রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
'আইনের কিছু ধারা অবৈধ'

পাকিস্তানে দুর্নীতিবাজ নেতাদের বিচার চলবে : সুপ্রিম কোর্ট

যাযাদি ডেস্ক
  ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০
প্রধান বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়াল

বিদায় নেওয়ার দুই দিন আগে দুর্নীতি-বিরোধী সংস্থার 'আইন সংশোধনের' আলোচিত মামলার রায় দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়াল। আর এই রায়ে সংশোধিত আইনের কিছু ধারাকে অবৈধ ঘোষণা করে সেগুলো বাতিল করে দিয়েছেন তিনি। সংবাদসূত্র : ডন, জিও টিভি

গত বছর পাকিস্তানের দুর্নীতি-বিরোধী সংস্থা 'ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি বু্যরো'র (ন্যাব) আইনে সংশোধনী আনা হয়। আইন সংশোধনের পর সরকারের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি, রাজনীতিবিদ ও অন্য উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে করা দুর্নীতির মামলাগুলো তুলে নেওয়া হয়। এরপর গত বছরের জুনে এই আইন সংশোধনের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দায়ের করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তার সেই পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতেই শুক্রবার আইনের সংশোধিত ধারাগুলো বাতিল করে দেয় প্রধান বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়ালের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের বেঞ্চ।

সংশোধনী ধারা বাতিল করে দেওয়ার অর্থ হলো- পাকিস্তানের বড় রাজনৈতিক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ ছিল এবং যেগুলো বাতিল করে দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো আবারও দুর্নীতি-বিরোধী আদালতে ফিরে যাবে। আর এর মাধ্যমে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও মুসলিম লিগ-এন এর নওয়াজ শরিফ, পিপিপি'র সহ-সভাপতি আসিফ আলি জারদারি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানির মতো ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাগুলো সচল হবে।

অবশ্য তিন বিচারপতির মধ্যে একজন সংশোধিত আইনের ধারা বাতিল করে দেওয়ার বিপক্ষে রায় দিয়েছেন। কিন্তু দুইজন পক্ষে রায় দেওয়ায় এটি বাতিল হয়ে গেছে। আদালত তার রায়ে বলেছে, আইন পরিবর্তন করার পর যেসব মামলা বাতিল করা হয়েছে, সেগুলো আবারও পুনর্স্থাপন করতে হবে, সঙ্গে যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত চলছিল সেগুলোও আবার শুরু করতে হবে। এ ছাড়া ৫০০ মিলিয়ন রুপির কম যেসব দুর্নীতি মামলা বাতিল করা দেওয়া হয়েছিল, সেগুলোও আবার সক্রিয় করতে হবে এবং এক সপ্তাহের মধ্যে এসব মামলা দুর্নীতি-বিরোধী আদালতে নিয়ে আসতে হবে। এ ছাড়া আইন সংশোধনের পর যেসব মামলার রায় দেওয়া হয়েছিল, সেগুলোও বাতিল করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আদালত রায়ে আরও বলেছে, ন্যাবের আইনে যেসব সংশোধনী আনা হয়েছিল, সেগুলোর কয়েকটি সংবিধান-বিরোধী ছিল।

উলেস্নখ্য, ন্যাবের এই আইনের বিভিন্ন ধারায় পরিবর্তন আনা হয়েছিল। যার মধ্যে উলেস্নখযোগ্য হলো- ন্যাব চেয়ারম্যানের মেয়াদ এবং বিচারকদের মেয়াদ তিন বছরে নামিয়ে আনা, ৫০০ মিলিয়নের বেশি দুর্নীতির মামলাগুলোর ক্ষেত্রে ন্যাবের বিচারিক ক্ষমতা রহিত করা, সব তদন্ত, মুলতবি অনুসন্ধান এবং বিচারিক সব বিষয় প্রাসঙ্গিক কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো, সব মামলার রায় এক বছরের মধ্যে ঘোষণা করা।

ইমরান খান দাবি করেছিলেন, এই আইনে সংশোধনী আনা হয়েছিল, দুর্নীতিবাজ ও বড় ব্যক্তিদের দুর্নীতির অভিযোগ থেকে রেহাই দেওয়ার জন্য। এ কারণে এই সংশোধনীর বিরুদ্ধে পিটিশন করেছিলেন তিনি। তার এই পিটিশনের ওপর সুপ্রিম কোর্টে ৫৩ বার শুনানি হয়। এরপর গত ৫ সেপ্টেম্বর প্রধান বিচারপতি বান্দিয়াল জানান, তারা এ নিয়ে একটি রায়ে উপনীত হয়েছেন এবং অবসর নেওয়ার আগে এই মামলার রায় ঘোষণা করবেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে