রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
লুলায় প্রত্যাশা বাড়ছে

পৃথিবীর 'ফুসফুস' বাঁচানোর নতুন সংগ্রাম

আমাজন রেইনফরেস্ট ৬০ শতাংশ এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। আর এই এলাকা যুক্তরাজ্যের মোট আয়তনের চেয়ে ২৩গুণ বড়। এর বিশেষত্ব হলো- সেখানকার জীববৈচিত্র্য। এখানে প্রায় ৪০০ বিলিয়ন গাছ এবং ১৬ হাজার প্রজাতির গাছ রয়েছে। এ ছাড়া ৪০০টিরও বেশি প্রজাতির পাখি এখানে পাওয়া যায়। আমাজনে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জীববৈচিত্র্য রয়েছে। আমাজন বন উজাড় বন্ধ করা না হলে সেখানকার বেশিরভাগ জীববৈচিত্র্য বিলুপ্ত হয়ে যাবে। আমাজনের জীববৈচিত্র্যের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি আসে মাংস উৎপাদনের জন্য বাণিজ্যিক পশুপালন ও সয়াবিন চাষ থেকে...
যাযাদি ডেস্ক
  ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০
আমাজন বনে একজন আদিবাসী -ফাইল ছবি

আমাজন হলো পৃথিবীর সবচেয়ে বড় রেইনফরেস্ট; যাকে পৃথিবীর ফুসফুস বলেও ডাকা হয়। চলতি বছরের এপ্রিলে ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় জড়ো হন আমাজনের ছয় হাজারের বেশি আদিবাসী। তারা দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট লুইস ইনাসিও লুলা দ্য সিলভাকে আমাজন বন ও আদিবাসী ভূমি রক্ষায় তার নির্বাচনী প্রতিশ্রম্নতি পূরণে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। এর আগে ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারো আমাজনের জমিতে চাষাবাদ, খনি ও বন উজাড়ের অনুমোদন দিয়েছিলেন।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট লুলার মেয়াদের প্রথম ছয় মাসে বন উজাড় কমেছে ৩৩ শতাংশ। তবে অনেক আদিবাসী নেতা চান, লুলা আরও ব্যাপক পদক্ষেপ নিন, যাতে বন উজাড় পুরোপুরি বন্ধ হয়। তারা চান, সরকার তাদের বন ও জমি রক্ষায় তাদের সঙ্গে কাজ করুক।

ব্রাজিলের আদিবাসী

পেদ্রো জারিনো সাও পাওলো বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞানের অধ্যাপক এবং আমাজনের আদিবাসী বাসিন্দাদের ইতিহাস সম্পর্কে জ্ঞাত। তিনি বলেন, ষোড়শ শতাব্দীর গোড়ার দিকে যখন ইউরোপীয় উপনিবেশবাদীরা লাতিন আমেরিকায় প্রথম এসেছিল, তখন ব্রাজিলে আদিবাসীদের জনসংখ্যা ছিল এক কোটির বেশি। বর্তমানে আদিবাসী জনসংখ্যা মাত্র ১৬ লাখ, যা ব্রাজিলের জনসংখ্যার একটি ক্ষুদ্র অংশ। পেদ্রো জারিনো বলেন, এখন আদিবাসীরা ব্রাজিলের জনসংখ্যার এক শতাংশেরও কম। যদিও তারা সারাদেশে ছড়িয়ে আছেন, তাদের বেশিরভাগই আমাজন অববাহিকা অঞ্চলে বাস করেন। এই আদিবাসীরা ৩০০টিও বেশি ভাষায় কথা বলেন।

তিনি বিশ্বাস করেন, ইউরোপীয়দের আগমনের পরপরই আদিবাসীদের জনসংখ্যা হ্রাস পেতে শুরু করে। তিনি বলেন, আদিবাসীদের শোষণ শুরু হয় ঔপনিবেশিকতার শুরু থেকেই। তাদের জমি দখল করা হয়েছিল এবং তাদের দাস বানানো হয়েছিল। পর্তুগিজরা দেশের আরও বেশি অঞ্চল দখল করার সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয়দের অবস্থা আরও খারাপ হয়েছিল। শিল্পায়নের পর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। এর একটি কারণ ছিল, মোটরযান আবিষ্কারের পর বিশ্বে রাবারের চাহিদা বৃদ্ধি। তিনি বলেন, রাবার শিল্পের কারণে মানাউস ও অন্যান্য অনেক শহর ধনী হয়ে ওঠে। কারণ এখান থেকে রাবার রপ্তানি শুরু হয়েছিল। রাবার উৎপাদনের জন্য স্থানীয়দের দাস হিসেবে কাজ করতে বাধ্য করা হয়েছিল। কিন্তু রাবারের চাহিদা কমে যাওয়ার পর আরেকটি সমস্যা দেখা দেয়। খনির সংস্থাগুলো সোনার সন্ধানে আমাজন অববাহিকায় আসতে শুরু করে।

পেদ্রো জারিনোর মতে, খনি উত্তর আমাজোনিয়ার ইয়ানোনামি সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি এবং অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলেছিল। পূর্ববর্তী সরকারগুলো তা থামানোর চেষ্টা করেনি। কিন্তু প্রেসিডেন্ট লুলার সরকার খনি শ্রমিকদের সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়ার পদক্ষেপ নিয়েছে। সুতরাং এই মুহূর্তে সেখানকার পরিস্থিতি আগের চেয়ে ভালো।

ব্রাজিলের আদিবাসীরা কয়েক শতাব্দী ধরে তাদের ঐতিহ্যবাহী প্রাকৃতিক পদ্ধতির মাধ্যমে আমাজন রেইনফরেস্ট রক্ষা করেছিল। কিন্তু ব্রাজিল সরকারের নীতি আদিবাসীদের অস্তিত্ব ও সংস্কৃতিকে হুমকির মুখে ফেলেছে। পেদ্রো জারিনো বলেন, প্রাচীনকাল থেকেই স্থানীয়দের এই বন সংরক্ষণের জ্ঞান রয়েছে। তারা জানেন, কীভাবে বনের ক্ষতি না করে এর সুবিধা নিতে হয়। তিনি বলেন, 'আমাজনের নিজ গ্রামে গেলে এমন অনেক খাবার পাবেন, যা ব্রাজিলের শহুরে এলাকায় পাওয়া যায় না। উদাহরণস্বরূপ বিভিন্ন ধরনের আলু ও কলার কথা বলা যায়। সেখানকার লোকেরা বিভিন্ন ধরনের খাদ্যসামগ্রী তৈরি করছেন এবং তারা বনের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন ও বন সংরক্ষণের উপায় জানেন, যাতে জীববৈচিত্র্য বজায় থাকে। পাশ্চাত্য বিজ্ঞানের কাছে এ ধরনের তথ্য নেই। পেদ্রো জারিনো বলেন, আজ যখন বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পরিবেশ হুমকির সম্মুখীন, তখন আমাজন এবং এর আদিবাসীদের মতো রেইনফরেস্ট রক্ষার প্রাকৃতিক পদ্ধতি এবং বন সংরক্ষণের তথ্য সংরক্ষণ করা আরও বেশি প্রয়োজন।

আমাজনে ৪০ হাজার কোটি গাছ, ১৬ হাজার প্রজাতি

যুক্তরাজ্যের 'ইউনিভার্সিটি অব ইস্ট অ্যাংলিয়ার কনজারভেশন বায়োলজি'র অধ্যাপক কার্লোস পেরেজ ব্রাজিলের আমাজন অঞ্চলে বেড়ে উঠেছেন এবং এখনো আমাজন রেইনফরেস্ট সংরক্ষণে অনেক সময় ব্যয় করেন। তিনি বলেন, আমাজন রেইনফরেস্ট ৬০ শতাংশ এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। আর এই এলাকা যুক্তরাজ্যের মোট আয়তনের চেয়ে ২৩গুণ বড়। এর বিশেষত্ব হলো- সেখানকার জীববৈচিত্র্য। এখানে প্রায় ৪০০ বিলিয়ন গাছ এবং ১৬ হাজার প্রজাতির গাছ রয়েছে। এ ছাড়া ৪০০টিরও বেশি প্রজাতির পাখি এখানে পাওয়া যায়। আমাজনে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জীববৈচিত্র্য রয়েছে। আমাজন বন উজাড় বন্ধ করা না হলে সেখানকার বেশিরভাগ জীববৈচিত্র্য বিলুপ্ত হয়ে যাবে। আমাজনের জীববৈচিত্র্যের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি আসে মাংস উৎপাদনের জন্য বাণিজ্যিক পশুপালন ও সয়াবিন চাষ থেকে। কার্লোস পেরেজ বলেন, আগে আমাজনে বন উজাড় করে পরিষ্কার করা জমিতে পশুপালন করা হতো, কিন্তু গত কয়েক বছরে তা তেমন লাভজনক হয়নি, তাই মানুষ এখন সেই জমি সয়াবিন চাষের জন্য ব্যবহার করছে, কারণ এতে বেশি লাভ হয়েছে। গত এক বছরে এক লাখ হেক্টর জমিতে সয়াবিন চাষ শুরু হয়েছে। দ্বিতীয় সমস্যাটি হলো, সেখানকার সোনার খনি থেকে সোনা উত্তোলনের জন্য পারদ ব্যবহার করা। সেখানকার ভূমি ও পানিতে পারদের মাত্রা এখন উলেস্নখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই দূষণ শুধু পরিবেশকেই নয়, মানুষের জন্যও হুমকিস্বরূপ।

পৃথিবীতে জল ও বৃষ্টির স্তর বজায় রাখতে আমাজন রেইনফরেস্টের একটি বড় ভূমিকা রয়েছে। কার্লোস পেরেজ বলেন, আমাজন অঞ্চলে বৃষ্টির অন্যতম প্রধান উৎস হলো সেখানকার রেইনফরেস্ট। সেখানে বড় বড় গাছের কারণে প্রতিদিন প্রায় এক লাখ লিটার পানি বাতাসে দ্রবীভূত হয় এবং এর ফলে দক্ষিণ ব্রাজিল থেকে আর্জেন্টিনা পর্যন্ত বৃষ্টি হয়, যেখানে প্রচুর পরিমাণে খাদ্য উৎপাদিত হয়, যা এই বৃষ্টির ওপর নির্ভর করে। কিন্তু এই বৃষ্টি যদি কমে যায়? কার্লোস পেরেজ বলছেন, এটি অনুমান করা হয় যে, আমাজন বনের গাছগুলো একাই প্রায় ৯০ বিলিয়ন মেট্রিক টন কার্বন শোষণ করে। অতএব, আমাজন বন কাটা বন্ধ করা খুব গুরুত্বপূর্ণ।

প্রেসিডেন্ট লুলার কাছে প্রত্যাশা

আনা ক্যারোলিনা আলফিনিতো আমাজন ওয়াচের আইনি উপদেষ্টা। এটি আমাজনকে বাঁচাতে কাজ করা একটি এনজিও। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আমাজন বাঁচানোর ইসু্যতে স্থানীয় ব্রাজিলিয়ানদের কাছ থেকে ব্যাপক সমর্থন পেয়েছিলেন লুলা ও বলসোনারোকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।

চলতি বছরের এপ্রিলে তৃতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর লুলার প্রথম কাজ ছিল- আদিবাসী বিষয়ক একটি নতুন মন্ত্রণালয় গঠন করা। প্রেসিডেন্ট লুলা এখন এসব নীতি বাস্তবায়ন ও নির্বাচনী প্রতিশ্রম্নতি পূরণের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি।

অ্যানা ক্যারোলিনা আলফিনিতো বলেন, এটা পরিষ্কার যে আদিবাসীদের দাবি এবং আমাজন বন নিয়ে সরকারের নীতির মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। আদিবাসীদের প্রধান দাবি, আমাজনের জমির কিছু অংশ চিহ্নিত করা। আমাজন ভূমির কিছু অংশ চিহ্নিতকরণ এবং আদিবাসীদের সংরক্ষিত এলাকায় বসবাসের অধিকার প্রদান এবং সেখানে বাণিজ্যিক চাষাবাদ ও খনির কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা। অ্যানা ক্যারোলিনা আলফিনিতো বলেন, আদিবাসীদের জমির মালিকানা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে হস্তান্তর করা উচিত, যাতে এই জমি অন্য কারও কাছে বিক্রি না হয়। এটি ব্যবহারের অনুমতি শুধু আদিবাসীদের দেওয়া উচিত, যারা ঐতিহ্যগতভাবে এই জমির মালিক হিসেবে বিবেচিত হয়েছেন।

প্রেসিডেন্ট লুলার জন্য সমস্যা হলো, ব্রাজিলের পার্লামেন্টে তার সীমানা নির্ধারণের প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করা হচ্ছে। অ্যানা ক্যারোলিনা আলফিনিতো বলছেন, বর্তমান জোট সরকারের মধ্যে অনেক দ্বন্দ্ব রয়েছে এবং পার্লামেন্টের অনেক লোক এমন আইন তৈরি করতে চায়, যা আদিবাসীদের স্বার্থের ক্ষতি করবে। তিনি আরও বলেন, আদিবাসী আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা এবং প্রেসিডেন্ট লুলার কাছে আদিবাসীদের ভূমি অধিকার সুরক্ষিত করার নির্বাচনী প্রতিশ্রম্নতি পূরণের দাবি জানানো, ভূমি সীমানা নির্ধারণের প্রক্রিয়া শুরু করা, যাতে আদিবাসীরা সেখানে বসবাস করতে পারেন।

তবে আদিবাসীদের দাবির বিরোধিতাকারী দলটি একটি আইনি যুক্তি তুলে ধরছে। তারা বলছেন, ১৯৮৮ সালে ব্রাজিলের বর্তমান সংবিধান প্রণয়নের সময় আদিবাসীদের যে জমির মালিকানা ছিল, সেই জমির ওপর আদিবাসীদের অধিকার থাকা উচিত। এই মানদন্ড বাস্তবায়নের জন্য একটি নতুন আইন বিবেচনা করা হচ্ছে।

কিন্তু আদিবাসীরা বলছেন, ১৯৭০ সাল পর্যন্ত জমিটি তাদের দখলে ছিল এবং পরে তাদের সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। অতএব, তাদের সেই জমির ওপর অধিকার পাওয়া উচিত। সেই ভূমির সঙ্গে তার আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে। আদিবাসীরা নতুন প্রস্তাবিত আইনটিকে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করেছেন এবং তারা তাদের জমি রক্ষার জন্য বেশ কয়েকটি পদক্ষেপও নিচ্ছেন।

অ্যানা ক্যারোলিনা আলফিনিতো বলেন, 'তারা অনুপ্রবেশকারীদের থামিয়ে দিচ্ছেন, যারা জমি দখল করেছে। আমরা বন উজাড়ের দিকে নজর রাখছি।' তারা কেন্দ্রীয় পুলিশ এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে এই তথ্য পাঠাচ্ছেন। আদিবাসীরা তাদের জমি দখলের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। এই বিরোধের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত চলতি মাসে আসতে পারে।

আলফিনিতো বলছেন, এই সিদ্ধান্ত যদি আদিবাসীদের বিরুদ্ধে যায়, তাহলে তা শুধু তাদের জন্যই নয়, পরিবেশের ভারসাম্যের জন্যও ক্ষতিকর হবে, কারণ বন উজাড়ের ওপর কোনো বাধা থাকবে না এবং আমাজন রেইনফরেস্টের ব্যাপক ক্ষতি হবে।

বিশ্বের কাছে আদিবাসীদের বার্তা

স্থানীয়রা যুক্তি দেখান, আমাজন রেইনফরেস্টের ভবিষ্যৎ কেবল তাদের ইসু্য নয়, বরং পুরো বিশ্বের ভবিষ্যৎ। আর এই বার্তা বিশ্বকে দিচ্ছেন স্থানীয়দের হানি কুইন সম্প্রদায়ের তরুণ নেতা কাভা হুনি কুইনকে। তিনি চান, আদিবাসীরা যেভাবে জীবনযাপন করেন, সে সম্পর্কে বিশ্ববাসী জানুক। তিনি বলেন, 'আমার সম্প্রদায় ব্রাজিলের একর রাজ্যে বাস করে। আমাদের দুটি নদী এবং অনেক গ্রাম রয়েছে। আমরা একটি কমিউনিটি জীবন যাপন করি। বাড়ি তৈরি করা, গাছ লাগানো, মাছ ধরাসহ আরও অনেক কিছু আমরা একসঙ্গে করি। আমরা কলা, তরমুজ এবং আরও অনেক ফল চাষ করি।'

ব্রাজিলের আদিবাসীরা শত শত বছর ধরে এভাবে বসবাস করে আসছেন। কিন্তু কাওয়া হুনি বলেন, 'অ-আদিবাসীদের আগমনের কারণে তাদের জীবনধারা ও সংস্কৃতি এখন হুমকির মুখে। আমরা আমাদের সম্প্রদায়কে বন সংরক্ষণ সম্পর্কে সচেতন রাখি। কিন্তু শহর থেকে আসা লোকেরা আমার সম্প্রদায়ের লোকদের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলছে। তারা গাছ কাটছে। তারা আমাদের ভূখন্ড ধ্বংস করছে এবং আমরা আমাদের বন, প্রাণী ও সংস্কৃতি রক্ষার চেষ্টা করছি।'

কাওয়া হুনি কুইন আরও বলেন, 'পরিবেশ কীভাবে রক্ষা করা যায়, সে সম্পর্কে স্থানীয়দের গভীর জ্ঞান এবং জানাশোনা রয়েছে এবং বিশ্বের স্থানীয়দের কাছ থেকে এটি সম্পর্কে শেখা উচিত। প্রতি বছর আবহাওয়া খারাপ হচ্ছে, গরম বাড়ছে। স্থানীয়রা শতাব্দী ধরে প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বসবাস করে আসছে। বিশ্বকে আমাদের কাছ থেকে শিখতে হবে। পরবর্তী প্রজন্মের কথা ভাবুন। কিন্তু আমি মনে করি, বাইরের বড় কোম্পানি এবং কৃষকরা পরবর্তী প্রজন্মের কথা ভাবে না। তারা কেবল ক্ষতি করে এবং সমস্যা তৈরি করে।'

আদিবাসীদের অধিকারের প্রতি প্রেসিডেন্ট লুলার নতুন অঙ্গীকার সম্পর্কে কাভা হুনি কী ভাবছেন? তিনি বলেন, 'আমি মনে করি, লুলা আমাদের কথা শুনছেন। কিন্তু তারা যদি আমাদের কথা না শোনেন, তাহলে আদিবাসীরা তা আর সহ্য করবে না। এটি পুরো বিশ্বের জন্য সমস্যা তৈরি করবে।' সংবাদসূত্র : বিবিসি নিউজ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে