্রী বলেও খেতাব দেওয়া হয়েছে কঙ্গনাকে। তবে ঠোঁটকাটারা বেশিরভাগ সময় ইতিবাচক হলেও কঙ্গনাকে প্রায় সব সময়েই নেতিবাচক অবস্থানেই দেখা যায়।

কঙ্গনা ব্যক্তিগতভাবে নারীবাদী। তার বেশ কিছু সিনেমা আছে যেগুলোতে তার অভিনয় নারীবাদী দৃষ্টিকোণ থেকেই দেখা যায়। কুইন, তানু ওয়েডস মানু সিরিজ, সিমরান, মনিকর্নিকা বা পাঙ্গা- এরকম বেশ কিছু সিনেমায় এমন কেন্দ্রীয় চরিত্র আছে যেগুলোতে কঙ্গনাকে নায়কের ভূমিকায় দেখা গেছে। তার অনেক ছবিই ব্যবসায়িকভাবে চরম মার খেলেও এই ছবিগুলো ব্যবসায়িক সাফল্যের পাশাপাশি তার অনবদ্য অভিনয়ের জন্য ভালো প্রশংসা পেয়েছেন। এসব সিনেমার মাধ্যমে নায়ক প্রধান বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে কঙ্গনা একাই সিনেমা টেনে নিয়ে যাওয়ার যোগ্যতা দেখিয়েছেন।

এখন পর্যন্ত তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার নিজের ঝুলিতে ভরেছেন- যা তার সময়ের অন্য কোনো অভিনেত্রী পারেননি। কঙ্গনা রানৌত অভিনীত কিংবদন্তি তামিল অভিনেত্রী ও অসম্ভব জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ জয়ললিতার বায়োপিকে অভিনয় করেও তুমুল শোরগোল ফেলে দেন। যদিও 'থালাইভি' নামের এই সিনেমায় তার ফার্স্টলুক সমালোচিত হয়েছিল। তবে ছবিটি মুক্তির পর সব প্রশংসা যেন একাই কুড়িয়েছেন কঙ্গনা।

বলিউডে কঙ্গনার পদচারণা প্রায় দেড় যুগের কাছাকাছি। এ সময়ে সব ধরনের সিনেমায় তাকে দেখা গেছে। জটিল, চ্যালেঞ্জিং ব্যতিক্রমী ধর্মী রোলে অভিনয়ে তাকে সব সময়ে আগোয়ান মনে হয়েছে। অভিনেত্রী হিসেবে তার যোগ্যতা দিনে দিনে বিকশিত হয়েছে। অভিনয়ের পাশাপাশি ছবি পরিচালনাতেও মুন্সিয়ানার পরিচয় দিয়েছেন। পারিশ্রমিকের দিক থেকেও শীর্ষ অভিনেত্রীর কাতারে কঙ্গনা।

তবে বেশ কিছুদিন ধরে সময়টা ভালো যাচ্ছে না এই অভিনেত্রীর। বলিউডের যে কোনো অভিনেত্রীর তুলনায় বর্তমানে কঙ্গনা রানৌতের ঝুলিতে কাজের সংখ্যা বেশি হলেও বক্স অফিসে কিন্তু তার বাজার মন্দা। তার বহুল প্রত্যাশিত 'ধাকড়' বক্স অফিসে আশার আলো জ্বালাতে পারেনি। গত মাসে মুক্তি পাওয়া 'চন্দ্রমুখী-২ ছবিও রীতিমত ব্যর্থ। তবে দর্শককে লাগাতার ফ্লপ ছবি উপহার দিয়েও থেমে থাকেননি 'বলিউড কুইন' কঙ্গনা। এবার আরেক ছবি সিনেমা 'তজস' দিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে চান তিনি। আগামীকাল শুক্রবারই ভারত জুড়ে মুক্তি পাচ্ছে সিনেমাটি। ছবিটি নির্মাণের শুরু থেকেই আলোচনা শুরু হয় দর্শক ও বলিপাড়ায়। এই ছবিতে বায়ুসেনা বাহিনীর অফিসার তেজস গিলের চরিত্রে দেখা যাবে কঙ্গনাকে। সম্প্রতি দিলিস্নতে প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং বায়ুসেনা আধিকারিকদের জন্য ছবির বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিলেন এই অভিনেত্রী। নয়া দিলিস্নর ইন্ডিয়ান এয়ারফোর্স অডিটোরিয়ামেই চলে ছবির স্ক্রিনিং। প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর উপস্থিতি নিঃসন্দেহে বড় প্রাপ্ত ছিল টিম তেজাসের কাছে। এখানেই শেষ নয়, ডিফেন্স চিফ অনিল চৌহানও নিজের একটি ব্রোচ উপহার হিসেবে হাতে তুলে দেন ছবির পরিচালক সর্বেশ মেওয়রাকে- যা নিঃসন্দেহে বিরাট প্রাপ্তি।

নিজের নতুন ছবি নিয়ে প্রস্তুত বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রানৌত। এরই মধ্যে ছবিটি নিয়ে জোর প্রচারণা চালাচ্ছেন এই তারকা। এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে শেষ প্রচারণা। এরই মধ্যে গান্ধী জয়ন্তীতে প্রকাশ পেয়েছে ছবির টিজার। কয়েকদিন আগে অবমুক্ত করা হয় এর টেইলার। দেশপ্রেমে ভরপুর এই ছবি বক্স অফিসে ঝড় তুলবে বলে আশা করছেন অনুরাগীরা। টিজারে দেশের জন্য লড়াই করতে দেখা যাচ্ছে কঙ্গনাকে। এই ছবি যে অ্যাকশনে ভরপুর হতে চলেছে তা বলাই বাহুল্য। টিজারের শেষে ব্যবহৃত একটি সংলাপ নিয়ে চলছে নানান আলোচনা। তা হলো 'ভারত কো ছেড়োগে তো ছোড়েঙ্গে নেহি' অর্থাৎ ভারতকে উত্ত্যক্ত করলে ছাড় পাওয়া যাবে না।

জানা গেছে, ছবিটি নির্মিত হয়েছে ভারতের একজন পাইলটের অসাধারণ যাত্রাকে কেন্দ্র করে। এই ছবির লক্ষ্য প্রত্যেক ভারতীয়কে অনুপ্রাণিত করা। ছবিতে দেখানো হয়েছে কীভাবে ভারতের বিমান বাহিনীর পাইলটরা দেশকে রক্ষা করার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে এবং অসংখ্য চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করেন।

নির্মাতাদের কথায়, প্রত্যেক ভারতীয়র মধ্যে দেশাত্মবোধ জাগিয়ে তোলাই এই ছবির মূল উদ্দেশ্য। বায়ুসেনা অফিসাররা রাত-দিন নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশকে রক্ষা করার কাজে সর্বস্ব উজার করে দেন, তাদের নিয়ে যেন গোটা গর্ববোধ করে।

দীর্ঘ সময় ধরে ঝুলে ছিল কঙ্গনার এই ছবিটি। শুরুতে ২০২০ সালে মুক্তির কথা ছিল এই ছবির, কিন্তু বারবার মুক্তি পিছিয়েছে। অবশেষে আগামীকালই আলোর মুখ দেখছে ছবিটি। এখন দেখার বিষয়, দর্শক মহলে কতটা গ্রহণযোগ্যতা পায় তেজস আর কঙ্গনাই বা কতটুকু ঘুরে দাঁড়াতে পারেন!

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে