শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বর্তমান সরকারের সময় ফুরিয়ে এসেছে: মির্জা ফখরুল

যাযাদি ডেস্ক
  ০৮ আগস্ট ২০২২, ২১:১২
ফাইল ছবি

বর্তমান সরকারের সময় ফুরিয়ে এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার (৮ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী যুব দলের সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।

ফখরুল বলেন, 'আজকের এই যুব সমাবেশে জনসমাগমের মধ্য দিয়ে এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, তাদের (সরকার) দিন ফুরিয়ে এসেছে, তাদের পক্ষে আর সম্ভব হবে না। বাংলাদেশে যুব সমাজ জেগে উঠেছে। আমরা বিশ্বাস করি যুবকদের এই আত্মত্যাগ (ভোলার আবদুর রহিম ও নুরে আলম) এর মধ্য দিয়ে, তাদের দুর্বার গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে এদেশকে তারা আবার মুক্ত করবে।'

দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ লুটের অভিযোগ তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, 'এই সরকার টিকে আছে মানুষকে প্রতারণা করে। আজকের জ্বালানি সংকট, অর্থনৈতিক সংকট, আজকের বিদ্যুতের লোডশেডিং, বিদ্যুতের সংকট সব কিছুর মূল্যে হচ্ছে এই সরকারের দুর্নীতি, চরম দুর্নীতি। আপনারা দেখেছেন যে, কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টের নামে তারা কীভাবে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করেছে এবং তাদের নিজস্ব লোকজনদের তারা মুনাফা পাইয়ে দিয়েছে।'

তিনি বলেন, 'গত ৭ বছরে এদেশ থেকে রপ্তানি হয়েছে এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরোর যে হিসাব সেই হিসাব অনুযায়ী ২৭০ দশমিক ৮১ মিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকে তার হিসাব আছে ২৩৯ দশমিক ৯৬ মিলিয়ন ডলার। বাকি ৩০ দশমিক ৪০ মিলিয়ন ডলার কোথায় গেল? আজকে জাতি এটা জানতে চায়। এটা একটা বিরাট শুভঙ্করের ফাঁকি, বিরাট একটা লুটের চিত্র। এই লুট ও চুরি যে শুরু হয়েছে এই লুট ও চুরি করে তারা এ দেশকে ফোকলা করে দিয়েছে।'

এ ছাড়া জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে কর্মসূচি সম্পর্কে ফখরুল বলেন, 'জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি, বিদ্যুতের লোডশেডিং এবং সব পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিএনপি ১১ আগস্ট রাজধানীর নয়া পল্টনের কার্যালয়ের সামনে দুপুর ২টায় প্রতিবাদ সমাবেশ করবে এবং ১২ আগস্ট সারাদেশে মহানগর ও জেলা পর্যায়ে প্রতিবাদে সমাবেশ হবে। এরপরে আমরা আরও বৃহত্তর কর্মসূচির দিকে এগিয়ে যাব এবং এই ভয়াবহ দানবীয় সরকারের পতন তরান্বিত করব।'

গত ৩১ জুলাই ভোলার সমাবেশে পুলিশের গুলিতে স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুর রহিম ও ছাত্র দলের নুরে আলমের মৃত্যু এবং জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী যুব দলের উদ্যোগে এই সমাবেশ হয়। বিকেল ৩টায় শুরু হয়ে সমাবেশটি শেষ হয় ৫টায়। রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী এই সমাবেশে অংশ নেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, 'এই সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে না। এখন শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র। যদি বিএনপি শক্তভাবে রাস্তায় দাঁড়িয়ে যায় এই সরকার এক মিনিট ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে না। আমাদের সবাইকে রাজপথে থাকতে হবে। আমাদের সীমানা আটকিয়ে গেছে, প্রেসক্লাব-বিএনপি অফিস। এর বাইরে যদি আমরা না যেতে পারি তাহলে কখনোই আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করা যাবে না। আমাদেরকে এর বাইরে বেরিয়ে আসতে হবে, আমাদেরকে মিছিলে নামতে হবে, আমাদেরকে হরতালে যেতে হবে, আমাদেরকে অবরোধে যেতে হবে- তাহলে সরকারের পতন ঘটবে, নইলে এই সরকারের পতন ঘটবে না। অনেক কথা বললাম। অনেক চাল্লু হয়ে গেছে আমার বিরুদ্ধে আবারও। আর কিছু বলতে চাই না। ইনশাল্লাহ রাজপথে আপনাদের সঙ্গে দেখা হবে।'

স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, 'কর্মসূচিতে আমরা যদি হার্ড লাইনে না যাই এবং সরকারকেও আমরা আমাদের শক্তি প্রদর্শন না করি তাহলে সরকার সরকারের জায়গা থাকবে আর আমরা জনসভা করব, অগণিত মামলায় জর্জরিত হব। কিন্তু আমরা সরকার পতন ঘটাতে পারবো না। আমি এখনো মনে করি, রাজপথে আন্দোলনে থাকার মতো শক্তি সাহস আমরা আছে, আমরা যখন আছে প্রত্যেকেরই আছে। আমরা কেউ কাপুরুষ নই। সেজন্য বলছি, আমাদের এই যে গণতান্ত্রিক যে কর্মসূচি, এই কর্মসূচির বাইরে গণতন্ত্র ও সংবিধানসম্মতভাবে অনেক কর্মসূচি আছে, যে কর্মসূচি আমরা রাজপথে দিলে সরকারের বুক কেঁপে উঠবে। সেখানেই আমাদের যেতে হবে।'

যুব দলের সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্নার পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন বিএনপির আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, আবদুস সালাম আজাদ, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কামরুজ্জামান রতন, সাইফুল আলম নিরব, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, মহানগর বিএনপির রফিকুল আলম মজনু, আমিনুল হক, ইশরাক হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, কৃষক দলের শহিদুল ইসলাম বাবুল, ছাত্র দলের কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ, যুব দলের মামুন হাসান, নুরুল ইসলাম নয়ন, কামরুজ্জামান দুলাল, শফিকুল ইসলাম মিল্টন, গোলাম মওলা শাহিন ও ইসাহাক সরকারসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।

যাযাদি/ এসএইচ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে