পানির অপর নাম জীবন। আমরা সব সসময় জেনেছি, সুস্থ থাকতে হলে বেশি বেশি পানি পান করতে হবে। কিন্তু অতিরিক্ত পানি পান করলেও তা ক্ষতির কারণ হতে পারে। দৈনিক আট গ্লাস পানি পান করতে হবে।
তবে সবার জন্য এই পরিমান সমান নয়। প্রতিদিন কতটুকু পানি পান করবেন তা নির্ভর করে আপনার পারিপার্শ্বিক অবস্থা এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উপর।
ওভারহাইড্রেশন বা পানির নেশা কী
আমাদের শরীরে পানি গ্রহণের একটি নির্দিষ্ট মাত্রা থাকে। যখন অল্প সময়ে অতিরিক্ত পানি পান করা হয় তখন তাকে ওভারহাইড্রেশন বলা হয়।
এই অবস্থা পানির বিষক্রিয়া হিসেবে পরিচিত। অত্যধিক পরিমাণে পানি পান রক্ত প্রবাহে জলের পরিমাণ বাড়ায়। রক্তে ইলেক্ট্রোলাইট বিশেষ করে সোডিয়ামের ঘনত্বকে পাতলা করতে পারে। যখন রক্তে সোডিয়াম ১৩৫ মিলিমোলস প্রতি লিটারের নীচে নেমে যায়, তখন চিকিৎসা বিদ্যায় এই অবস্থাটিকে হাইপোনাট্রেমিয়া বলা হয়।
শরীরের কোষের ভিতরে এবং বাইরে তরল ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য সোডিয়াম অপরিহার্য। অত্যধিক পানি খাওয়ার ফলে সোডিয়ামের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়, তখন তরলগুলি বাইরে থেকে কোষের অভ্যন্তরে প্রবাহিত হয়। এর ফলে মস্তিষ্কে প্রভাব পরে। যা বিপদজনক এবং সম্ভাব্য জীবন হুমকির কারণ।
ওভারহাইড্রেশনের লক্ষণ
১. বমি বমি ভাব এবং বমি
পানির নেশার প্রথম লক্ষণগুলির মধ্যে একটি হল বমি বমি ভাব বা বমি হতে পারে।
২. মাথাব্যথা
রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা কমে যাওয়ায় মাথাব্যথা হতে পারে, যা অস্বস্তি এবং কষ্টের কারণ হতে পারে।
৩. ফোলাভাব
অতিরিক্ত জল খাওয়ার ফলে কোষগুলি ফুলে যেতে পারে, যা শোথ রোগের দিকে পরিচালিত করে। শোথ রোগের ফলে হাত, পা এবং গোড়ালি সহ শরীরের বিভিন্ন অংশ ফুলে যায়।
৪. পেশী দুর্বলতা
কম সোডিয়াম মাত্রা পেশী ক্র্যাম্প এবং দুর্বলতা প্ররোচিত করতে পারে, শারীরিক কর্মক্ষমতা ব্যাহত করতে পারে।
৫. ক্লান্তি
অতিরিক্ত হাইড্রেশন গভীর ক্লান্তি এবং অলসতাকে প্ররোচিত করতে পারে।
৬. বিভ্রান্তি
হাইপোনাট্রেমিয়ার ফলে মস্তাষ্ক প্রভাবিত হয় যার ফলে বিভ্রান্তি এবং গুরুতর ক্ষেত্রে খিঁচুনি হয়।
দৈনিক কতটুকু পানি পান করতে হবে
পুরুষ ও নারীদের ক্ষেত্রে সাধারণত দৈনিক পানির চাহিদা কিছুটা আলাদা। পুরুষদের ক্ষেত্রে দৈনিক ৩.৭ লিটার ও নারীদের ২.৭ লিটার প্রয়োজন। সাধারণভাবে মূত্রের রং স্বচ্ছ বা হালকা হলুদ হলে ধরে নেওয়া যায়, দেহে পানির পরিমাণ পর্যাপ্ত আছে। তবে ব্যক্তি, স্থান ও আবহাওয়াভেদে এই হিসাব কিছুটা বদলে যেতে পারে। তাই দৈনিক কতটা পানি পান করতে হবে তা নিয়ে সংশয় থাকলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
সূত্র : দ্য ওয়েলনেস কর্ণার
যাযাদি/ এসএম