মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২

ইসলামে প্রাইভেসির মর্যাদা: একটি মৌলিক শিক্ষা

যাযাদি ডেস্ক
  ১৬ জুন ২০২৫, ১৭:৪৯
ইসলামে প্রাইভেসির মর্যাদা: একটি মৌলিক শিক্ষা
ছবি: সংগৃহীত

ইসলামে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা বা প্রাইভেসি এতটাই পবিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ যে—even যদি আপনি নিজ চোখে একটি জঘন্য অপরাধ, যেমন ব্যভিচার, ঘটতে দেখেন, তবুও কাউকে বলার অধিকার আপনার নেই—যদি না আপনার সাথে আরও তিনজন ন্যায়পরায়ণ, প্রাপ্তবয়স্ক, বিশ্বাসযোগ্য ব্যক্তি একই ঘটনাটি একই সময় প্রত্যক্ষ করে।

তবে এতেও শেষ নয়। এই চারজন ব্যক্তি যদি সত্যিই ঘটনাটি একসাথে দেখেও থাকেন, তাহলেও তারা পাবলিকলি কিছু বলবেন না। তাদের কাজ হলো কেবল আদালতে যথাযথ সাক্ষ্য প্রদান করা, বিচার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে। যদি আদালতে তাদের সাক্ষ্য সামান্যতম অস্পষ্ট হয় বা চারজনের একজনও দ্বিধায় পড়ে যান, তাহলে অভিযুক্ত নয়, এই চারজন প্রত্যক্ষদর্শীকেই ৮০ বেত্রাঘাতের শাস্তি (হাদ্দে কাযফ) ভোগ করতে হবে।

1

কেন এত কঠোরতা?

কারণ ইসলাম চায় না—মানুষের ব্যক্তিগত জীবন হুমকির মুখে পড়ুক, কারো সম্মান অপবাদে বিনষ্ট হোক, বা সমাজে পাবলিক শেইমিং ও নৈতিক লাঞ্চনার সংস্কৃতি গড়ে উঠুক। ইসলামের দৃষ্টিতে কেউ গোপনে পাপ করলেও তা ফাঁস করা বা প্রচার করা পাপের চেয়েও বড় পাপ হতে পারে—যদি সেটি সমাজে ফিতনা, বিভ্রান্তি বা চরিত্রহননের হাতিয়ার হয়ে দাঁড়ায়।

⚖️ ইসলাম অপরাধ ঢেকে রাখে না—কিন্তু জুলুমের দরজাও খুলে দেয় না

ইসলাম অপরাধকে উৎসাহিত করে না। বরং যদি অপরাধ প্রমাণিত হয়, তাহলে তা বিচার ও শাস্তির মাধ্যমে দমন করে। কিন্তু অপরাধের সন্দেহ বা অস্পষ্ট অভিযোগ দিয়ে কাউকে সামাজিকভাবে ধ্বংস করার অনুমতি ইসলাম কখনোই দেয় না।

এই কারণেই ইসলামে ব্যভিচারের মতো গুরুতর অভিযোগ প্রমাণে এমন একটি শর্ত আরোপ করা হয়েছে—যেটি বাস্তবে প্রায় অসম্ভব, যাতে এই অভিযোগকে কেউ রাজনৈতিক হাতিয়ার, ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা, বা সামাজিক নিন্দার ছুরি হিসেবে ব্যবহার না করতে পারে।

???? অপবাদ যত ছড়ায়, তত সমাজ বিষাক্ত হয়

ইসলাম চায়, সমাজে নৈতিক শুদ্ধতা বজায় থাকুক। এমন কোনো পরিবেশ না তৈরি হোক যেখানে মানুষ একে অপরের চরিত্র নিয়ে সন্দেহ করে, পেছনে কথা বলে, বা বিচার না করেই রায় দিয়ে দেয়। কারণ, এসবের ফলেই নতুন করে অপরাধ জন্ম নেয়, নৈতিক অধঃপতন ঘটে।

ইসলামের ন্যায়বিচারের সৌন্দর্য এখানেই—সে দোষীকে শাস্তি দেয়, কিন্তু অপরাধ প্রমাণের আগে কাউকে অপমান করতে দেয় না। সমাজে যেন সম্মান, সততা আর ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হয়—সেই লক্ষ্যে ইসলামী শরিয়াহ প্রত্যেক ব্যক্তির প্রাইভেসি ও মর্যাদাকে আল্লাহর দেয়া একটি অধিকার হিসেবে দেখে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে