মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঘুড়ি উৎসবে রঙিন ফুলপুরের আকাশ 

শাহ্ নাফিউল্লাহ সৈকত, ফুলপুর (ময়মনসিংহ)
  ১৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৮:৩০
ছবি : যায়যায়দিন

রবিবার বিকেল ও সন্ধ্যাটা ফুলপুরবাসীর জন্য ছিল অন্যরকম। এদিন উৎসবের ঘুড়িতে রঙিন হয়েছে সবুজ মেলা মাঠের আকাশ। আনন্দ, উচ্ছ্বাসে কেটেছে বিকেল থেকে সন্ধ্যা। সব বয়সী মানুষের পদচারণায় মুখরিত হয়েছে এ মাঠ। বহু বছর পর সবুজ মেলার মাঠে ঘুড়ি উড়িয়ে যেন শৈশবে ফিরে গেলেন ইউএনও এ. বি. এম. আরিফুল ইসলাম।

যেদিকে চোখ যায় মানুষ আর মানুষ। শিশু, তরুণ-তরুণী, নারী-পুরুষসহ সব বয়সী শতশত মানুষের ঢল নেমেছিল সবুজ মেলার মাঠে। আকাশের দিকে তাকালেই দেখা যাচ্ছিল নানা আকারের ও রঙের ঘুড়ি। দেখে মনে হচ্ছিল, আকাশে রঙিন পাখি উড়ছে।

রবিবার (১৪ এপ্রিল) বিকেলে ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার ছনকান্দা বাজার ঐতিহ্যবাহী সবুজ মেলার মাঠে বিভিন্ন সংগঠন'র মাধ্যমে এ ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন করা হয়। ‘চলো হারাই শৈশবে’ স্লোগানে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে ঘুড়ি উৎসব এর আয়োজন করা হয়।

ঘুড়ি উৎসবের উদ্বোধন করেন ফুলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ. বি. এম. আরিফুল ইসলাম।

শুভসংঘ উপজেলা শাখার উপদেষ্টা ও সিনিয়র সাংবাদিক মোস্তফা খান বলেন, সন্তানদের নিয়ে আসি ঘুড়ি উৎসবে। নিজে ঘুড়ি উড়াই, ছেলে মেয়েরাও ঘুড়ি উড়ায় খুবই ভালো লাগে।

যায়যায়দিন ফ্রেন্ডস ফোরাম উপজেলা শাখার সদস্য তানভীর আহমেদ বলেন, গতকাল ঘুড়ি বানিয়েছি উড়াবো বলে। ঘুড়ি নিয়ে এসেছি, উড়িয়েছি খুব ভালো লেগেছে। ঘুড়ি উড়ানোর সময় শৈশবের কথা খুব মনে পড়ে যায়। আলাদা একটা ভালোলাগা অনুভব করি।

যুব ফোরাম ফুলপুর উপজেলা শাখার যুগ্ম আহবায়ক ফারজানা আক্তার বলেন, বিকেলে ঘুড়ি উড়িয়ে আনন্দ করেছি। ভালো একটা দিন কাটল। বন্ধু-বান্ধবীদের সাথে এসেছি, সবাই খুব মজা করেছি।

ফুলপুর সাইক্লিস্টস এন্ড হেল্প পয়েন্টের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান সুজন বলেন, এধরনের উৎসব একেবারেই হারিয়ে গেছে। এই আয়োজন প্রতিবছর হোক প্রত্যাশা করি। ঘুড়ি উৎসবে বিভিন্ন বয়সী মানুষের ঢল নেমেছে। অনেকে ঘুড়ি বানিয়ে নিয়ে এসে উড়িয়ে অনেক আনন্দ করেছে।

ইউএনও এ. বি. এম. আরিফুল ইসলাম বলেন, গ্রাম বাংলার ঐহিত্য ঘুড়ি উৎসব হারিয়ে যেতে বসেছে। ঘুড়ি উৎসবের পাশাপাশি গ্রাম বাংলার আরও বেশ কিছু ঐতিহ্য হারিয়ে যেতে বসেছে, সেগুলোও ফিরিয়ে আনতে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। আগামীতে ঘুড়ি উৎসবের পাশাপাশি গ্রামীণ মেলারও আয়োজন করা হবে। এই ঘুড়ি উৎসবের যারা অংশগ্রহণ করেছে তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। প্রতিবছরই এধরনের আয়োজন যাতে করা হয়, সব ধরনের সহযোগিতা আমরা করব।

তিনি আরও বলেন, ঘুড়ি শুধু ঘুড়ি নয়, ঘুড়ি আমাদের একটি স্বপ্ন। আমাদের হারিয়ে যাওয়া শৈশবের স্বপ্ন। আমাদের সকল কল্পনাকে নিয়ে ঘুড়ি যখন আকাশে উড়ে বেড়ায়, আমরা শুধু তাকিয়ে থাকি না, আমরা উপভোগ করি। এ সৌন্দর্য ফুলপুরবাসীর মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখতে ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। শৈশবের স্মৃতি ফিরিয়ে আনতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। ঘুড়ি উৎসবে বিভিন্ন সংগঠন অংশগ্রহণের মধ্যে তিনটি সংগঠনকে বিজয়ী ঘোষণা করে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। প্রথম স্থান অধিকার করে ফুলপুর এমবিশন রেসিন্ডেসিয়াল মডেল স্কুল, দ্বিতীয় স্থান শুভসংঘ ফুলপুর উপজেলা শাখা ও তৃতীয় স্থান ফুলপুর সাহিত্য পরিষদ।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে