পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে ক্ষমতায় আসতে আওয়ামী লীগের যে ২১ বছর লেগেছে, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, বিএনপির আন্দোলন সফল না ব্যর্থ, তা নিয়ে আওয়ামী লীগ কথা বলতে পারে না।
তিনি বলেন, তারা (আওয়ামী লীগ) আমাদের বলে যে, আন্দোলনে আর পারতেছি না। কয় বছর হয়েছে? বিএনপি ক্ষমতার বাইরে ১৭ বছর। আরও ১০ থেকে ১২ বছর আগে থেকে বলতেছে- বিএনপির কোমর ভাঙা, আন্দোলন করতে পারে না। তারা ২১ বছর পর ক্ষমতায় এসেছে। তাদের কি কোমর ভাঙা ছিল, না সোজা ছিল? যাদের ২১ বছর লাগে ক্ষমতায় আসতে তাদের এই অভিযোগ করার কোনো অধিকার নেই যে, বিএনপি পারে না। ২২ বছরের সময়ে যেন বলে, তার আগে না।’
শুক্রবার সকালে রাজধানীর গোপীবাগে বিএনপি নেতা ইমতিয়াজ আহমেদ বুলবুলের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নজরুল।
দলের আন্দোলন প্রসেঙ্গ তিনি বলেন, ‘আমরা যুগপৎ আন্দোলন করছি, সেই যুগপৎ আন্দোলন এখনো চলছে। আমরা পরিবর্তন চাই এবং বিশ্বাস করি এই পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী, অবশ্যই হবে ইনশা আল্লাহ।
‘রাজনৈতিক কর্মসূচি বিভিন্ন সময়ের দাবিতে বিভিন্ন ধরনের হয়। আমরা অনেক আন্দোলনে বিজয়ী হয়েছি, স্বৈরাচারী এরশাদ পতনের আন্দোলনে আমরা বিজয়ী হয়েছি, ১/১১ সরকার জরুরি অবস্থার মধ্যে নির্বাচন করতে চেয়েছিল, আমাদের বাধার মুখে পারেনি।’
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য চেষ্টা করছি। এই বিএনপি বাকশালের গোরস্তানের ওপর বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। এই বিএনপি সামরিক স্বৈরশাসনের অবসানে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। কাজেই এই বিএনপি ইনশা আল্লাহ আগামীদিনে আবারও বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করবে।’
কারাবন্দি অবস্থায় মারা যাওয়া বিএনপি নেতা ইমতিয়াজ আহমেদ বুলবুলের বাসায় তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন নজরুল ইসলাম। বুলবল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য ছিলেন। তার মৃত্যুর ঘটনাকে ‘হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে বর্ণনা করে ওই ঘটনার বিচার দাবি করেন নজরুল।
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমরা বলব, যে কোনোভাবে হোক ক্ষমতা দখল করে বসে আছেন। আপনারা সুশাসন দেন। এভাবে কোনো বোন, এভাবে কোনো ভাই যেন আর্তনাদ না করে। কেউ অপরাধ করলে নিশ্চয় তার শাস্তি হবে, কিন্তু এটা কী? অত্যাচার-নিপীড়ন এভাবে চলতে পারে না। যদি চলত, মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হতো না। যদি অত্যাচারীরা চিরদিন অত্যাচার করতে পারত, তাহলে ফেরাউন-নমরুদের পতন হতো না, হিটলার-মুসোলিনির পতন হতো না। তাদের নিশ্চয় পতন হয়েছে এবং যারা মজলুম তাদের ওপর যে নিপীড়ন করা হয়েছে এর বিচার হবে। আমরা তাদের রক্তের বিনিময়, তাদের প্রাণের বিনিময় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করব ইনশা আল্লাহ।’
যাযাদি/ এসএম